উদ্যোক্তার গল্পদেশি উদ্যোক্তা ডেজার্ট নিয়ে কাজ করে বড় স্বপ্নের পথে হাটছেন তাসমিয়াহ মৌ By নিজস্ব প্রতিবেদক December 12, 20222 ShareTweet 2 উদ্যোক্তা জার্নালের বিশেষ আয়োজন ‘উদ্যোক্তা গল্প’-র আজকের পর্বে, কথা হলো উদ্যোক্তা তাসমিয়াহ মৌ’র সঙ্গে। আজ শুনবো তার উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার গল্প। আমি তাসমিয়াহ মৌ। জন্ম চাঁদপুর সদরে একটি যৌথ পরিবারে। আমার বাবা ছিলেন চাঁদপুরের একজন নাম করা আইনজীবী। আমি এইচএসসি পর্যন্ত চাঁদপুরেই বড় হই। এরপরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করি এবং বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ করি। প্যান্ডেমিক মানুষের জীবনে অনেক পরিবর্তন নিয়ে আসে। আমি চোখের সামনে অনেক মানুষকে আয়হীন হতে দেখি। তখন আমার মনে হয় আসলে নিজের কিছু থাকা উচিত। আর নিজের কিছু থাকা মানে চারপাশের মানুষগুলোকে নিয়ে বেড়ে ওঠা। তখন চারপাশের মানুষের মাঝে অনলাইন ব্যবসায় আগ্রহ, অনলাইন ব্যবসায় হঠাৎ করে ঠকবাজ মানুষদের পাশ কাটিয়ে শক্তিশালী একদল সৎ মানুষ তাদের ভালো মানের পণ্য নিয়ে নিরবে সমাজের সেবা করতে দাঁড়িয়েছে, এটাই আমাকে কিছু করার সাহস জুগিয়েছে। আমি মূলত সিলেকটিভ ডেজার্ট আইটেম নিয়ে কাজ করছি। আমার প্রতিষ্ঠানের নাম – “ন মেয় ওনো” (Nā Mea Óno যার অর্থ Delicious Things)। আমি নিজ হাতে ডেজার্ট তৈরী করি ও ডোরস্টেপ ডেলিভারি দেই। শুরুটা ছিলো রেগুলার অনলাইন ক্রেতা হিসেবে। ওখান থেকে আমি হই বিক্রেতা। আমি মূলত কন্টেন্ট মার্কেটিং করি। প্রথম দিকের মূলধন ছিলো ১,৩৫,০০০ টাকা। আমার মতে একজন উদ্যোক্তা হতে সবার আগে দরকার ধৈর্য্য, নিজের প্রতি বিশ্বাস- “আমি পারবো”। এরপর লেগে থাকার মন মানসিকতা, সকলের সাথে সহযোগিতা ও নিজেকে প্রতি নিয়ত ডেভেলপমেন্টের ইচ্ছা। আমি আসলে হোম মেইড খাবার বানাই। এই মূহুর্তে কোনো কর্মী নেই। আমি ক্লাউড কিচেন নিয়ে কাজ করছি। সেফটির জন্য আমি একা কাজ করি। আমি একজন চাকরিজীবী মানুষ। পাশাপাশি উদ্যোগ নিয়ে কাজ করছি। কারণ ভবিষ্যতে আমি এই উদ্যোগটাকে আরো বড় করার স্বপ্ন দেখি। আমার উদ্যোগ এখনো স্টার্টআপ পর্যায়ে রয়েছে। আমি কার্যত চেষ্টা করছি ভালো মানের ইনগ্রেডিয়েন্টস দিয়ে ভালো স্বাদের মান সম্মত খাবার মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে। আমরা প্রায়ই বাইরের খাবার খাই, কিন্তু হলফ করে বলতে পারি সব খাবার টেস্টি হতে পারে তবে মান সম্মত খুব কম আছে। আমি এবং আমার প্রতিষ্ঠান খাবারের টেস্টের পাশাপাশি মানের স্ট্যান্ডার্ড মেনটেইনে সচেতন থাকি। বর্তমান বিশ্ব অনলাইন ব্যবসার দিকে ঝুঁকেছে। পুরুষ ও নারীরা পাশাপাশি থেকে যদি একটা সমাজকে বিভিন্ন পণ্য ও সেবা দিয়ে সাপোর্ট দেয় তাহলেই আমাদের দেশে উদ্যোগ ও উদ্যোক্তারা সঠিকভাবে এগিয়ে যাবে বলে আমি মনে করি। কিছু ক্ষেত্রে পুরুষ উদ্যোক্তাদের চেয়ে নারী উদ্যোক্তাদের সুযোগ অনেক অনেক বেশি, এটা আমি বিশ্বাস করি। এখনো পর্যন্ত দুটো প্রতিবন্ধকতা পেয়েছি। প্রথমত সঠিক মানের ডেলিভারি, ডেলিভারির সময় এবং পণ্যের নিরাপত্তা দুটো ম্যাচ করা চ্যালেঞ্জ। দ্বিতীয়ত যেহেতু একা কাজ করি সুতরাং সঠিক সময় মেনটেইন অন্যতম চ্যালেঞ্জ। আরও পড়ুনঃ নিজ দক্ষতায় উদ্যোগ শুরু করা কনিকা আজ সফল উদ্যোক্তা আলহামদুলিল্লাহ এখন পর্যন্ত গত নয় মাসে বেশ ভালো সেল হয়েছে। কাষ্টমারের রিভিউও দারুনভাবে পেয়েছি। মাঝে মাঝে মনে হয় এতো তাড়াতাড়ি এতো দারুন সব রিভিউ পাবো তা আমার আশাতীত। আমার অন্যতম পলিসি হলো কাষ্টমার যদি স্যাটিসফাইড না হয়, তবে আমি টাকা ব্যাক করে দেই। কারন খাবারের ব্যাপারগুলো সত্যিই সেনসেটিভ। সবার টেস্টবাড ও ফুড প্রেফারেন্স এক নয়। এখন পর্যন্ত আমি সরকারি-বেসরকারি কোনো সহযোগিতার জন্য আবেদন করিনি। তবে সুযোগ পেলে করবো ইনশাআল্লাহ। আমি মনে করি এখনো আমার প্রতিষ্টানের ব্র্যান্ডিং শক্তিশালীভাবে তৈরী হচ্ছে। কোনো অনুষ্ঠানে গেলে উদ্যোক্তারা আমার চেয়ে প্রতিষ্ঠানের নাম আগে মনে করে, এটা আমার জন্য অনেক বড় অর্জন। সবারই তার উদ্যোগকে বড় ব্যবসায় রুপান্তরের স্বপ্ন থাকে। আমার মূলত দুটো ইচ্ছা আছে। প্রথমত আমি ব্যবসার ফিজিক্যাল এক্সিসটেন্স দিতে চাই। দ্বিতীয়ত এই প্রতিষ্ঠানের লভ্যাংশের ৫০% আমি জনকল্যাণে ব্যয় করার ইচ্ছে রাখি। আমার ইচ্ছে আছে একদিন “ন মেয় ওনো” (Nā Mea Óno) একটা কর্পোরেশনে পরিণত হবে, যেখানে হাজারো মানুষের কাজের সংস্থান হবে। আর পাঁচ বছরের মধ্যে যেনো এই ভবিষ্যৎ প্রতিষ্ঠানের ভিত্তি তৈরী হয় তার জন্য আমি চেষ্টা করবো।
ই-ক্যাব ইয়ুথ ফোরামের হাত ধরে শান্ত মারিয়াম ইউনিভার্সিটিতে যাত্রা শুরু হতে যাচ্ছে ই-কমার্স ক্লাবের February 8, 20231561 views