খবরসারাদেশ

‘ইভ্যালি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যই ছিল প্রতারণা’

0
'ইভ্যালি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যই ছিল প্রতারণা'

সদ্য বিদায় নেয়া আদালতের নির্দেশে গঠিত ইভ্যালির পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেছেন, ইভ্যালি ৪ হাজার ৮৬৭ কোটি ৭৫ লাখ ৪১৫ টাকা গ্রাহকদের কাছ থেকে তুলেছিল। ইভ্যালি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যই ছিল প্রতারণা করে অর্থ লোপাট।

বুধবার পদত্যাগের আগে নিজেদের প্রতিবেদন আদালতে জমা দিয়ে এসেছে শামসুদ্দিন চৌধুরী নেতৃত্বাধীন পর্ষদ। আদালতের নির্দেশেই গত বছরের অক্টোবরে তারা ইভ্যালির দায়িত্ব নিয়েছিল। গ্রাহক ঠকানোর অভিযোগের মুখে বন্ধ হয়ে যাওয়া প্রতিষ্ঠানটির প্রকৃত দায়-দেনা, কাজের ধরন ও শত কোটি টাকার বকেয়া থেকে উদ্ধারের পথ বের করার উপায় খোঁজার ভার ছিল পুনর্গঠিত পর্ষদের।

সেই পর্ষদের সদস্যরা বৃহস্পতিবার পদত্যাগ করে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন কয়েক মাস আগে কারামুক্ত প্রতিষ্ঠানটির আগের চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনের কাছে।

চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট ফার্মের মাধ্যমে বৈধ চ্যানেলের একটি লেনদেনের তথ্য খুঁজে বের করতে পারলেও ইভ্যালির সার্ভারে ঢুকতে না পারায় সার্বিক চিত্র তুলে আনতে পারেনি বলে জানিয়েছে এই পর্ষদ। তবে ডিসকাউন্টের ব্যবসার নামে গ্রাহকের অর্থ লোপাটের নানা কৌশল দেখতে পেয়েছে তারা।

আরও পড়ুনঃ ভোজ্যতেলে ভ্যাট অব্যাহত রাখার সুপারিশ ট্যারিফ কমিশনের

বিচারপতি মানিক বলেন, “গত দুই বা তিন বছরে ৪৮৬৭ কোটি ৭৫ লাখ ৪১৫ গ্রাহকের কাছ থেকে নিয়েছে। আর ব্যাংক থেকে তুলেছে ৪৭০২ কোটি ৪৬ লাখ ২৯ হাজার ৬১৭ টাকা। এই টাকা কেন তুলল, কোথায় গেল? হিসাব নাই। এই কোম্পানির কোনো অ্যাকাউন্টিং কিংবা ফাইন্যান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট ছিল না। মানব সম্পদের কোনো পলিসি ছিল না। অভ্যন্তরীণ পলিসি, প্রকিউরমেন্ট পলিসি ছিল না। ইনভেন্টরি ম্যানেজমেন্ট ছিল না। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে কোন কাস্টমার থেকে কত টাকা নিয়েছে, তার কোনো হদিস নেই। কাস্টমারদের নামও সেখানে নেই।”

মানিক বলেন, “অডিট রিপোর্টে অনেকগুলো সমালোচনামূলক কথা আছে। আমরা বলেছি যে, ইভ্যালি তৈরিই করা হয়েছিল প্রতারণার উদ্দেশ্যে। সৎ উদ্দেশ্য নিয়ে এই ব্যবসাটা চালু করা হয়নি। তারা পুরো সময়টা এই প্রতারণা দিয়েই চালিয়েছে। হিসাব-নিকাশের কোনো স্বচ্ছতা ছিল না। হাজার হাজার কোটি টাকা লেনদেন করেছে বলে অডিট রিপোর্টে এসেছে। কিন্তু টাকাগুলো কোথায় গেলে এবং কার কাছ থেকে এল, তার কোনো ট্রেস নেই।”

২০১৮ সালের শেষ দিকে এক কোটি টাকা নিয়ে অনলাইনে পণ্য বিক্রির ব্যবসায় নেমেছিলেন সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাসেল। তিনি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব নেন, আর স্ত্রী শামীমাকে করেন চেয়ারম্যান। ২০১৯, ২০২০ ও ২০২১ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত সময়ে বেশ ঘন ঘন ফেইসবুক লাইভে এসে অর্ধেক দামে পণ্য বিক্রির নানা লোভনীয় অফার দিতেন রাসেল। বাজার মূল্যের চেয়ে কেন অর্ধেক দামে তিনি গ্রাহকের হাতে পণ্য পৌঁছে দিতে পারবেন, তার কিছু কৌশলও ব্যাখ্যা করতেন তিনি।

অর্ডার পাওয়ার ৪৫ দিনের মধ্যে গ্রাহকের কাছে অর্ধেক দামে পণ্য সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সারাদেশে হুলুস্থূল সৃষ্টি করেছিল ইভ্যালি। মূল্যছাড় নিয়ে তার ব্যাখ্যায় প্রলুব্ধ হয়ে ক্রেতারাও হুমড়ি খেয়ে পড়েন, তাতে ইভ্যালির একাউন্ট ভারী হতে থাকে।

পরে টাকা দিয়েও পণ্য না পাওয়ার অভিযোগ আসতে থাকে। এরপর প্রতারণার মামলায় গত বছরের সেপ্টেম্বরে রাসেল ও শামীমা দুজনই গ্রেপ্তার হন। গত এপ্রিলে শামীমা জামিনে মুক্তি পেলেও রাসেল এখনও কারাগারে রয়েছেন।

 

রোহিঙ্গাদের জন্য আরও ১৭০ মিলিয়ন ডলার দেবে যুক্তরাষ্ট্র

Previous article

২৪ ঘণ্টায় যুদ্ধে অংশ নিতে এসেছেন ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক: রাশিয়া

Next article

You may also like

Comments

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More in খবর