উদ্যোক্তার গল্পদেশি উদ্যোক্তা

দেশের প্রত্যেক সুপারশপে ‘সুপারফুড’ প্রতিষ্ঠিত করতে চান উদ্যোক্তা তাজনাহার হক

0
WhatsApp Image 2022 07 03 at 5.28.24 PM

উদ্যোক্তা জার্নালের বিশেষ আয়োজন ‌‘উদ্যোক্তা গল্প’-র আজকের পর্বে, নিজের উদ্যোগ নিয়ে কথা বলেছেন তাজনাহার হক। চলুন শুনি তার উদ্যোক্তা জীবনের গল্প।

আমি তাজনাহার হক। আমার জন্ম ফেনীতে হলেও পড়াশোনা এবং বেড়ে ওঠা চট্রগ্রামে। আমি চট্রগ্রাম কলেজে ইংরেজি ডিপার্টমেন্ট থেকে গ্র্যাজুয়েশন এবং পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেছি। বিবাহ সূত্রে ঢাকার বাসিন্দা হয়ে গেলাম। আমার ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিলো শিক্ষকতা দিয়ে, ৩ বছরের মতো এই পেশায় নিযুক্ত ছিলাম। কিন্তু পরপর ৩ জন সন্তান জন্মের পর এবং শাশুড়ি মারা যাওয়ার পর বাচ্চাদের কথা ভেবে শিক্ষকতা পেশা ছেড়ে আসি।

চাকরি ছাড়লেও সবসময় নিজের মধ্যে কিছু একটা করার তাগিদ অনুভব করতাম। সেই ভাবনা থেকেই নিজে উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখা। করোনাকালীন সময়ে ‘উই’ এর সদস্য হই। ‘উই’ এর উদ্যোক্তাদের দেখে নিজেরও কিছু করার ইচ্ছা জাগ্রত হয়। সেই চিন্তা থেকেই প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে Pick Organics (পিক অর্গানিকস) এর অনলাইন ভিত্তিক কার্যকলাপ শুরু করলাম এই বছরের শুরু থেকে।

আলহামদুলিল্লাহ এই অল্প সময়েই আমি অনেক ভালো সাড়া পেয়েছি। আমি মূলত সুপার ফুড নিয়ে কাজ করছি। মাখন, ঘি, মধু এবং চ্যাঁপা শুটকি নিয়ে আমি কাজ করছি। শুরুটা খুব দ্বিধা নিয়ে শুরু করলেও বর্তমানে আমি আমার উদ্যোগ নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখি। ইনশাআল্লাহ ধীরে ধীরে সেগুলো বাস্তবায়ন করবো।

আমার মূলধন বলতে ৩,০০০ টাকা দিয়ে আমি শুরু করলেও, আমি বলবো আমার কিছু করার একান্ত ইচ্ছাই আমার মূলধন। আমার মনে হয় একজন উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য এই ইচ্ছের জোর থাকাটা খুব জরুরি। তা না হলে একজন উদ্যোক্তার জীবনে নানা বাঁধার সম্মুখীন হলে, সামনে এগিয়ে যাওয়ার শক্তিটুকু হারিয়ে যাবে। তাই মনের জোর থাকাটা খুবই অনস্বীকার্য।

আমার নিজের উদ্যোগের সব কিছু আমি নিজেই করার চেস্টা করি। আমার একজন সহযোগী রয়েছি। তাই কর্মী বলতে আমরা এই দুইজনই আছি।

আলহামদুলিল্লাহ আমি আমার প্রতিষ্ঠান নিয়ে একটু একটু করে এগিয়ে যাচ্ছি। তবে আমার উদ্যোক্তা জীবনে ‘উই’ এর অবদান অনেক খানি। আমি এখান থেকেই অনেক কিছু শিখেছি এবং প্রতিনিয়ত শিখছি। ‘উই’ এর বিভিন্ন ট্রেনিং সেশনগুলোতে অনেক কিছু শেখা যায়। অন্যদের অভিজ্ঞতা এবং প্রতিবন্ধকতাগুলো দেখে নিজের পথ কে অনেক খানি মসৃন করা সহজ হয়। সামনে এগিয়ে যেতে গেলে প্রতিবন্ধকতা আসবেই। তবে নিজেকে আপডেট থাকতে হবে এবং মার্কেটের চাহিদা ও গতি সম্পর্কে জ্ঞান থাকাটা খুব জরুরি।

একজন নারী উদ্যোক্তার জন্যে ‘উই’ একটা বিশাল প্ল্যাটফর্ম। ‘উই’ শুধু উদ্যোক্তাই তৈরি করেনা বরঞ্চ একজন উদ্যোক্তা কে এগিয়ে যেতে অনেক সহায়তা করে থাকে। ক্ষুদ্র ঋণ এবং বিভিন্ন ধরনের প্রণোদনার মাধ্যমে উদ্যোক্তারা উৎসাহ পেয়ে থাকেন।

আলহামদুলিল্লাহ আমি আমার প্রতিষ্ঠানের সেল নিয়ে সন্তুষ্ট। আমাদের ক্রেতাদের থেকে আমরা পজিটিভ ফিডব্যাক পেয়েছি। আমাদের পন্যের ক্রেতা একবার যে হয়েছেন আলহামদুলিল্লাহ তারা বারবারই আমাদের ক্রেতা হয়েছেন। ইতোমধ্যে আমাদের পণ্য দেশ পেরিয়ে বিদেশেও ক্রেতা তৈরি করতে পেরেছে।

মানুষের সন্তুষ্টি আমার প্রতিষ্ঠানের অর্জন। ৫ বছর পর আমার প্রতিষ্ঠান কে আমি পুরো দেশের মানুষের কাছে একটি ব্র্যান্ড হিসেবে দাঁড় করাতে চাই এবং প্রত্যেকটি সুপারশপে আমার এই সুপারফুড প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।

হিজাব দিয়ে যাত্রা শুরু করেন মিতাশা রহমান খান

Previous article

ইয়েসবিডি ‘জিরো টু ওয়ান’ প্রজেক্টের প্রথম ব্যাচের ওরিয়েন্টেশন সম্পন্ন

Next article

You may also like

Comments

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *