ব্যবসা-বাণিজ্য

আটটি পণ্যের আমদানি উৎস বদলেছে

0
আটটি পণ্যের আমদানি উৎস বদলেছে

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে দেশে অন্তত আট পণ্যের আমদানির উৎস বদলে গেছে। পণ্যগুলো হলো শর্ষের বীজ, মটর ডাল, সূর্যমুখী তেল, রড, স্পঞ্জ আয়রন, সার, নিউজপ্রিন্ট ইত্যাদি।

ব্যবসায়ীরা বিকল্প দেশ থেকে এসব পণ্য আমদানি করে দেশের চাহিদা পূরণ করছেন। এতে খাবার টেবিলে কিংবা ব্যবহারে নতুন দেশের পণ্য স্থান পাচ্ছে।

সার্বিকভাবে রাশিয়া-ইউক্রেন থেকে বাংলাদেশের আমদানির পরিমাণ খুব বেশি নয়। এই দুটি দেশ থেকে মূলত কম আমিষযুক্ত গম আমদানি হতো। বাংলাদেশে গম আমদানিতে কখনো শীর্ষ দেশ ছিল রাশিয়া, কখনো ছিল ইউক্রেন। ১৭-১৮ বছর আগে এই দুটি দেশ থেকে গম আমদানি শুরু হয়েছিল। চট্টগ্রামের টি কে, এস আলম গ্রুপসহ কয়েকটি গ্রুপ শুরুর দিকে ছিল রাশিয়া-ইউক্রেনের গম আমদানিকারক

তবে বর্তমানে যুদ্ধের কারণে রাশিয়া-ইউক্রেন থেকে যখন আমদানি বন্ধ গেছে। পুরোনো ঋণপত্রের বিপরীতে এখনো ভারত থেকে গম আমদানি হচ্ছে এ দেশে। এতে রাশিয়া-ইউক্রেনের বদলে গম আমদানিতে শীর্ষ উৎস দেশ হয়ে উঠেছে ভারত।

আরও পড়ুনঃ জাপোরিশা থেকে তেজস্ক্রিয়তা ছড়ানোর আশঙ্কা জাতিসংঘের

যুদ্ধের আগে গমের মতো অনেক পণ্যের আমদানির ক্ষেত্রে শীর্ষ ১০ উৎস দেশের মধ্যে ছিল রাশিয়া-ইউক্রেন। এক বছর আগে কালো শর্ষের বীজ আমদানিতে কানাডা-অস্ট্রেলিয়ার পর তৃতীয় অবস্থানে ছিল ইউক্রেন। এখন অস্ট্রেলিয়ার ওপর নির্ভরতা আগের চেয়ে আরও বেড়েছে। আবার সাদা শর্ষের আমদানিতে রাশিয়া ছিল শীর্ষ উৎস।

কানাডার পর মটর ডাল আমদানিতে দ্বিতীয় প্রধান উৎস ছিল রাশিয়া। চতুর্থ অবস্থানে ছিল ইউক্রেন। যুদ্ধের কারণে রাশিয়া-ইউক্রেন থেকে আমদানি বন্ধ হওয়ার পর নতুন গন্তব্যে ছুটছেন এখন ব্যবসায়ীরা। নতুন দুই গন্তব্যের একটি অস্ট্রেলিয়া। আবার সূর্যমুখী তেল সবচেয়ে বেশি আমদানি হতো রাশিয়া থেকে। ইউক্রেন ছিল পঞ্চম অবস্থানে। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে সূর্যমুখী তেল আমদানিতে ইতালি, তুরস্ক, চীন ও স্পেনের ওপর নির্ভরতা বেড়েছে।

ভোগ্যপণ্য আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান বিএসএম গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল বশর চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন থেকে যেসব পণ্য আমদানি হতো, সেগুলো এখন বিকল্প উৎস থেকেই আমদানি করা হচ্ছে।

শুধু ভোগ্যপণ্যই নয়, যুদ্ধ আমদানির উৎস বদলে দিয়েছে শিল্পের কাঁচামাল কিংবা সারের ক্ষেত্রেও। এক বছর আগেও মিউরেট অব পটাশ সারের ৩২ শতাংশ আমদানি হতো রাশিয়া থেকে। বেলারুশের পর দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল রাশিয়া। যুদ্ধের পর এ সার আমদানি বন্ধ হয়ে যায়। এখন মিউরেট অব পটাশ সারের আমদানির তালিকায় তৃতীয় নতুন উৎস হিসেবে উঠে এসেছে তুর্কমেনিস্তান। প্রধান উৎস হয়েছে কানাডা। রাশিয়ার জায়গা দখল করে নিয়েছে বেলারুশ।

আবার রড তৈরিতে বছরে কয়েক লাখ টন স্পঞ্জ আয়রন দরকার হয়। এই স্পঞ্জ আয়রনের প্রধান উৎস ছিল ভারত ও রাশিয়া। রাশিয়া থেকে আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখন আসছে শুধু ভারত থেকে।

এর আগে নিউজপ্রিন্ট আমদানিতে কোরিয়ার পর দ্বিতীয় উৎস ছিল রাশিয়া। রাশিয়া থেকে আমদানি বন্ধ হওয়ার পর এখন কানাডা প্রধান উৎস হয়ে উঠেছে। আমদানির উৎস দেশের তালিকায় যুক্ত হয়েছে ইন্দোনেশিয়াও।

রাশিয়া-ইউক্রেন থেকে এখন আমদানিতে কোনো বাধা নেই। এরপরও অনিশ্চয়তায় পণ্য আমদানি হচ্ছে না। যুদ্ধের কারণে জাহাজে পরিবহনের খরচ বেড়ে গেছে। স্থানীয় বাজারের তুলনায় আমদানি খরচ বেশি হওয়ায় বেসরকারি খাতে এখনো রাশিয়া-ইউক্রেন থেকে আমদানি শুরু হয়নি।

৪২ কোটি টাকা ঋণখেলাপির দায়ে পাঁচ শিল্পপতির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

Previous article

২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে চারজনের মৃত্যু

Next article

You may also like

Comments

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *