তথ্য ও প্রযুক্তিআন্তর্জাতিক

‘ক্যারেন জেকবসন’ জিপিএসের নেপথ্য কণ্ঠস্বর!

0
krnjcb

জিপিএস চালিত যন্ত্রে তার মোলায়েম কণ্ঠের নির্দেশেই অনেকে পথ খুঁজে পান। সিনেমা হল থেকে বিলাসবহুল প্রমোদতরী, সফ্টওয়্যার অ্যাপ্লিকেশন হোক বা অডিওবুক— সবের নেপথ্যেই রয়েছেন ক্যারেন জেকবসন। অনেকের কাছে যিনি ‘জিপিএস গার্ল’ নামে পরিচিত। এককালে যিনি নিজেও জানতেন না, জিপিএস চালিত যন্ত্রে তার কণ্ঠস্বরই ব্যবহৃত হচ্ছে!

কেবলমাত্র জিপিএসের নেপথ্য কণ্ঠস্বর হয়েই শিরোনামে উঠে আসেননি ক্যারেন। অস্ট্রেলিয়ার একটি অখ্যাত শহর থেকে আমেরিকার গিয়ে হয়ে উঠেছেন খ্যাতনামী গায়িকা, ভয়েস ওভার আর্টিস্ট। নিজের বক্তৃতার মাধ্যমে প্রেরণা জুগিয়েছেন বহুজন কে। কীভাবে সাফল্যের পথে হাঁটা যায়, তা-ও লিখেছেন তার দু’টি বইয়ের পাতায়। ছোটবেলা থেকেই অলিভিয়া নিউটন-জনের মতো হতে চেয়েছেন ক্যারেন। অস্ট্রেলিয়ার থেকে হলিউডে পাড়ি দিয়ে যিনি গানে-অভিনয়ে দুনিয়া মাতিয়েছেন। সাত বছর বয়সে টেলিভিশনে অলিভিয়াকে দেখামাত্রই স্থির করেন, তিনিও আমেরিকার যাবেন। অলিভিয়ার মতোই গান বেঁধে পেশাদারি মঞ্চে গাইবেন। অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের ম্যাকে শহরে বেড়ে উঠেছেন ক্যারেন। এক সময় সেখান থেকে আমেরিকায় পাড়ি দেন তিনি। স্বপ্ন পূরণের যাত্রায় সঙ্গী বলতে ছিল একটি স্যুটকেস এবং অবশ্যই মনের কোনায় ছিল সুরের ডালি।

আমেরিকায় পাড়ি দেয়ার আগে সঙ্গীতের তালিমও শেষ করেছিলেন ক্যারেন। কুইন্সল্যান্ড কনজাভেটোরিয়াম গ্রিফিথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কণ্ঠস্বর এবং পিয়ানো বাজানোয় স্নাতক ডিগ্রিলাভ। তার পর পিয়ানোয় জ্যাজ বাজানো নিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যান। প্রথাগত শিক্ষার মাঝেই কুইন্সল্যান্ড ইয়ুথ কয়্যার এর সদস্য হিসাবে পারফর্ম করতেন। সঙ্গীতকেই পেশা হিসাবে বেছে নেওয়ার প্রচেষ্টায় এক সময় নিজের শহর ছেড়ে সিডনিতে বসবাস করতে শুরু করেন। সেখানে ‘বাডি- দ্য বাডি হোলি স্টোরি’-র মতো মিউজিক্যাল থিয়েটারেও দেখা যেত ক্যারেনকে।

এক সময় অস্ট্রেলিয়ার টেলিভিশনে শোয়ে নিয়মিত মুখ ছিলেন ক্যারেন। ‘গুড মর্নি অস্ট্রেলিয়া’ বা ‘আই ডু আই ডু’-র মতো শোয়ে পারফর্ম করার সময় কয়েকশো বিজ্ঞাপন বা রেডিয়োর অনুষ্ঠান করে ফেলেছেন। তবে পেশাদার গায়িকা হতে হাতছানি দিয়ে ডাকছিল আমেরিকা। আমেরিকার জন্মদিনে নিউ ইয়র্কে শহরে গিয়ে উঠেছিলেন তিনি। সালটা ছিল ২০০০। নতুন শহরে কাজের খোঁজও শুরু করেন ক্যারেন। চলত গান লেখা বা রেকর্ডিংও। ধীরে ধীরে ন’টি নিজস্ব গান রেকর্ডিং করিয়ে ফেলেন। তবে ২০০২ সালে একটি চাকরির ইন্টারভিউ দিতে গিয়ে ক্যারেনের জীবন আমূল বদলে যায়। কী কাজ? তা স্পষ্ট জানানো হয়নি। তবে ফোনে বলা হয়েছিল, ভয়েস ওভার আর্টিস্টের মতো একটানা সংলাপ বলে যেতে হবে। কর্মদাতার আরও শর্ত ছিল, আমেরিকার বসবাসকারী অথচ অস্ট্রেলিয়ার মহিলা হতে হবে। রাজি হয়ে যান ক্যারেন।

প্রায় ৫০ ঘণ্টা ধরে একটি স্টুডিওতে চলে রেকর্ডিং। টেক্সট-টু-স্পিচ ভয়েস সিস্টেমের সামনে বসে ক্যারেন একটানা কথা বলে চলেন। কিন্তু, কী কারণে তা বুঝতে পারেন না। তবে তা নিয়ে বিশেষ কথাবার্তা প্রকাশ্যে বলা যাবে না বলেও নির্দেশ ছিল কর্মদাতার। অদ্ভুত লাগলেও তাই করেছিলেন ক্যারেন। সে বছরই জিপিএস প্রযুক্তিতে চালিত যন্ত্রে ক্যারেন কণ্ঠস্বরকে বেছে নেয় বেশ কয়েকটি বহুজাতিক সংস্থা। আমেরিকার সংবাদমাধ্যমে তার নাম হয়ে যায় ‘ড্যাশবোর্ড ডিভা’ বা ‘গ্যাজেট গার্ল’। নিজের জীবনের সাফল্যের কাহিনি অন্যদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে দুটি বই লিখেছেন ক্যারেন। ‘দ্য জিপিএস গার্ল’স রোড ম্যাপ ফর ইয়োর ফিউচার’ এবং ‘রিক্যালকুলেট-ডিরেকশনস ফর ড্রাইভিং পারফরম্যান্স সাকসেস’। এ দুটিতেই সফল হওয়ার পথ দেখিয়েছেন ক্যারেন।

সূত্র : নিউজ হাব

চুইংগাম এর অনেক ভালো দিকও রয়েছে!

Previous article

ওডিআই র‌্যাংকিংয়ে ষষ্ঠ স্থানে ওঠার সুযোগ বাংলাদেশের

Next article

You may also like

Comments

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *