কৃষিখাতে বিদেশী উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ করতে আহবান কৃষিমন্ত্রীর

বাংলাদেশের কৃষি উৎপাদনকে টেকসই ও কৃষিখাতের রূপান্তরকে তরান্বিত করার জন্য বিনিয়োগ করতে উন্নত দেশ, আন্তর্জাতিক ব্যাংক, দাতা সংস্থা ও বেসরকারি উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) ইতালির রোমে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)’র বিশ্ব খাদ্য ফোরামের বিনিয়োগ সম্মেলন’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরবর্তী অধিবেশনে এ আহবান জানান। ঢাকায় প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।

উক্ত সম্মেলনে এফএও’র মহাপরিচালক কিউ দোংয়ু, চিফ ইকনমিস্ট টরেরো কুলেনসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ব্যাংক, দাতা সংস্থা ও বেসরকারি উদ্যোক্তা প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন। সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সদস্য হিসেবে রোমে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত শামীম আহসান, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রুহুল আমিন তালুকদার, ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক শাহজাহান কবীর, রোম দূতাবাসের ইকোনমিক কাউন্সিলর মানস মিত্র উপস্থিত ছিলেন।

ড. আব্দুর রাজ্জাক নির্ধারিত সেশনে বাংলাদেশের কৃষিখাতে বিনিয়োগ পরিকল্পনা, প্রয়োজনীয়তা ও সম্ভাবনা তুলে ধরেন। এতে কৃষিমন্ত্রী দেশের কৃষিখাতে আগামী ৫ বছরের মধ্যে ১৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ প্রয়োজন বলেও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের আমলে কৃষি উৎপাদনে বাংলাদেশ অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে। কিন্তু কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণে ও কৃষিপণ্যের রপ্তানিতে অনেকটা পিছিয়ে আছে। অথচ এসব ক্ষেত্রে অপার সম্ভাবনা রয়েছে।

বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিকল্পনায় কোল্ড স্টোরেজ স্থাপন ও সংগ্রহোত্তর ব্যবস্থাপনা, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বিপনন, জলবায়ূবান্ধব কৃষি এবং সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনার মতো চারটি খাতকে অগ্রাধিকার দিয়ে তিনি বলেন, এ সকল খাতে আগামী ৫ বছরের মধ্যে ১৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ প্রয়োজন। বাংলাদেশে কৃষিতে বিনিয়োগের জন্য এই খাতগুলো খুবই সম্ভাবনাময় এবং তা লাভজনক হবে।

আরও পড়ুনঃ জুলাই-সেপ্টেম্বরে পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৫ বিলিয়ন ডলারের

বিশেষ করে আলু, পেঁয়াজ, আম ও টমেটোর মতো চারটি পণ্যের জন্য কোল্ড স্টোরেজ স্থাপন, সংগ্রহোত্তর ব্যবস্থাপনা, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বিপণনে দ্রুত বিনিয়োগ কামনা করেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, দেশে পেঁয়াজ, আম ও টমেটোসহ শাকসবজি সংরক্ষণের এখনো তেমন প্রযুক্তি নেই, কোল্ড স্টোরেজ নেই। ফলে এসব পণ্য সংগ্রহোত্তর পর্যায়েই ২৫ থেকে ৪০ শতাংশ নষ্ট হয়ে যায়।

বিনিয়োগের অবকাঠামো ও সরকারি সুযোগসুবিধার বিষয়গুলো বিস্তারিত তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুষ্ঠু পরিবেশ রয়েছে। কাজেই, আপনারা বিনিয়োগে এগিয়ে আসুন। কৃষিখাতের রূপান্তরে বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে কাজ করছে এফএও। সেজন্য এফএও ১৮ থেকে ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত দুদিনব্যাপী ‘বিনিয়োগ সম্মেলনের’ আয়োজন করেছে।

বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের ২০টি দেশ এ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করছে, যাদের কৃষিখাতে বিদেশি বিনিয়োগের বেশি প্রয়োজন। এছাড়াও সম্মেলনে বিশ্বব্যাংক, আরব ব্যাংক, আন্ত:আমেরিকান উন্নয়ন ব্যাংক, ল্যাটিন আমেরিকা উন্নয়ন ব্যাংকসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ব্যাংক, দাতা সংস্থা ও বেসরকারি উদ্যোক্তা প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করছে।