উদ্যোক্তার গল্পদেশি উদ্যোক্তা

ছেলে হয়েও কসমেটিকস নিয়ে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ জহিরুল ইসলামের

0
jhrl

উদ্যোক্তা জার্নালের বিশেষ আয়োজন ‌‘উদ্যোক্তা গল্প’-র আজকের পর্বে, কথা হলো উদ্যোক্তা জহিরুল ইসলামের সঙ্গে। আজ শুনবো তার উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার গল্প।

আসসালামু আলাইকুম। আমি জহিরুল ইসলাম। আমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা নারায়ণগঞ্জ বন্দর থানার ফরাজিকান্দা গ্রামে। এখানেই আমার শৈশব ও বেড়ে ওঠা।

আমি মূলত একজন হোম টিউটর। গ্র্যাজুয়েট কমপ্লিট করার পর চাকরির জন্য অনেক চেষ্টা করি কিন্তু পাইনি। আমি ভাবতাম নিজেকে একটা কিছু করতে হবে।বড় একটা কিছু করতে হবে। আমার বড় উৎসাহ এবং অনুপ্রেরণা হচ্ছে আমার মা। আমার মা আমাকে সবসময় উৎসাহ দিতেন তোমাকে কিছু একটা করতে হবে, তুমি যা করো আমি তোমার পাশে আছি। আসলে এইখান থেকে আমার উৎসাহ জেগেছে।

হঠাৎ ফেসবুকে একজনের স্টোরিতে দেখলাম কেকের ছবি দেয়া। আমি তাকে মেসেজ করি সে বললো অনলাইনে আমি সেল করি। তারপর থেকে আমি ভাবতাম যে, সে করতে পারলে আমি কেনো পারবোনা? আমার কসমেটিক নিয়ে ভালো আইডিয়া ছিলো, সে থেকেই আমি শুরু করে দিলাম আমার বিজনেস।

278049648 1125724031612669 8456820992261405492 n

আমি মূলত কসমেটিক নিয়ে কাজ করছি সাথে ড্রেস ও সেল করি। সামনে আরো কিছু নিয়ে কাজ করার পরিকল্পনা আছে। আসলে শুরু করেছিলাম ১,০০০ টাকা দিয়ে। শুরুটা আমার আসলে ভালো যায়নি আমি বুঝে উঠতে পারিনি কিভাবে কি করতে হবে। ধীরে ধীরে সবাইকে দেখে শিখে ফেলেছি।

একজন উদ্যোক্তা হতে হলে সবচেয়ে বেশি যেটা দরকার তা হলো ধৈর্য্য, আত্নবিশ্বাস এবং লক্ষ্য। ধৈর্য্য এবং আত্নবিশ্বাস না থাকলে হতাশায় ভুগতে হবে। বর্তমানে আমি নিজেই সবকিছু করি। প্রোডাক্ট নিয়ে আসা থেকে শুরু করে ডেলিভারি পর্যন্ত সব কাজ করতে হয় যেহেতু আমি এখনো ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা।

আসলে আমরা সবাই চাই পড়ালেখা শেষ করে ভালো একটা চাকরি করতে। কিন্তু আমরা এটাও জানি যে চাকরি পাওয়াটা অনেক কঠিন ব্যপার হয়ে দাঁড়িয়েছে বর্তমান প্রেক্ষাপটে। আমি ভেবেছি যে, নিজেকে একটা কিছু করতেই হবে তাই উদ্যোক্তা হয়েছি। আমি মনে করি, আমাদের চাকরির জন্য বেশি দৌড়াদৌড়ি না করে উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে আমরা প্রতিষ্ঠিত করতে পারি।

আমার প্রতিষ্ঠানের নাম “মিয়াজি’স বিউটি”। আসলে আমি অনেক দেরি করে আমার পেইজ খুলেছি। কিন্তু আমি পেইজ নিয়ে কাজ করছি, ইনশাআল্লাহ সফলতা আসবে। আমি মনে করি, আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে নারী উদ্যোক্তা হওয়া অনেক উপযোগী, তাদের আরো এগিয়ে আসতে হবে। পেছনে কে কি বললো তা নিয়ে না ভেবে উদ্যোক্তা হয়ে দেখিয়ে দিতে হবে ‘আমিও পারি’।

Untitled design
সত্যি বলতে আমি এখনো কোনো প্রতিবন্ধকতা পায়নি। যেহেতু আমার বাসা থেকে কুরিয়ার সার্ভিস অনেক দূরে তা নিয়ে প্রায়ই সমস্যায় পড়তে হয়। আলহামদুলিল্লাহ! আল্লাহর রহমতে সেল অনেক ভালো। সবার সাথে আরো পরিচিতি গড়ে তুলতে পারলে সেল আরো ভালো হবে ইনশাআল্লাহ।

আল্লাহর রহমতে কাস্টমার অনেক সন্তুষ্ট। কিছুদিন আগে এক আপু প্রোডাক্ট নেয়ার পর বলেছিলো ভাইয়া আমি অনেক অনেক খুশি এই প্রোডাক্টটি পেয়ে। তার একদিন পরই আমাকে আবার মেসেজ দিয়ে বলে ভাইয়া আমাকে আবার প্রোডাক্টটি দিয়েন, আমি বললাম আপু পরশু দিন আপনাকে পাঠালাম আবার লাগবে? সে বললো আপনার এই প্রোডাক্টটি এতো ভালো ছিলো যে আমার বোন নিয়ে নিয়েছে।

সরকারি বা বেসরকারিভাবে এখনো কোনো সহযোগিতা পায়নি। যদি সহযোগিতা পাই সেক্ষেত্রে খুব উপকার হবে। আমার প্রতিষ্ঠানের প্রধান অর্জন হচ্ছে বিশ্বাস। এখন পর্যন্ত আমি কাস্টমারের বিশ্বাস অর্জন করতে পেরেছি।

আমার প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হচ্ছে একটা কসমেটিক শো রুম দেয়া যেখানে সবাই ভালো মানের কসমেটিক পাবে এবং মানুষ যেনো বলতে পারে ভাইয়ার শো রুমের কসমেটিক সবচেয়ে ভালো মানের। আগামী ৫ বছরের মধ্যে নিজেকে সফল উদ্যোক্তা হিসেবে নাম লিখাতে চাই। সবাই আমাকে চিনুক, জানুক এই প্রত্যাশা। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন যেনো আমি সফলতা অর্জন করতে পারি।

ত্বকের রোদে পোড়া দাগ দূর করুন ৩ টি উপায়ে

Previous article

যেসব কারণে বাড়তে পারে অন্ধত্বের ঝুঁকি

Next article

You may also like

Comments

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *