পর্যটনদর্শনীয় স্থানভ্রমণ

দৃষ্টিনন্দন প্যারিস রোড!

0
paris road

প্যারিস রোডের কথা বললে সবার চোখের সামনেই ভেসে উঠবে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের কথা। তবে প্যারিস রোড দেখতে কষ্ট করে ফ্রান্স যেতে হবে না। বাংলাদেশেই পাবেন প্যারিস রোড। গগন শিরিষ গাছে আচ্ছাদিত এই রাস্তাটির অবস্থান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। ৫৩ বছরের পুরোনো এই প্যারিস রোড বহন করে চলেছে অনেক কালের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি।

এই রাস্তাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজারো শিক্ষার্থীর প্রেমের সূচনা হয়। আবার অনেকের প্রেম নিভে গেছে এই রোডেই। শিক্ষার্থীদের নানা আন্দোলন, সংগ্রামের সাথে জড়ানো স্মৃতির নাম ‘প্যারিস রোড’। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যের কথা বলে এই রোড।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে কিছুটা সামনে এগিয়ে গেলেই সামনে জোহা চত্বর ও প্রশাসন ভবন। তার বামপাশে সুবিস্তৃত প্যারিস রোড। যার দুইপাশে সুবিশাল গগন শিরীষ গাছ। দেখলে মনে হবে দুইপাশের গাছগুলো একে অপরকে জড়িয়ে ধরেছে। এই রোড দিয়ে হাঁটার সময় মনে হবে আপনি কোনো টানেল দিয়ে হাঁটছেন। আপনার মাথার উপর সুউচ্চ ছাদ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজলা ফটক থেকে শেরেবাংলা ফজলুল হক হল পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার ধরে বিস্তৃত রাস্তাটি প্যারিস রোড। বসন্তের ঝরা পাতার বৃষ্টি, বর্ষায় পাতা চুঁইয়ে পড়া ফোঁটা ফোঁটা জল কিংবা শীতের সকালে কুয়াশা মোড়ানো রাস্তাটি সত্যিই মন ছুঁয়ে যায়।

১৯৬৬ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য বৃদ্ধিকরণের লক্ষ্যে ক্যাম্পাসের কাজলা রোড থেকে শেরেবাংলা হল পর্যন্ত এই গগন শিরীষ গাছ লাগানো হয়। তৎকালীন উপাচার্য এম শামসুল হক ফিলিপাইন থেকে কিছু গাছ নিয়ে আসেন। তিনি এ গাছগুলো রোপণের দায়িত্ব দেন উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের তৎকালীন সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী মোহাম্মদ ইউনুসকে। তার হাত ধরেই লাগানো হয় গাছগুলো। তখন এটি ছিল নেহাৎ বৃক্ষরোপণের একটি উদ্যোগ।

রাস্তাটির সঙ্গে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের রাস্তাগুলোর অনেকটা মিল খুঁজে পাওয়া যায় বলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা একে প্যারিস রোড বলতে থাকেন। সেই থেকে রাস্তাটি প্যারিস রোড নামে পরিচিত হয়ে ওঠে।

সকাল-সন্ধ্যা সব সময় শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত থাকে প্যারিস রোড। মন চাইলেই প্রিয়জনকে নিয়ে এখানে কাটানো যায় সুমধুর সময়। রাস্তার একপাশে রয়েছে গোলাপ বাগান। আর অন্য পাশে হাঁটার জন্য ছোট ফুটপাত।

বিকেলে প্যারিস রোডের দৃশ্য সবচেয়ে সৌন্দর্য্য ছড়ায়। ডুবে যাওয়া সূর্যের রক্তিম আলো ভালো করে দেয় মন। আর সন্ধ্যায় লাল, নীল, সবুজ, হলুদ সোডিয়াম লাইটের আলোয় আলোকিত হয় পুকুরপাড়।

যেভাবে যাবেন

প্যারিস রোড দেখতে যেতে চাইলে বাসে বা ট্রেনে যেতে পারেন। ঢাকার কমলাপুর ও বিমানবন্দর রেলস্টেশন থেকে ট্রেনযোগে রাজশাহী যেতে পারেন। ঢাকার কল্যাণপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে রাজশাহীর উদ্দেশ্যে বিভিন্ন পরিবহনের বাস ছাড়ে। সেখান থেকে বাসেও পৌঁছাতে পারেন রাজশাহী। রাজশাহী নামার পর অটো বা রিকশাযোগে সরাসরি চলে যেতে পারেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে।

কোথায় থাকবেন

রাজশাহীতে থাকার ভালো ব্যবস্থা রয়েছে। মহানগরীর জিরো পয়েন্ট, রেলগেট, লক্ষ্মীপুর, সিএন্ডবি মোড়সহ বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে বিভিন্ন মানের আবাসিক হোটেল। এসব হোটেলে ৭০০-২৫০০ টাকায় রুম ভাড়া পাওয়া যাবে।

সুস্থ ও সুন্দর নখ রাখুন ঘরোয়া ৩ উপায়ে

Previous article

বাংলায় লেখা হলো লন্ডনের একটি রেল স্টেশনের নাম

Next article

You may also like

Comments

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *