উদ্যোক্তার গল্পদেশি উদ্যোক্তা

নিজস্ব গার্মেন্টস কারখানা করতে চান উদ্যোক্তা সৈয়দ মোঃ হোসাইন

0
Cherry Blossom Watercolor Facebook Cover 12

উদ্যোক্তা জার্নালের বিশেষ আয়োজন ‌‘উদ্যোক্তা গল্প’-র আজকের পর্বে, কথা হলো উদ্যোক্তা সৈয়দ মোঃ হোসাইনের সঙ্গে। আজ শুনবো তার উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার গল্প।

আমি সৈয়দ মোঃ হোসাইন। জন্ম ও বেড়ে ওঠা রসমালাই ও খাদি/খদ্দর এর জন্য বিখ্যাত ঐতিহ্যবাহী কুমিল্লা জেলায়। চৌদ্দগ্রাম উপজেলার চিওড়া ইউনিয়নের সাকছি সৈয়দ বাড়ি আমার গ্ৰাম। ঢাকার একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং ৭ম সেমিস্টারে অধ্যয়নরত (৩য় বর্ষ)।

ছোটবেলা থেকেই স্বাধীনভাবে কিছু করার ইচ্ছে ছিলো, বিজনেস এর প্রতি ঝোঁক ছিলো বেশি। যা কিছুই করি না কেনো, আমার একটা নিজস্ব বিজনেস থাকবে এমনটাই আমার সংকল্প ছিলো।

আমার প্রতিষ্ঠানের নাম “Roshida Fashion” (রশিদা ফ্যাশন), যেটি আমার মায়ের নামে। আমার মূলত পাইকারি বিজনেস। তবে কিছু কিছু প্রোডাক্ট পাইকারি ও খুচরা সেল করা হয়। কাজ করছি এক্সপোর্ট কোয়ালিটি গার্মেন্টস আইটেম নিয়ে। আমার সিগনেচার পণ্য পাঞ্জাবি। বর্তমান চাহিদার শীর্ষে আড়ং কটন যা হ্যান্ড পেইন্ট, স্ক্রিন প্রিন্ট, ব্লক প্রিন্ট, বাটিক প্রিন্ট ও সুঁই-সুতা ইত্যাদি কাজের উপযোগী। ২০২০ সালের ১ নভেম্বর আমার উদ্যোগ শুরু মাত্র ২,৫০০ টাকা মূলধন নিয়ে।

উদ্যোগের শুরুতে অনেক প্রতিবন্ধকতা ছিলো, সে কথা বলতে গেলে শেষ হবে না। তবে আমি তাদের কথায় পাত্তা দেইনি, ছিলাম নিজ উদ্যোগে অটল। প্রতিবেশীরা আমার উদ্যোগ বন্ধ করার জন্য সরাসরি বাধা দেয়, আমি ছিলাম তখন নিশ্চুপ। আমার উদ্যোগের জন্য নাকি তাদের মানহানি হচ্ছে! এক পর্যায়ে আমার বাবাকে ফোর্স করে যাতে আমার উদ্যোগ বন্ধ করে দেই। তবে “বাবা” বলে আব্বু আমি অনলাইন বিজনেস এইসব কিছু বুঝিনা, তুমি পড়াশোনা ঠিক রেখে করতে পারলে করো আমার কোনো আপত্তি নেই। “মা” ও একই কথা বলেন। আমার দুই বোন আমাকে খুব সাপোর্ট করে। এখন আমার সমালোচকদের মুখে তালা!

Grey Brown Simple Photo Collage 6
আপনার সার্ভিসের মান ভালো হলে অটো সেল আসতে থাকবেই। আলহামদুলিল্লাহ আমার একদিনের সর্বোচ্চ সেল প্রায় ২ লক্ষ টাকা। আমার সার্ভিসে কাস্টমার সম্পূর্ণ সন্তুষ্ট। এটা আমি উপলব্ধি করতে পেরেছি, কারণ আমার রিপিট ও রেগুলার কাস্টমারই বেশি।

আমার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হলো আমার নিজস্ব গার্মেন্টস কারখানা/বায়িং হাউস থাকবে। আমার পোশাক বিশ্বদরবারে রপ্তানি হবে, ইতিমধ্যে রপ্তানি করার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে আলহামদুলিল্লাহ। এখন পর্যন্ত সরকারি বা বেসরকারি কোনো সহযোগিতা পাইনি।

আরও পড়ুনঃ কাজ প্রেমী কাকন আক্তার সায়মা এখন উদ্যোক্তা

একজন উদ্যোক্তাকে কোনো ভুল চোখে পড়া মাত্রই, সেই ভুল সমাধান করার মানসিকতা থাকতে হবে। ভয় নিয়ে আপনি কখনো একজন সফল উদ্যোক্তা হতে পারবেন না। একজন উদ্যোক্তা হবার যাত্রায় আপনি যদি ভয় নিয়ে চলতে থাকেন, তাহলে আপনি কখনো এগিয়ে যেতে পারবেন না। আপনাকে ভয় দূর করে, যেকোনো সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নেয়ার মানসিকতা রাখতে হবে।

আমাদের দেশের প্রেক্ষাপট নারী উদ্যোক্তাদের জন্য অনলাইন ভিত্তিক উদ্যোগ সবচেয়ে বেশি উপযোগী বলে আমি মনে করি। কেননা এতে করে তাদের সংসার ও কর্মজীবন দুটোই খুব সহজে চালিয়ে নিতে পারবেন।

আমাদের দেশে বেশিরভাগ শিক্ষার্থী পড়াশোনা শেষে চাকরির পেছনে ছুটে অযথা সময় নষ্ট করে, শুধু চাকরিই কেনো করতে হবে? বরং আমি মনে করি, পড়াশোনা অবস্থায়ই প্রত্যেক শিক্ষার্থীর উচিত নিজ উদ্যোগে কিছু করার চেষ্টা করা। চাকরি করবো না বরং চাকরি দিবো, নিজের মধ্যে এই মানসিকতা তৈরি করতে হবে। এতে করে নতুন নতুন কর্মসংস্থান গড়ে উঠেবে। দেশ থেকে দূর হবে অভিশপ্ত বেকার নামক উপাধি। আমাদের মাতৃভূমি হবে উন্নয়নশীল দেশ।

বহ্নিমান শোকের ১৫ আগস্ট -আব্দুর রহমান

Previous article

বাংলাদেশী শ্রমিক নেবে দক্ষিণ কোরিয়া

Next article

You may also like

Comments

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *