উদ্যোক্তার গল্পদেশি উদ্যোক্তা

চাকরি ছেড়ে উদ্যোক্তা হলেন রাবেয়া সুলতানা

0
r3 2

চাকরি ছেড়ে উদ্যোগ শুরু করেন রাবেয়া সুলতানা। উদ্যোক্তা জার্নালের বিশেষ আয়োজন ‌‘উদ্যোক্তা গল্প’-র আজকের পর্বে, কথা হলো উদ্যোক্তা রাবেয়া সুলতানার সঙ্গে। আজ শুনবো তার উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার গল্প।

আমি রাবেয়া সুলতানা। আমার জন্ম এবং বেড়ে ওঠা খুলনা শহরে। যদিও আমার হোম ডিসট্রিক্ট চট্টগ্রাম, কিন্তু বাবার চাকরি সুত্রে আমাদের সব ভাই বোনের জন্ম ও বেড়ে উঠা খুলনায়।

ছোট বেলা থেকেই আমার হাতের কাজের প্রতি আগ্রহ ছিলো। পড়াশোনার পাশাপাশি কিছু করতে হবে এই মনোভাব সবসময়ই ছিলো আমার। গ্র্যাজুয়েশন করার সাথে সাথেই আমি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এ চাকরি শুরু করি এবং অনেক বছর চাকরী করার পর একটা সময় আমি চাকরি ছেড়ে দেই। কিন্তু তখনও আমার মাথার ভিতরে ছিলো কিছু করতে হবে, শুধু বসে থাকলে চলবে না, এই বিষয়টাই মাথায় ঘুরতো। তাই সেই ছোট বেলার পছন্দের কাজ নিয়েই নতুন করে কাজ করার সিধান্ত নেই।

আমি মূলত কাজ করছি যশোরের নকশিকাঁথা, থ্রি-পিস, শাড়ি, কুশন কাভার, নকশি বেডসিট, ওয়ালম্যাট, শাল এবং হাতের কাজের ব্যাগ নিয়ে। আমার প্রতিষ্ঠান থেকে এখন রেগুলারই এই ধরনের পন্যগুলো রেডি, প্রি অর্ডার বেসিসে ডেলিভারি দেওয়া হচ্ছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে কাস্টমাইজড ডিজাইনেরও অর্ডার নিচ্ছি, পাশাপাশি সিলেক্টেড আইটেম পাইকারি দিচ্ছি।

r1 1

শুরুটা অন্যরকম ছিলো। হঠাৎ করেই অনলাইনে ফেসবুক বিজনেস পেইজ খুলবো মনে করে খুলে ফেলি। মূলধন খুব বেশি ছিলো না। ১০,০০০ টাকা নিয়ে বিসমিল্লাহ বলে শুরু করি।

আসলে উদ্যোক্তা হওয়াটা একেক জনের কাছে একেক রকম মনে হয়। তবে আমার মনে হয়- একজন উদ্যোক্তার প্রথমেই সততা, বিশ্বস্ততা থাকতে হবে। এই ২টা গুন ছাড়া এগিয়ে চলা অসম্ভব। সেইসাথে পন্য সম্পর্কে ভালোভাবে জানা এবং নিজের লক্ষ্য স্থির করে আগাতে হবে। যেহেতু আমি একদমই নতুন শুরু করেছি। আমার নিজের কর্মী ২জন এবং কাজ করিয়ে নেওয়ার মতো কর্মী আছে ৪/৫ জন।

সবারই সখ, স্বপ্ন থাকে লেখাপড়া শিখে নামি দামী প্রতিষ্ঠানে চাকরী করার। আমারও ছিলো এবং করেছিও, কিন্তু মনের ভিতরে আলাদা কিছু করার ইচ্ছে ছিলো আগে থেকেই। এইটাও একটি কারন, পাশাপাশি একদম হাত গুটিয়ে বসে থাকাও আমার পছন্দ না বলে নতুন করে আমার উদ্যোগ নিয়ে শুরু করা। সেইসাথে সবচেয়ে বড় যেই কারন সেইটা হলো, আমার মেয়ে আল্লাহর রহমতে দুনিয়াতে আসার পর আমি চাকরি ছেড়ে দেই।

r2

এরপরে কিছুদিন গ্যাপ দিয়ে আমার উদ্যোক্তা জীবন বেছে নিয়েছিলাম মেয়েকে সময় দেওয়ার জন্য। এই মূহুর্তে মেয়ের আমাকে প্রয়োজন। এখন আমি আমার নিজের ইচ্ছা কিছু করা, সেই প্রয়োজনও পূরণ করতে পারছি। পাশাপাশি মেয়েকেও সাথে রাখতে পারছি। এই সব চিন্তা থেকেই আমার উদ্যোক্তা জীবন বেছে নেওয়া।

আমার প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম সম্পূর্ণ অনলাইন বেসড। অফলাইনে আমার কোনো কার্যক্রম নাই।আমার পেইজ থেকে করা প্রতিটি আইটেইমই আমাদের দেশী পন্য, বিদেশী কোনো পন্য নিয়ে আমি কাজ করছি না।

আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে আসলে নারীদের কোনো কাজ করাই তেমন উপযোগী না। নারীরা ঘরে বাইরে যেখানেই কাজ করুক না কেনো, হাজারো প্রতিকূলতা পার করেই করে থাকে। তবে উদ্যোক্তা হলে অন্তত নিজে কিছু করছি বা করতে পারছি এই শান্তির জন্যও উদ্যোক্তা হওয়া প্রয়োজন।

অল্প উপকরণেই বানিয়ে ফেলুন আলুর টিক্কা

Previous article

আন্দোলন ও নির্বাচনে ফেল করে বিএনপি এখন খাদে পড়েছে:- ওবায়দুল কাদের

Next article

You may also like

Comments

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *