উদ্যোক্তার গল্পদেশি উদ্যোক্তা গণিতে অনার্স, চাকরি ছেড়ে কেমন কাটছে খেজুর চাষী নজরুলের দিন By রিপোর্টার September 14, 20221 ShareTweet 1 ২০০৩ সালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিতে অনার্স করেন নজরুল ইসলাম বাদল। পেটের দায়ে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানে করেন চাকরি। পরে সব কিছু বাদ দিয়ে বাবার সঙ্গে কৃষিকাজে যোগ দেন। বর্তমানে তিনি সফল, নজরুল ইসলাম গাজীপুর সদর উপজেলার পিরুজালী ইউনিয়নের আলিমপাড়া এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা জিল্লুর রহমান খানের ছেলে। তিনি দেশ-বিদেশ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজেদের জমিতে ‘সৌদি ডেট পাম ট্রিস ইন বাংলাদেশ’ নামে খেজুরের বাগান গড়ে তোলেন। খেজুরের বাগানের পাশাপাশি খেজুর চারার নার্সারিও গড়ে তুলেছেন। খেজুর চাষ করে তিনি দেশে খেজুরের চাহিদা মেটানোর স্বপ্ন দেখছেন। বাদলের জানান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি গণিতে অনার্স করেন। এরপর কয়েক বছর চাকরি করেন। পরে কৃষক বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা জিল্লুর রহমানের সঙ্গে কৃষিকাজে মনোনিবেশ করেন। তখন থেকেই কৃষিতে নতুন কিছু করার চিন্তা-ভাবনা করেন। সেই ভাবনা তাকে নিয়ে যায় সৌদি আরব প্রবাসী এক বন্ধুর কাছে। ২০১৫ সালে শুরুর দিকে ওই বন্ধুর সহযোগিতায় খেজুরের চাষ ও নার্সারি করার পরিকল্পনা করেন। আরও পড়ুনঃ ঋণ নিয়ে ক্ষীর বানিয়ে সফল বিউটি, পেয়েছেন পদক মরুভূমি অঞ্চলের ফসল বাংলাদেশের মাটিতে ফলানো সম্ভব কি না তা নিয়েও তার ভাবনার অন্ত ছিল না। প্রবাসী ওই বন্ধুর সহযোগিতায় বিশ্বের ৬টি দেশ থেকে বিভিন্ন জাতের খেজুরের বীজ ও চারা সংগ্রহ করেন বাদল। ২০১৫ সালের ২৩ অক্টোবর প্রথমে ১৮টি চারা রোপণ করে মরুর খেজুরের চাষ শুরু করেন। এজন্য প্রথমেই তার খরচ হয় ৫২ লাখ টাকা। প্রথমে ৭০ শতক জমিতে সৌদি আরবের খেজুরের জাত নিয়ে বাগান শুরু করেন। ২০১৭ সালে প্রথম তার বাগানের খেজুর গাছে ফলন আসতে শুরু করে। খেজুরের বীজ কিংবা সাকার থেকে চারা উৎপাদন করে খেজুরের নার্সারিও গড়ে তোলেন। সেই বছরেই বাগান থেকে ৬২ লাখ টাকার চারা বিক্রি করেন। এরপর তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। বর্তমানে তার বাগানে ও নার্সারিতে ১৬ প্রজাতির খেজুর গাছ রয়েছে। নার্সারিসহ খেজুর বাগানটি সাড়ে ৭ বিঘায় সম্প্রসারিত করেছেন। তারপরও মানুষের ব্যাপক চাহিদার যোগান দিতে তিনি আরও ১৪ জাতের চারা বাইরে থেকে এনেছেন। তিনি বলেন, ৩০ হাজার চারা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে খেজুরের নার্সারি গড়ে তুলেছি। বাগানে খেজুরের যেসব জাত রয়েছে সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য- আজওয়া, মরিয়ম, আম্বার, খুনিজি, হেলালি, ম্যাডজেলি, বারহি, খালাস, ওমানি, সুক্কারি, সাফাওয়ি। যেভাবে ফলন হচ্ছে তা ঠিক থাকলে অচিরেই দেশে খেজুরের চাহিদা মেটাতে পারব বলে আশা করছি। সাকারের চারা রোপণের এক-দুই বছরের মধ্যেই খেজুর ধরে। এ ধরনের প্রতিটি সাকার ২৫ হাজার টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। আর খেজুর ধরা অবস্থায়ও চারা বিক্রি করা হয়, যার দাম হলো ৩ লাখ টাকা। বাগান পরিচর্যা ও অন্যান্য খরচ বাবদ প্রতি মাসে তার ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়। নজরুল জানান, পরীক্ষামূলকভাবে ২০১৫ সালের ২৩ অক্টোবর বিভিন্ন জাতের ১৮টি গাছ রোপণ করেছিলাম। এ বছর বাগানে অনেক খেজুর ধরেছে। এক একটি খেজুরের বাধার ওজন প্রায় ২৫ কেজি। একটি পূর্ণ বয়স্ক গাছে ৮-১২টি বাধি ধরে। প্রতি বাধিতে ২৫ থেকে ৩০ কেজি করে খেজুর হয়। উল্লেখ্য, দেশে বছরে প্রায় ৩০ হাজার মেট্রিক টন খেজুরের চাহিদা রয়েছে। যার পুরোটাই আমদানি করে চাহিদা মেটাতে হয়। বাদল জানান, দেশে খেজুর বাগান করতে সরকারের কৃষি বিভাগের সহযোগিতা পেলে আগামী ১০ বছরে দেশে উৎপাদিত খেজুরেই দেশের চাহিদা মেটানো সম্ভব।
ই-ক্যাব ইয়ুথ ফোরামের হাত ধরে শান্ত মারিয়াম ইউনিভার্সিটিতে যাত্রা শুরু হতে যাচ্ছে ই-কমার্স ক্লাবের February 8, 20231565 views