শিক্ষাসারাদেশ

কাঠমিস্ত্রির কাজ করে ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম মোস্তাকিম

0
মোস্তাকিম রাবি ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম

কোনো ধরনের কোচিং কিংবা স্পেশাল প্রাইভেট ছাড়াই ১৫ দিন আগে কাঠমিস্ত্রীর কাজে বিরতি দিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করেছেন মোস্তাকিম আলী। ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথমবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় ‘বি’ ইউনিটের গ্রুপ-৩ এ ৮০ দশমিক ৩০ নম্বর পেয়ে প্রথম হন এই শিক্ষার্থী।

মোস্তাকিম আলী রাজশাহীর তানোর উপজেলার বাঁধাইড় মিশনপাড়া এলাকার শামায়ুন আলীর ছেলে। তার বাবা পেশায় একজন কাঠমিস্ত্রি। প্রথমিক শিক্ষা শেষ করেই বাবার কাজে অংশগ্রহণ করেন মোস্তাকিম। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবার বড় তিনি।

তাদের অভাবের সংসারে মেজ ভাই আজিজুল হককে পড়াশোনা করাতে সক্ষম হয়নি পরিবার। ফলে বাল্যকাল থেকেই বাবার সাথে কাঠমিস্ত্রির কাজ করেন তার এই ভাই। ছোট বোন ফাহিমা খাতুন মুণ্ডুমালা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তবে অনেক কষ্টে দুই ছেলে-মেয়েকে পড়াচ্ছেন তাদের বাবা।

২০১৭ সালে নিজ উপজেলার মুন্ডুমালা সরকারি উচ্চবিদ্যালয় স্কুল থেকে জিপিএ-৪ দশমিক ৫৫ নিয়ে মাধ্যমিক এবং ২০২০ সালে তানোর ফজর আলী মোল্লা ডিগ্রি কলেজ থেকে জিপিএ-৪ দশমিক ৮৩ পেয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন এই শিক্ষার্থী।

পরবর্তীতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আদিনা ফজলুল হক ডিগ্রি কলেজে ইংরেজি বিষয়ে অনার্সে ভর্তি হলেও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ার সুপ্ত আকাঙ্খা ছেড়ে দেয়নি মোস্তকিম। ফলে এইচএসসিতে পুনরায় মানোন্নয়ন পরীক্ষা দিয়ে বসেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায়।

ভর্তি প্রস্তুতির কথা জানিয়ে মোস্তাকিম আলী বলেন, কোনো ভর্তি কোচিং বা স্পেশাল প্রাইভেট পড়িনি। তবে অনলাইনে কিছু ভর্তি প্রস্তুতির লেকচার পেয়েছি। যা ভর্তি প্রস্তুতিতে আমাকে অনেক সাহায্য করেছে। এক্ষেত্রে কলেজের শিক্ষকদেরও অনেক অবদানের কথা জানান এই শিক্ষার্থী।

ভর্তি পরীক্ষার অর্ধ মাস আগে কাঠমিস্ত্রীর কর্মে বিরতি দেয়ার কথা জানিয়ে এ শিক্ষার্থী জানান, দীর্ঘদিন ধরেই বাবার সঙ্গে কাঠমিস্ত্রির কাজ করছি; তবে দিনে কাজ করলেও রাতে পড়াশোনা চালিয়ে গেছি। সেই ধারাবাহিকতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার ১৫ দিন আগে কাজে বিরতি দেই।

ভর্তি পরীক্ষায় নিজের এমন অবস্থায় দেখে উচ্ছ্বাসিত মুস্তাকিম জানান, কষ্টের ফল পেয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত বোধ করছি। তাই এটাকে কাজে লাগিয়ে নিজেকে করপোরেট চাকরির উপযোগী করে গড়ে তুলার পাশাপাশি পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের উন্নয়নে অবদান রাখতে চাই।

বাবা শামায়ুন আলী জানান, পড়ালেখার প্রতি ছোটবেলা থেকেই আগ্রহ থাকায় অনেক কষ্ট করে হলেও পড়াশোনা চালিয়ে গেছে ছেলে। এছাড়া শিক্ষকদের আন্তরিক ও সঠিক দিকনির্দেশনায় মোস্তাকিমের এই সফলতা সহজ হয়েছে। সন্তানের এমন সাফল্যে গর্ববোধ করার পাশাপাশি সবার দোয়া প্রার্থনা করেছেন তিনি।

বঙ্গবন্ধু দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় দেশ স্বাধীন করেছেন: শ ম রেজাউল করিম

Previous article

আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করা হচ্ছে

Next article

You may also like

Comments

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *