খেলা

অভিষেকেই চমক দেখালো স্বাধীনতা

0
bsk

মহাসড়কের পাশেই অবস্থিত স্টেডিয়াম। ধুলা উড়ে আসছে। যানবাহনের হর্নে কান পাতাই দায়। মাঠের অবস্থাও শোচনীয়। বিভিন্ন জায়গাজুড়ে বিক্ষিপ্তভাবে নতুন মাটি ফেলার চিহ্ন। টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার স্টেডিয়ামে এমন পরিবেশেই বাজিমাত করেছে স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘ। দেশের ফুটবলের সর্বোচ্চ পর্যায়ে অভিষেকেই চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংসকে ২-১ গোলে হারিয়ে দিয়েছে তারা।

গত বছর চ্যাম্পিয়নশিপ ফুটবলে (দেশের ফুটবলের দ্বিতীয় স্তর) চ্যাম্পিয়ন হয়ে আজই প্রথমবার দেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ের ফুটবলে খেলতে নেমেছিল স্বাধীনতা। প্রতিপক্ষ সর্বশেষ দুই আসরের চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা। স্বাভাবিকভাবে অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন, এমন দুই দলের লড়াই হবে খুবই সাদামাটা। কিন্তু স্বাধীনতা দেখিয়ে দিয়েছে পুরোপুরি তৈরি হয়েই এ পর্যায়ে খেলতে এসেছে তারা। ৪৬ মিনিটের মধ্যে ২-০ গোলে এগিয়ে গিয়ে বসুন্ধরাকে বড় হার উপহার দেওয়ার সম্ভাবনাও তৈরি করেছিল ২০০৫ সালে ঢাকার খিলগাঁওয়ে প্রতিষ্ঠিত ক্লাবটি।

এর আগে প্রিমিয়ারে উঠেই চ্যাম্পিয়ন দলকে হারিয়ে দেওয়ার ঘটনা শেষ কবে ঘটেছিল, সেটি তাৎক্ষণিকভাবে বের করা একটু কষ্টকরই। বাংলাদেশের খেলাধুলায় রেকর্ড সংরক্ষণ ব্যবস্থার হাল এমনই। তবে ১৯৭৫ সালে প্রথমবারের মতো প্রথম বিভাগ ফুটবলে খেলতে এসেই আগেরবারের শিরোপাধারী আবাহনীকে হারিয়ে দিয়েছিল ব্রাদার্স ইউনিয়ন।

গত দুই লিগে চ্যাম্পিয়ন হতে কেবল দুটি ম্যাচেই হেরেছিল বসুন্ধরা। অথচ আজ নতুন একটি দলের সামনে চ্যাম্পিয়ন দলের মতো খেলতেই পারল না। শারীরিক অসুস্থতার কারণে মাঠে উপস্থিত ছিলেন না বসুন্ধরার কোচ অস্কার ব্রুজোন।চোটের কারণে নিয়মিত অধিনায়ক ও সেন্টারব্যাক তপু বর্মণের সঙ্গে নেই ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার জোনাথন ফার্নান্দেজ। তাদের অনুপস্থিতিতে আজ প্রথমবারের মতো তিন সেন্টারব্যাকে খেলল বসুন্ধরা। খালিদ শাফিই ও তারিক কাজীর সঙ্গে মিডফিল্ডার আতিকুর রহমান। দুই উইং ব্যাকে খেললেন বিশ্বনাথ ঘোষ ও মোহাম্মদ ইব্রাহিম। এই পাঁচজনের মধ্যে দিয়েও ফাঁকফোকর তৈরি করে নিয়েছে স্বাধীনতার ফরোয়ার্ডরা।

২৬ মিনিটে নেদো তুর্কোভিচের পেনাল্টি থেকে করা গোলে এগিয়ে যায় স্বাধীনতা। ডান প্রান্ত থেকে রাফাল জাবোরোস্কির ক্রসে আতিকুর রহমানের হাতে বল লাগলে পেনাল্টির জন্য পতাকা ওঠান সহকারী রেফারি। বল হাতে লাগেনি বলে দাবি তুলেছিলেন বসুন্ধরার খেলোয়াড়েরা । তাতে কর্ণপাত করেননি প্রধান রেফারি। স্পটকিক থেকে বল জালে জড়ান বসনিয়ার স্ট্রাইকার নেদো । বিরতিতে যাওয়ার আগে ম্যাচে মাত্র একবারই ফেরার সুযোগ তৈরি করতে পেরেছিল বসুন্ধরা। ৩৮ মিনিটে স্তোয়ান ভ্রানিয়েসের ফ্রি কিক ডান দিকে ঝাঁপিয়ে রক্ষা করেন গোলকিপার সারোয়ার।

বিরতি থেকে ফিরেই আবার গোল হজম করে বসুন্ধরা। কিছুটা দুর্ভাগ্যও ছিল চ্যাম্পিয়নদের। সোহেল রানা বল ক্লিয়ার করলে স্বাধীনতার এক খেলোয়াড়ের পায়ে লেগে বল গিয়ে পড়ে আনমার্কড সতীর্থ রাসেল আহমেদের পায়ে। দেখেশুনে ঠান্ডা মাথায় গোলটি করেন রাসেল। দুই মিনিট পরই ভালো একটি ফ্রি কিক নিয়েছিলেন ভ্রানিয়েস। কিন্তু সেখানেই দেয়াল হয়ে দাঁড়ান গোলকিপার সারোয়ার।

ম্যাচে ফেরার জন্য কৌশল বদলান বসুন্ধরা কোচ মাহবুব হোসেন। আতিকুর রহমান ও মাসুক মিয়ার বদলি হিসেবে নামানো হয় ইয়াছিন আরাফাত ও তৌহিদুল আলমকে। ৩-৪-১-২ ফরমেশন ভেঙে করা হয় ৪-৪-২। বদলি দুজনের রসায়নেই ৭৩ মিনিটে ব্যবধান কমায় বসুন্ধরা। ইয়াছিনের থ্রুতে হেডে গোলটি করেন তৌহিদুল। কিন্তু ব্যবধান কমানোর সন্তুষ্টি নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছে বসুন্ধরাকে।

বিপিএল ছেড়ে যাচ্ছেন আন্দ্রে রাসেল

Previous article

নিশো-সাবিলার ‘ক্রস কানেকশন’

Next article

You may also like

Comments

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More in খেলা