স্বাস্থ্য

কোভিড হয়ে গিয়েছে বলে টিকা না নিয়ে মস্ত ভুল করেছেন না তো?

0
cv

একবার কোভিড তো হয়েই গিয়েছে। ফলে, শত্রু কে তা তো চিনেই ফেলেছে শরীরের প্রতিরোধ ব্যবস্থা। করোনাভাইরাসের সবক’টি রূপের সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য তৈরি হয়ে গিয়েছে অ্যান্টিবডি। তাই আর কোভিড টিকা নেওয়ার প্রয়োজন নেই। এমন ভেবে যাঁরা এখনও কোভিড টিকা নেননি বা টিকার সবক’টি পর্ব সম্পূর্ণ করেননি তাঁরা ভুল করছেন। এই ধারণা বদ্ধমূল হয়ে থাকলে বদলে নিন। কোভিড টিকা নিয়ে নিন। তার সবক’টি পর্বই সম্পূর্ণ করুন। তা না হলে কিন্তু বিপদের আশঙ্কা রয়েছে।

কারণ, একবার সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের সংক্রমণের পর কেউ সুস্থ হয়ে ওঠার পর যদি কোভিড টিকা না নিয়ে থাকেন তা হলে ডেল্টা, ওমিক্রনসহ করোনাভাইরাসের বিভিন্ন রূপে তাঁদের ফের সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা যথেষ্টই। টিকার সবক’টি পর্ব নেওয়া থাকলে তার সম্ভাবনা কমে যায় অনেকটাই। কারণ, স্বাভাবিক সংক্রমণ মানবদেহে যে অ্যান্টিবডিগুলো তৈরি করে তার চেয়ে সংখ্যায় অনেক বেশি ও শক্তিশালী টিকা নেওয়ার পর দেহে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডিগুলো।

কোভিড টিকা যেভাবে দেহের প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে বহিরাগত শত্রুকে চিনতে, বুঝতে শেখায়, সেই শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেভাবে তাদের হারাতে শেখায় স্বাভাবিক সংক্রমণে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডিগুলো, সেভাবে চিনতে পারে না বহিরাগত শত্রুকে। করোনাভাইরাসের সবক’টি রূপের বিরুদ্ধে জানপ্রাণ দিয়ে লড়ার ক্ষমতা থাকে না স্বাভাবিক সংক্রমণের পর তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডিগুলোর। তাদে‌র সংখ্যাও খুব বেশি হয় না। ফলে, হানাদারদের বিরুদ্ধে লড়ার জন্য মানবদেহের নিজস্ব সেনা (অ্যান্টিবডি)-র পরিমাণও হয় অপর্যাপ্ত।

আমেরিকার স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল স্কুলের সাম্প্রতিক একটি গবেষণা এ কথা জানিয়েছে। গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘সেল’ এর অনলাইন সংস্করণে।

মানবদেহের লসিকাগ্রন্থির বিশেষ কয়েকটি অংশ (যাকে বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলা হয়, ‘জার্মিনাল সেন্টার্স’) কেনো খুব সক্রিয় হয়ে ওঠে কোভিড টিকা নেওয়ার কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই, এই গবেষণার ফলাফলে তা বোঝা গেল।

লসিকাগ্রন্থিগুলোর এই অংশগুলিতে থাকা অ্যান্টিবডিগুলোকেই বিশেষভাবে বেছে নেয় দেহের স্বাভাবিক প্রতিরোধ ব্যবস্থা। বহিরাগত করোনাভাইরাসের রূপগুলোকে চেনানোর জন্য। তাদের বিরুদ্ধে কীভাবে লড়তে হবে তা শেখানোর জন্য। সেনাবাহিনী যেমন কখনও পদাতিক বাহিনী, কখনও বা নৌ বা বিমানবাহিনী দিয়ে লড়াই করে, তেমনই করোনাভাইরাসের কোন রূপের বিরুদ্ধে ভালো লড়াই দিতে পারবে সেই মতো লসিকাগ্রন্থিগুলোর ওই বিশেষ অংশগুলো থেকে অ্যান্টিবডিদেরও বেছে নেয় প্রতিরোধ ব্যবস্থা। তাদের সেইভাবে প্রশিক্ষণ দেয়। তাদের সংখ্যা দ্রুত বাড়ানোর জন্য যা যা করণীয় প্রতিরোধ ব্যবস্থা জরুরি ভিত্তিতে সেটা করে।

গবেষকরা দেখেছেন, এই কাজটাই দেহের প্রতিরোধ ব্যবস্থা আরও ভাল ভাবে করতে পারে কোভিড টিকা নেওয়া থাকলে। বহিরাগত শত্রুর বিরুদ্ধে লড়ার জন্য ঠিক যে ধরনের ‘সেনা’ প্রয়োজন, সেই ধরনের অ্যান্টিবডিই পেয়ে যায় প্রতিরোধ ব্যবস্থা। করোনাভাইরাসের সবক’টি রূপকে লড়াইয়ে হারিয়ে দেওয়ার জন্য। সংক্রমণ রুখে দেওয়ার জন্য।

রক্তের গ্রুপ না মিললেও সহজেই হবে ফুসফুসের প্রতিস্থাপন

Previous article

আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ থাকলে বাংলাদেশের কোন রাজনৈতিক প্রতিপক্ষই বিজয় ঠেকাতে পারবে না:- ওবায়দুল কাদের

Next article

You may also like

Comments

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *