জাতীয়খবরসারাদেশ

জমির মালিকানা হবে শুধুমাত্র দলিল-পত্রাদির ভিত্তিতে: ভূমিমন্ত্রী

0
received 1432255263857872

ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন প্রধানমন্ত্রীর সার্বিক দিকনির্দেশনায় ভূমি মন্ত্রণালয় ডিজিটাল সেবা প্রবর্তন এবং আইন ও বিধি-বিধান সংশোধন করে টেকসই ভূমি ব্যবস্থাপনা স্থাপনে জোর দিচ্ছে। এই টেকসই ভূমি ব্যবস্থায় সঠিক দলিলাদি ছাড়া কেউ কোনো জমি দখল করে রাখতে পারবেনা। এর ফলে অবৈধ দখলদারদের ভূমি দস্যুতার সুযোগ পাবেনা।

আজ বৃহস্পতিবার ‘বার্তা, দাপ্তরিক স্মৃতিকোষ এবং অনলাইনে জলমহালের আবেদন প্রক্রিয়া’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভূমিমন্ত্রী এই কথা বলেন। এসময় সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভূমি সচিব মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান পিএএ এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খন্দকার মাহবুবুল হক।

সাইফুজ্জামান চৌধুরী আরও বলেন, পর্যায়ক্রমে সরকারের সব সায়রাত মহালের সম্পদ ব্যবস্থাপনা ডিজিটালাইজেশনের আওতায় চলে আসবে। ইতোমধ্যে ৭৬ শতাংশ সরকারি ভূ-সম্পদ, খাস জমি ও সায়রাত মহালের তপশিল ভূমি তথ্য ব্যাংকে আপলোড করা হয়েছে।

ভূমি তথ্য ব্যাংক চালু হয়ে গেলে সংশ্লিষ্ট প্রকৃত পেশাজীবী ও ব্যবসায়ীদের কাছে স্বচ্ছতা ও দক্ষতার সাথে সরকারি সম্পদ ইজারা দেওয়া সম্ভব হবে। এতে সরকারের রাজস্ব আয় বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে – ভূমিমন্ত্রী মত প্রকাশ করেন।

ভূমি সচিব বলেন ইতোমধ্যে অটোমেটেড চালান সিস্টেমের সাথে ইন্টিগ্রেডেট করে ভূ-সম্পদ ইজারা ব্যবস্থার জন্য অর্থ গ্রহণের সিস্টেম স্থাপন করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। তখন পেমেন্ট গ্রহণের জন্য ব্যাংক ড্রাফট গ্রহণের প্রয়োজন হবেনা। এরফলে ভবিষ্যতে ইজারাগ্রহীতাদের আর ব্যাংকে যেতে হবেনা।

ভূমি সচিব আরও জানান, প্রচলিত পদ্ধতিতে জলমহাল ইজারার আবেদনে অনেক সময় জলমহাল ইজারা প্রক্রিয়ায় মধ্যস্বত্বভোগী ও দালালদের নানা অপকৌশলের কারণে প্রকৃত মৎস্যজীবীগণ নানা ধরণের সমস্যার সম্মুখীন হতেন। এখন আর সেই সুযোগ নেই। ভূমি সচিব জানান পরীক্ষামূলক ভাবে অনলাইনে জলমহাল আবেদন শুরুর পর কোনো ধরণের অভিযোগ আসেনি।

মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খন্দকার মাহবুবুল হক বলেন অনলাইনে জলমহাল আবেদন ব্যবস্থার কারণে প্রকৃত মৎস্যজীবীরা প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে জলমহাল ইজারা গ্রহণ করতে পারবেন। তিনি আরও জানান ইতোমধ্যে সারা দেশে ১৪ লক্ষের অধিক মৎস্যজীবীর রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হয়েছে।

ভূমিমন্ত্রী আজকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভূমি মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ‘বার্তা’ অ্যাপের মাধ্যমে শুভেচ্ছা পাঠান। এছাড়া, একটি মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি অনুষ্ঠানস্থলে অনলাইনে জলমহাল আবেদন করেন। অনুষ্ঠানে ‘দাপ্তরিক স্মৃতি কোষ’-এর উপর একটি সচিত্র উপস্থাপনা করেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের  ভূমিসেবা ডিজিটাইজেশন মনিটরিং সেলের প্রধান ড. মো: জাহিদ হোসেন পনির, পিএএ।

অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ভূমিমন্ত্রী বলেন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের সম্পত্তির উত্তরাধিকারের ব্যাপারটি আইনের আওতায় নিয়ে আসলে তাঁরা আইনি কাঠামোর মধ্যে তারা তাদের সমস্যার প্রতিকার পেতে পারবেন।

ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান সোলেমান খান সহ ভূমি মন্ত্রণালয় ও এর আওতাভুক্ত দপ্তর-সংস্থা, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং  মৎস্য অধিদপ্তরের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

গত ১৫ নভেম্বর ২০২১ তারিখে জারিকরা এক পরিপত্রের মাধ্যমে ভূমি মন্ত্রণালয় উন্নয়ন প্রকল্পে মন্ত্রণালয় পর্যায়ে জলমহাল ইজারার আবেদন অনলাইনে দাখিলের সুবিধা পরীক্ষামূলকভাবে চালু করে।

এছাড়া, গত ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২ তারিখ একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সাধারণ আবেদনে জেলা ও উপজেলা থেকে জলমহাল ইজারা প্রাপ্তির লক্ষ্যে সরকারি জলমহাল ব্যবস্থাপনা নীতি, ২০০৯ অনুযায়ী নিবন্ধিত ও প্রকৃত মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি কর্তৃক অনলাইনে ইজারার আবেদন দাখিলের ব্যবস্থা প্রবর্তনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

land.gov.bd ভূমিসেবা কাঠামো থেকে অথবা সরাসরি jm.lams.gov.bd ওয়েব পোর্টালে গিয়ে জলমহাল ইজারার জন্য আবেদন দাখিল করা যাচ্ছে। এছাড়া, জলমহাল ইজারার আবেদন অনলাইনে দাখিল এবং ইজারা প্রক্রিয়ার বিস্তারিত উপর্যুক্ত ওয়েবপোর্টাল থেকেই জানা যাচ্ছে।

উল্লেখ্য, ‘উন্নয়ন প্রকল্পে’ ৬ বছরের জন্য ২০ একরের ঊর্ধ্বে সরকারি জলমহাল এবং বিশেষ ধরণের বিবিধ জলমহাল ইজারা আবেদন মন্ত্রণালয় পর্যায়ে ভূমিমন্ত্রীর সভাপতিত্বে ‘সরকারি জলমহাল ইজারা সংক্রান্ত কমিটি’র সভায় উপস্থাপন ও অনুমোদন হয়। ‘সাধারণ আবেদনে’ ৩ বছরের জন্য ২০ একরের ঊর্ধ্বে বদ্ধ সরকারি জলমহালের ইজারা আবেদন ‘জেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটি’র সভায় উপস্থাপন ও অনুমোদন হয়। ‘সাধারণ আবেদনে’ ৩ বছরের জন্য ২০ একর পর্যন্ত বদ্ধ জলমহালের ইজারা আবেদন ‘উপজেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটি’র সভায় উপস্থাপন ও অনুমোদন হয়।

দাপ্তরিক স্মৃতি কোষ হচ্ছে ভূমি সংশ্লিষ্ট সকলের অভিজ্ঞতার ডিজিটাল আর্কাইভ। কোনও অনুষ্ঠান বাস্তবায়নের অভিজ্ঞতা সংরক্ষণ, কেউ অবসরে/বদলি লেও তার অভিজ্ঞতার স্থায়ী সংরক্ষণ, এবং প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞান থেকে সংশ্লিষ্ট সকলের লাভবান হবার সুযোগ থাকবে এতে।

ভূমি মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তথ্য আদান প্রদানের অ্যাপ হচ্ছে ‘বার্তা’। তাৎক্ষণিক ভয়েস/টেক্সট আদান প্রদানের সুযোগ, ভূমি মন্ত্রণালয়ের দপ্তর সংস্থার মধ্যে আন্তঃযোগাযোগ, এবং তাৎক্ষনিক কেন্দ্রীয়/বিভাগভিত্তিক বা জেলাভিত্তিক প্রতিবেদন তৈরির সুযোগ আছে।

ফুটপাত দখল করায় ল্যাব এইড হাসপাতালকে ১ লক্ষ টাকা জরিমানা

Previous article

একটি গণমুখী জাতীয় জলবায়ু অভিযোজন পরিকল্পনা প্রণয়নের লক্ষ্যে কর্মশালা অনুষ্ঠিত

Next article

You may also like

Comments

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *