খেলা

নারাইনের রেকর্ড হাফ সেঞ্চুরিতে ফাইনালে কুমিল্লা

0
nrn

মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীর বলটা টেনে লং অন দিয়ে ছক্কা মারলেন সুনীল নারাইন। সে শটেই গড়লেন নতুন রেকর্ড। মাত্র ১৩ বলে ৫০ এ পৌঁছে বিপিএলের ইতিহাসের দ্রুততম অর্ধশতকের মালিক হয়ে গেলেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের ব্যাটসম্যান। ভেঙে দেন আহমেদ শেহজাদের রেকর্ড। এর আগে ২০১২ সালে বরিশাল বার্নার্সের হয়ে দুরন্ত রাজশাহীর বিপক্ষে ১৬ বলে ফিফটি করেছিলেন পাকিস্তানি ক্রিকেটার। বাংলাদেশের মাটিতেও এটি দ্রুততম অর্ধশতকের রেকর্ড।

গতকাল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে মিরপুরে বিপিএলের দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে এ ঝড় তুলেছেন নারাইন। স্বীকৃত টি-টোয়েন্টির ইতিহাসেই এটি যৌথভাবে দ্বিতীয় দ্রুততম অর্ধশতক। আর তাতে তৃতীয়বারের মতো বিপিএলের ফাইনালে উঠল কুমিল্লা। আগের দুবারই শিরোপার স্বাদ পেয়েছে দলটি। গতকাল মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে ৭ উইকেটে জিতেছে ইমরুল কায়সের দল। ১৪৯ রানের লক্ষ্য ৩ উইকেট হারিয়ে ছুঁয়ে ফেলেছে ৪৩ বল বাকি থাকতেই। ১৬ বলে ছয় ছক্কা ও পাঁচ চারে ৫৭ রানের খুনে ইনিংসে চট্টগ্রামকে লড়াইও করতে দেননি নারাইন। তার ৫৬ রানই আসে বাউন্ডারি থেকে।

তবে ১৪৮ রান তাড়ায় কুমিল্লার শুরুটা হয়েছিলো বেশ বাজে। প্রথম বলেই শরীফুল ইসলামের বলে ক্যাচ তোলেন লিটন দাস। তবে সে ওভারের তৃতীয় বলে ছয় মেরে ঝড়টা শুরু করেন ইনিংস উদ্বোধন করতে নামা নারাইন। সে ওভারে শরীফুলকে মারেন আরও ২টি চার। পরের ওভারে আসেন মেহেদী হাসান মিরাজ। নারাইনের তোপে তো এক সময় মিরাজ যেনো বল ফেলার জায়গাই খুঁজে পাচ্ছিল না। প্রথম বলে একটা সিঙ্গেল নিয়ে নারাইনকে স্ট্রাইক দেন ইমরুল কায়েস। পরের ৪ বলে ৩টি ছয়ের সঙ্গে নারাইন মারেন ১টি চার। লং অফ আর কাভার দিয়ে নারাইন মারেন বাউন্ডারিগুলো।

নারাইনের দেখানো পথ ধরেই যেন ঝড় তোলেন মঈন আলী। বাঁহাতি এই ইংলিশ অলরাউন্ডার ১৩ বলে করেন ৩০ রান। এর আগে বোলিংয়ে ২০ রানে নেন ৩ উইকেট। প্রথম ২ ওভারে ৪ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেওয়ার পর শেষ ওভারে তিনি ১৬ রান দিয়ে বসেন। তাতে বোলিং ফিগারটা হয়ে যায় একটু ‘খরুচে’ ৩-১-২০-৩। ব্যাটিংয়ে ভালো করা মিরাজের পরের অংশ একদমই ভালো কাটেনি। বোলিংয়ে এক ওভারেই দেন ২৩ রান। পরে ছাড়েন একটি ক্যাচ।

প্রথম ২ ওভারেই কুমিল্লা তুলে ফেলে ৪৩ রান। বিপিএলে প্রথম ২ ওভারে এটি কোনো দলের সর্বোচ্চ স্কোর। পরের ২ ওভারে অবশ্য নারাইন স্ট্রাইকই পাননি। ইমরুল ১২ বল খেলেন একাই। তবে পঞ্চম ওভারে স্ট্রাইক পেয়েই আফিফকে প্রথম ২ বলে চার ও ছয় মারেন এই ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার। পঞ্চম ওভার শেষে নারাইনের রান ছিলো ১২ বলে ৪৭। পাওয়ারপ্লে’র শেষ ওভারে স্ট্রাইক পান, প্রথম বলেই মৃত্যুঞ্জয়কে লং অন দিয়ে ছয় মেরে অর্ধশতক পূর্ণ হয় তার। এক বল পর এই তরুন পেসারকে আরেকটি চার মারার পর অবশ্য ক্যাচ তুলে ফিরেছেন নারাইন। এর আগে এই বাঁহাতি করেছেন ১৬ বলে ৫৭ রান, ৫টি চারের সঙ্গে মেরেছেন ৬টি ছয়।

নারাইন ব্যাটিং করেছেন ৩৫৬.২৫ স্ট্রাইক রেটে। বিপিএলে কমপক্ষে ৫০ রান করেছেন, এমন ইনিংসের মধ্যেও এটিই সর্বোচ্চ স্ট্রাইক রেট। এর আগের রেকর্ডটি ছিলো থিসারা পেরেরার। ২০১৯ সালে চিটাগং ভাইকিংসের বিপক্ষে ২৬ বলে ৭৪ রানের ইনিংসে কুমিল্লার হয়েই খেলা পেরেরার স্ট্রাইক রেট ছিলো ২৮৪.৬১।

নারাইনের রেকর্ডের দিনে রেকর্ড গড়েছে কুমিল্লাও। পাওয়ারপ্লেতে ২ উইকেটে ৮৪ রান তুলে ফেলেছে তারা। বিপিএলের ইতিহাসে পাওয়ারপ্লেতে সর্বোচ্চ স্কোর এটিই। এর আগে ২০১৯ সালে রংপুর রেঞ্জার্সের বিপক্ষে খুলনা টাইগার্স তুলেছিল ৮৩ রান। এবার আরেকটি ইতিহাসের সামনে দাঁড়িয়ে ইমরুলের দল। আগামীকাল ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ সাকিব আল হাসানের ফরচুন বরিশাল। যদি তাদের হারিয়ে শিরোপা জিততে পারে কুমিল্লা, তবে তিন ফাইনালে উঠে তিনবারই শিরোপার স্বাদ পাওয়া প্রথম দল হবে দুবারের চ্যাম্পিয়নরা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর :

চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স : ১৪৮/১০, ১৯.১ ওভার (মিরাজ ৪৪, আকবর ৩৩, মঈন ৩/২০)।

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স : ১৪৯/৩, ১২.৫ ওভার (নারাইন ৫৭, মঈন ৩০*, হাওয়েল ১/১১)।

ফল : কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ৭ উইকেটে জয়ী।

ম্যাচ সেরা : সুনীল নারাইন (কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স)।

মান্নাকে হারানোর ১৪ বছর!

Previous article

ইন্টার মিলানকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালের পথে লিভারপুল

Next article

You may also like

Comments

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More in খেলা