এসএমই বার্তাদেশি উদ্যোক্তা

ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা পেলেন ৩০০ কোটি টাকা

0
images 10

করোনাভাইরাসের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের মাঝে নির্ধারিত সময়ের ৬ মাস আগেই সরকারের প্রণোদনা প্যাকেজের ২০০ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ এসএমই ফাউন্ডেশনের: ৩১০৬ জন উদ্যোক্তা পেয়েছেন ৩০০ কোটি টাকা।

করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার কার্যক্রম ত্বরান্বিত করা এবং পল্লী এলাকার প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে সরকারের দ্বিতীয় দফার প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি (সিএমএসএমই) উদ্যোক্তাদের মাঝে বিতরণের জন্য চলতি অর্থবছরের জন্য বরাদ্দকৃত ২০০ কোটি নির্ধারিত সময়ের ৬ মাস আগেই বিতরণ করেছে এসএমই ফাউন্ডেশন। দুই দফায় মাত্র সাড়ে ৪ মাসে বিতরণ করা হয় ৩০০ কোটি টাকা। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর, মাত্র তিন মাসে ১৯টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ২১৮১জন উদ্যোক্তার মাঝে ২০০ কোটি টাকা বিতরণ সম্পন্ন করে এসএমই ফাউন্ডেশন।

উল্লেখ্য, গ্রামীণ অঞ্চলের প্রান্তিক পর্যায়ের সিএমএসএমই উদ্যোক্তাদের সহজ শর্তে এবং স্বল্প সুদে ঋণ প্রদানের লক্ষ্যে সরকার দ্বিতীয় দফায় ১৫০০ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করে, যার মধ্যে এসএমই ফাউন্ডেশনের অনুকূলে ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। ২০২০-২১ অর্থবছরে এসএমই ফাউন্ডেশনের অনুকূলে ১০০ কোটি টাকা এবং ২০২১-২২ অর্থবছরে ২০০ কোটি টাকা ছাড় করে অর্থ বিভাগ।

এসএমই ফাউন্ডেশন কর্তৃক বিতরণকৃত ঋণের মধ্যে নারী-উদ্যোক্তার সংখ্যা প্রায় ২৬ শতাংশ এবং পুরুষ উদ্যোক্তা প্রায় ৭৪ শতাংশ। ঋণপ্রাপ্ত উদ্যোক্তাদের মধ্যে ১৪৬২জন ট্রেডিং খাতের, ১১৬৭জন উৎপাদন খাতের এবং ৪৭৭জন সেবা খাতের। ৫০ শতাংশ উদ্যোক্তাই ৫ লাখ টাকার চেয়ে কম ঋণ পেয়েছেন।

এ তথ্য থেকেই প্রমানীত হয় যে, এসএমই ফাউন্ডেশন কর্তৃক বিতরণকৃত এ ঋণ প্রান্তিক পর্যায়ের প্রকৃত ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাগণ পেয়েছেন। যদিও চাহিদার তুলনায় এটা খুবই সামান্য। ফাউন্ডেশন এ ঋণ বিতরণ কার্যক্রম সম্পাদনের লক্ষ্যে প্রথম দফায় ১২টি এবং দ্বিতীয় দফায় ১৯টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাথে ঋণ বিতরণ চুক্তি স্বাক্ষর করে এসএমই ফাউন্ডেশন।

ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো হলো, ব্র্যাংক ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, বেসিক ব্যাংক, দ্যা সিটি ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, কর্মসংস্থান ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক, আইপিডিসি ফাইন্যান্স, আইডিএলসি ফাইন্যান্স ও লঙ্কাবাংলা ফাইন্যান্স।

চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ সারাদেশের প্রায় ১০০টি এসএমই ক্লাস্টার, চেম্বার, অ্যাসোসিয়েশন-এর সদস্য উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি সারাদেশের নারী-উদ্যোক্তা এবং এসএমই ফাউন্ডেশন ও বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি সংগঠন ও অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে সুপারিশকৃত এসএমই উপখাত, ট্রেডবডি এবং গ্রুপের তালিকাভুক্ত উদ্যোক্তা এবং সিএমএসএমই খাতের জন্য সরকার ঘোষিত প্রথম দফার প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় ঋণ না পাওয়া পল্লী ও প্রান্তিক পর্যায়ের উদ্যোক্তাগণকে ঋণ প্রদান করে। ২১ মার্চ ২০২১ ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. মোঃ মাসুদুর রহমানের সভাপতিত্বে পরিচালক পর্ষদের সভায় এই ঋণ কর্মসূচি বিতরণ বিষয়ক নীতিমালা ও নির্দেশিকা অনুমোদন করা হয়। এতে করোনা মহামারীর কারণে গ্রামীণ ও প্রান্তিক পর্যায়ের ক্ষতিগ্রস্ত অতিক্ষুদ্র (মাইক্রো), ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের মধ্যে নিম্নবর্ণিত ক্যাটাগরির উদ্যোক্তাদের প্রাধান্য দেয়ার কথা বলা হয়:

১. যারা সরকারের প্রথম দফার প্রণোদনার ২০ হাজার কোটি টাকার আওতায় ঋণপ্রাপ্ত হননি;
২. অগ্রাধিকারভূক্ত এসএমই সাব-সেক্টর এবং ক্লাস্টারের উদ্যোক্তা;
৩. নারী-উদ্যোক্তা;
৪. নতুন উদ্যোক্তা;
৫. পশ্চাদপদ ও উপজাতীয় অঞ্চল, শারীরিকভাবে অক্ষম এবং তৃতীয় লিঙ্গের উদ্যোক্তাগণ।

এসএমই ফাউন্ডেশন নিজে ঋণ বিতরণ করে না। তবুও নির্ধারিত সময়ের বহু আগেই নির্দিষ্ট পরিমাণ ঋণ বিতরণের মুল কারণ ছিল ব্যাংক ও নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ট্রেডবডি-অ্যাসোসিয়েশন এবং ক্লাস্টার অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে এসএমই ফাউন্ডেশনের নিবিঢ় যোগাযোগ এবং সমন্বয় সাধন।

ফলে চুক্তিবদ্ধ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ ৩১০৬জন সিএমএসএমই উদ্যোক্তার মাঝে দ্রুততম সময়ে ৩০০ কোটি টাকা বিতরণ সম্পন্ন করেছে।  উল্লেখ্য,  প্রথম দফায় ২০২০-২১ অর্থবছরে ১০টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ৯২৫জন ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তার মাঝে মে-জুন ২০২১ সময়ে মাত্র দেড় মাসে ১০০ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়।

প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় উদ্যোক্তাগণ ৪% সুদে ঋণ পেয়েছেন। প্রথম দফায় গ্রাহক পর্যায়ে ঋণের পরিমাণ ছিলো সর্বনিম্ন ১ লাখ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৭৫ লাখ টাকা পর্যন্ত। তবে দ্বিতীয় দফায় আরো বেশি উদ্যোক্তাকে ঋণের আওতায় আনার লক্ষ্যে ঋণের সর্বোচ্চ সীমা ৫০ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়। সরকার এসএমই ফাউন্ডেশনকে আরো বেশি প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণ বিতরণের দায়িত্ব প্রদান করলে ফাউন্ডেশন তা সানন্দে করতে পারবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্টরা।

ছুটি বাড়তে পারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের

Previous article

উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের তাগিদ:- সমাজকল্যাণমন্ত্রী

Next article

You may also like

Comments

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *