প্রবাস জীবন

গণহত্যাকে জাতিসংঘের স্বীকৃতির দাবিতে কানাডায় সমাবেশ

1
cand

শনিবার (১ অক্টোবর) কানাডার স্থানীয় সময় বিকেলে টরন্টোর ৩০০০ ড্যানফোর্থ এভিনিউতে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত নারকীয় গণহত্যার জাতিসংঘের স্বীকৃতির দাবিতে এক সমাবেশ এবং প্রদীপ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। টরন্টো ফিল্ম ফোরামের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশ ও প্রদীপ মিছিলে টরন্টোর মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং ব্যক্তি স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেয়।

৩ অক্টোবর সুইজারল্যান্ডের জেনেভাস্থ জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের ৫১তম অধিবেশনে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির দাবিতে আলোচনা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের এই আলোচনা যাতে ফলপ্রসূ হয় এবং যে সব সংগঠনের প্রচেষ্টায় গণহত্যার বিষয়টি জাতিসংঘের আলোচনার এজেন্ডা হিসেবে অন্তর্ভূক্ত হয়েছে, সেই সব সংগঠনের সাথে সংহতি প্রকাশের লক্ষ্যে টরন্টোতে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

এই প্রথম জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে বাংলাদেশে সংঘটিত ভয়াবহতম, বীভৎস, বর্বর গণহত্যা ও জেনোসাইড নিয়ে আলোচনা হতে যাচ্ছে। এই আলোচনাকে সামনে রেখে বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণকারী বাঙালিরা ইতোমধ্যে সোচ্চার হয়েছে এই জেনোসাইডের আন্তর্জাতিক ও জাতিসংঘের স্বীকৃতি আদায়ের জন্য।

বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ইতিহাসের নৃশংসতম গণহত্যা ও জেনোসাইডের ভিডিও ফুটেজ, ফটোগ্রাফ, ছবি, দলিল পত্র এবং তথ্য উপাত্ত তুলে ধরা হবে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের এই অধিবেশনে।

টরন্টোর ৩০০০ ড্যানফোর্থ এভিনিউ’র ঘরোয়া রেস্টুরেন্টের সামনে বিপুল সংখ্যক মানুষ এই গণহত্যার স্বীকৃতির দাবি সম্বলিত ব্যানার, পোস্টার এবং প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে উপস্থিত হন।

টরন্টোর ফিল্ম ফোরামের সভাপতি এনায়েত করিম বাবুলের সভাপতিত্বে এই সমাবেশে বক্তৃতা করেন প্রতিথযশা কবি আসাদ চৌধুরী, শহীদ বুদ্ধিজীবী কন্যা দ্যুতি অরনি, পিডিআই (প্রগ্রেসিভ ডেমোক্রেটিক ইনিশিয়েটিভ) কানাডার আহবায়ক বিদ্যুৎ রঞ্জন দে, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলম, কানাডা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি সৈয়দ আব্দুল গফফার, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী কানাডার সাধারণ সম্পাদক মিনারা বেগম, সাবেক ছাত্রনেতা ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের প্রাক্তন ভিপি ফায়জুল করিম, সাংবাদিক ও ‘নতুন দেশ’ এর প্রধান সম্পাদক শওগাত আলী সাগর এবং টরন্টো ফিল্ম ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মনিস রফিক।

আরও পড়ুনঃ ১৫ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১০১ কোটি ডলার

এছাড়াও সমাবেশে পিডিআই কানাডা, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী কানাডা, ইন্টারন্যাশন্যাল ক্রাইম স্ট্রাটেজী ফোরাম, ছায়ানট, নাট্যসংস্থা কানাডা, ম্যাক এন্টারটেইনমেন্ট, কানাডা বঙ্গবন্ধু পরিষদ, বাংলাদেশ রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী সংস্থা, অন্যমেলা টরন্টো, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, সাপ্তাহিক ‘বাংলা কাগজ’ এবং প্রজন্ম ৭১ এর প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।

সমাবেশ শেষে উপস্থিত সকলে রবীন্দ্র সংগীত শিল্প নবিউল হক বাবলুর সাথে ‘আগুনের পরশমণি’ গান গাইতে গাইতে সমাবেশ সংলগ্ন ডেন্টোনিয়া পার্কে অবস্থিত শহীদ মিনারে গিয়ে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করেন।

টরন্টোর শহীদ মিনারে ’৭১ এর গণহত্যার জাতিসংঘের স্বীকৃতির দাবির সমাপনী বক্তব্য রাখেন সাবেক ছাত্রনেতা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের প্রাক্তন এজিএস নাসির উদ দুজা। তিনি ঘোষণা দেন ’৭১ এর গণহত্যার জাতিসংঘের স্বীকৃতি না পাওয়া পর্যন্ত টরন্টোতে ধারাবাহিকভাবে সমাবেশ এবং আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।

দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তিনি সবাইকে এই মহৎ উদ্যোগের সাথে থাকার জন্য আহবান জানান। সমাবেশ এবং প্রদীপ প্রজ্জ্বলন অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন টরন্টো ফিল্ম ফোরামের অনুষ্ঠান সম্পাদক সোলায়মান তালুত রবিন।

‘স্কিনোমিটার’ দিয়েই হবে ‘অদৃশ্য’ ত্বক ক্যান্সার শনাক্ত

Previous article

এবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের নিয়ে ওয়ার্কশপ করতে যাচ্ছে ‘অন দ্য ওয়ে’

Next article

You may also like

1 Comment

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *