উদ্যোক্তার গল্পদেশি উদ্যোক্তা

দেশীয় পণ্যের বিশাল সমারোহ গড়তে চান সিন্ধু

2
Untitled design 6

উদ্যোক্তা জার্নালের বিশেষ আয়োজন ‌‘উদ্যোক্তা গল্প’-র আজকের পর্বে, কথা হলো উদ্যোক্তা নীগার জাহান খন্দকার সিন্ধুর সঙ্গে। আজ শুনবো তার উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার গল্প।

আমি নীগার জাহান খন্দকার সিন্ধু। তবে সিন্ধু বলে ডাকলেই ভালো লাগে। জন্মেছি উত্তরবঙ্গের রংপুরে। বেড়ে ওঠাও সেখানে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুত্রে ঢাকায় আসা এবং এখানেই থেকে যাওয়া।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা শেষে অন্য সবার মতো করে আমিও চাকরি শুরু করেছিলাম ২০১৮ থেকে। ২০১৯ এর ফেব্রুয়ারীতে একটা এক্সিডেন্ট করি। এরপর ৩ মাস লিভ উইদাউট পে তে ছিলাম। তখন মনে হলো এমন কিছু করি যাতে ঘরে বসেও কাজ করা যায়।

বাবা মুক্তিযোদ্ধা হওয়াতে দেশ প্রেমের হাতে খড়ি হয়েছিলো সেই ছোট বেলাতেই। তাই কাজ করছি দেশীয় পণ্য নিয়ে। বেশীরভাগ কাজ নিজের ডিজাইনে করা হয়ে থাকে। তবে প্রায় সবগুলোতেই ক্রেতার ফরমায়েশ অনুযায়ী করার সুযোগ আছে। কাজের মাধ্যম দেশী কাপড় আর দেশী কাঠ।

শুরুটা ছিলো ২,৫০০ টাকা দিয়ে। এই টাকায় তিনটি শাড়ী, ২টা ব্লকের ডায়েস, ৩ টা তুলি আর কয়েকটা রঙ কিনে শুরু করি। শুরু থেকেই ভালো সাড়া পেয়েছিলাম।

নিজেই এখনো এতো বড় উদ্যোক্তা হয়ে উঠি নি যে উদ্যোক্তা হতে কি কি প্রয়োজন তা বলতে পারবো। চেষ্টা করছি উদ্যোক্তা হওয়ার। তবে এটা বলতে পারি আত্নবিশ্বাস আর লেগে থাকার বিকল্প নেই। বর্তমানে সবমিলিয়ে ৫ জন কাজ করছে ‘সিন্ধু’তে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ চুকিয়ে আমিও চাকরি শুরু করি। এরপর একটা এক্সিডেন্টে যখন সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকি তখনই মনে হলো কিছু একটা করি। সেই থেকেই শুরু। চাকরির পাশাপাশি উদ্যোক্তা জীবন এগিয়ে যাচ্ছে। ইচ্ছে আছে খুব জলদিই পুরোদমে উদ্যোগে সময় দিবো।

Untitled design 1 2
আমার উদ্যোগের নাম সিন্ধু, আমার নামেই আরকি। ‘সিন্ধু’র শুরু শাড়ী দিয়ে। ছোট থেকেই ধুয়ে শুকানোর পর মায়ের শাড়ী কিংবা দিদির ওড়না ভাঁজ করার সময় শাড়ী পরার চেষ্টা থেকে শাড়ীর প্রতি ভালোবাসার শুরু আমার। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে শাড়ী কেনার প্রবল ইচ্ছে থাকলেও দাম যখন বাঁধা হয়ে দাঁড়াতো তখন মনে হতো এমন কোনো দোকান নেই কেনো যেখানে কম বাজেটে নিত্য নতুন শাড়ী পাওয়া যাবে। সেই ভাবনা থেকেই স্টুডেন্ট বাজেটে থিম বেইজড শাড়ী তৈরি শুরু করি।

এই থিমে টাইপোগ্রাফি প্রাধান্য পায়। আর বাবা মুক্তিযোদ্ধা হওয়াতে দেশপ্রেমের হাতেখড়ি হয়েছিলো ছোট বেলাতেই। তাই মাধ্যম হচ্ছে দেশি কাপড়। সাথে ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী পাঞ্জাবি, গহনা আর কাঠের জিনিসপত্র দেয়ার চেষ্টা করছি।

নারী উদ্যোক্তাদের জন্য একদম শতভাগ নারী বান্ধব পরিবেশ আছে বলে আমার মনে হয় না। তবে হ্যাঁ সরকারী-বেসরকারী সংস্থাগুলো নানান ধরণের উদ্যোগ নিচ্ছে নারী উদ্যোক্তাদের উন্নয়নের জন্য।

আরও পড়ুনঃ বিশ্ব দরবারে দেশীয় পণ্য তুলে ধরতে চান সামিহা

যেহেতু নিজস্ব ডিজাইনের কাজ বেশি তাই প্রতিবন্ধকতার সুযোগ কম। তবে এখন অনলাইন প্ল্যাটফর্মের কারণে অনেক কিছুর কাচামাল বেশ সহজলভ্য আর তাই দাম নির্ধারনে বেশ বেগ পেতে হয়।

আলহামদুলিল্লাহ মাসিক সেল লাখ খানেকের মতো হয়। ‘সিন্ধু’র সেবায় কাস্টমার সন্তুষ্ট। এ পর্যন্ত ‘সিন্ধু’র ফেইসবুক পেইজে রিভিউ সংখ্যা প্রায় ৪০ এর মতো, আর অফলাইন রিভিউ তো আছেই।

এখন পর্যন্ত সরকারি বা বেসরকারি সহযোগিতা পাইনি। যেহেতু ‘সিন্ধু’র অনন্যতা সিন্ধুর টাইপোগ্রাফি ডিজাইন, সেই সুত্র ধরেই যদি বলি তাহলে ‘সিন্ধু’র অর্জন বলতে নিজের ৩৫ ধরনের টাইপোগ্রাফি ডিজাইন।

‘সিন্ধু’র ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা দেশীয় পণ্যের এক বিশাল সমাহার হবে ‘সিন্ধু’, যেখানে সব বাজেটের পণ্য পাওয়া যাবে। সেখানে পোশাক, গহনা কিংবা ব্যাগ সবই পাওয়া যাবে।

ক্লোজ আপে চেনা যায় এই প্রাণীকে?

Previous article

দেশ ও জনগণের কথা ভাবতে ব্যবসায়ীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

Next article

You may also like

2 Comments

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *