ই-কমার্স

এই ঈদে ২৫ শতাংশ কেনাবেচা হতে পারে ই-কমার্সে

2
online

মানুষের হাতে সময় কমে আসায় অনেকের মার্কেটে যাওয়ার ফুরসত কম। ইদানীং তরুণ-তরুণী ও চাকরিজীবীদের মধ্যে অনলাইনে কেনাকাটার আগ্রহ বেশ বেড়েছে। সুতা থেকে শুরু করে ঘরের এসি পর্যন্ত অনেকে কিনছেন অনলাইনে। ইলেক্ট্র্রনিক-কমার্সের (ই-কমার্স) যুগে পণ্য কিনে ঠকেছেন বা মান খারাপ এমন অভিযোগও অহরহ আছে। ক্রেতাদের ভাষ্য, দেখেশুনে একটু বুঝে অর্ডার করলে ঠকার সম্ভাবনাও কম। অনেকের মতে, দিন যত যাচ্ছে, সেবার মানও ভালো হচ্ছে।

দেশের মোট বাজারের পাঁচ শতাংশ কেনাবেচা হয় অনলাইনে, সংশ্লিষ্টরা এমনটাই বলছেন। ঈদের মতো এমন বড় উপলক্ষ এলেই তা দ্বিগুণ হয়। তবে এবার মোট বেচাকেনার ২৫ শতাংশ হতে পারে ই-কমার্সের মাধ্যমে। যার মধ্যে ফেসবুকভিত্তিক এফ-কমার্সেরও বড় একটি বাজার দখলে রয়েছে।

করোনা মহামারির সময় থেকেই দেশে ই-কমার্সের পরিচিতি ও আবেদন বেড়েছে। যানজট, মার্কেটে ভিড় ও দরকষাকষির ঝামেলায় অনেকেই এখন স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না। এসব কারণে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ ফ্যাশন হাউসগুলোর ওয়েবসাইট থেকে অর্ডার ও ডেলিভারি চলছে।

ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) এর নির্বাহী পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম শোভন জানান, ই-ক্যাবের সদস্য আড়াই হাজার, কিন্তু দেশে ই-কমার্স সাইট আছে অন্তত তিন হাজার। তিনি বলেন, ঈদের সময়ে অনলাইনে কেনাকাটা অনেক বেড়ে যায়।

এবার পণ্য ডেলিভারি প্রায় ৯ লাখে ঠেকতে পারে। মানুষ এখন দীর্ঘ সময় ব্যয় করে ফেসবুক-ইউটিউবে। আর এই সুযোগে ফ্যাশন হাউসগুলোও তাদের বিজ্ঞাপনের বড় অর্থ ব্যয় করছে এসব মাধ্যমে। যা দেখে ঝুঁকছেন ক্রেতারাও। ঈদকে কেন্দ্র করে অধিকাংশ ফ্যাশন হাউস তাদের এই প্রস্তুতি সেরে ফেলেছে। ঈদ ও বৈশাখ ঘিরে চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছে তার।

পোশাক ব্র্যান্ড লা রিভের প্রধান নির্বাহী মন্নুজান নার্গিস জানান, ঈদের সময় রাজধানী ছাড়াও বিভিন্ন বিভাগীয় শহর থেকে অর্ডার আসে। দিন দিন এই প্রবণতা বাড়ছে। অন্যবারের চেয়ে বিক্রি এবার বাড়বে বলে তিনি আশাবাদী। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি থেকে প্রবাসীরাও অনলাইনে অর্ডার করেন।

আরও পড়ুনঃ উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হলো ইয়েসবিডির বৈশাখী মিলনমেলা

এখন অনেকেই যানজটের ঝক্কি পোহাতে চান না। করপোরেট চাকুরেদের হাতে মার্কেটে যাওয়ার সময় নেই। এসব কারণে অনলাইন মার্কেটে এখন গ্রাহকের বড় একটি অংশ যুক্ত হয়েছে। বিশ্ব রঙের স্বত্বাধিকারী বিপ্লব সাহা বলেন, আমাদের কেনাবেচা অনলাইনে এবার বেশ ভালো। গ্রাহকরা জানেন, কিন্তু একটি অর্ডার দেয়ার পর যেহেতু অন্তত ২-৩ দিন পণ্য সরবরাহ করতে সময় লাগে। সে কারণে অনলাইনে কেনাবেচা আগেই শুরু হয়েছে এবং ঈদের তিন দিন আগেই শেষ হয়ে যাবে।

ঈদ ঘিরে অঞ্জন’স, বিশ্বরঙ, রঙ বাংলাদেশ, দেশী দশের অন্য ব্র্যান্ড, ক্যাটস আই, রিচম্যান, ইয়েলো, কিউরিয়াস, এক্সটেসি, ক্লাব হাউজ, জেন্টেল পার্কসহ পরিচিত ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলোর ফেসবুক পেজ ও ই-কমার্স সাইটে ঈদের সমাহার রেখেছে।

ফ্যাশন হাউস ছাড়াও ডিল ডটকম, প্রিয় শপ, বাগডুম ডটকম, দারাজ, এখনই ডটকম, আজকের ডিল, হাটবাজার, উপহার বিডি নামে ই-কমার্স সাইটগুলোতেও এবার ঈদের আমেজ লেগেছে রোজার শুরুতেই। নামি-দামি ফুটওয়্যার ব্র্যান্ডের নিজস্ব ওয়েবসাইট ও ই-কমার্স সাইটগুলোতে এখন ক্রেতারা জুতাও কিনতে পারেন।

অনেক ক্রেতা বিস্ময় প্রকাশ করে জানান, জুতার ব্র্যান্ড বাটা থেকে অনলাইনে অর্ডার করলে যেমন ছাড় পাওয়া যায়, মার্কেটে গিয়ে কেনা হলেও সমপরিমাণ ছাড় মেলে না। বিষয়টি আমাকে অবাক করে। এরপরও একটি পণ্য পছন্দ হওয়ার পর ডেলিভারির জন্য অপেক্ষা করতে ভালো লাগে না। সুস্মিতা শবনম জানান, অনলাইনে জুতা কেনার অভিজ্ঞতা ভালো নয়। জুতার সোল শক্ত হলেও পরিবর্তনের জন্য পেজে আবার যোগাযোগ করা ঝামেলার কাজ।

পণ্য কেনায় মেয়েদের খুতখুত খানিকটা বেশি হলেও ই-মার্কেটে তারাই বড় ক্রেতা। এদিকে আস্থার সংকট থাকায় এখন ছেলেরা মার্কেটে যেতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। জারিফ হোসেইন জানান, মোবাইলে দেখে পোশাকের ফেব্রিক, রঙ ও সাইজ বোঝা যায় না। তাই মার্কেট ঘুরেই পোশাক কিনি। অনলাইনে পাঞ্জাবি কিনে ঠকার অভিজ্ঞতাও রয়েছে তার। একটি বেসরকারি ফার্মের কর্মকর্তা আদনান সাকিব জানান, ই-কমার্স সাইট থেকে পণ্য কেনার আগে সেলারের রেটিং ও পণ্যের রিভিউ দেখে অর্ডার করি।

তবে গত বছরের তুলনায় অনলাইন ও অফলাইন দুই মাধ্যমেই পোশাকের দাম বেশি মনে হচ্ছে, বললেন এই তরুণ। ই-ক্যাবের নির্বাহী পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম শোভন বলেন, অনলাইনে পণ্য কেনাকাটা নিয়ে ক্রেতাদের কোনো অভিযোগ থাকলে ওয়েবসাইটগুলোকেই জানাতে হবে। আর যদি এভাবে সমাধান না মেলে তবে ক্রেতারা চাইলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে অভিযোগ জানাতে পারেন।

কোরবানির পশুর ঘাটতি নেই যশোরে

Previous article

প্রাণিসম্পদ ও মৎস্য সেক্টরের উন্নয়ন ছাড়া স্মার্ট বাংলাদেশ গঠন সম্ভব নয় : আব্দুর রহমান

Next article

You may also like

2 Comments

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *