উদ্যোক্তার গল্পদেশি উদ্যোক্তা নিজের উদ্যোগকে ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চান আফরোজা আলম অধরা By নিজস্ব প্রতিবেদক January 31, 20220 ShareTweet 0 উদ্যোক্তা জার্নালের বিশেষ আয়োজন ‘উদ্যোক্তা গল্প’-র আজকের পর্বে, অনলাইনে নিজের উদ্যোগ নিয়ে আলাপ করেছেন আফরোজা আলম অধরা। আজ শুনবো তার উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার গল্প। আমি আফরোজা আলম অধরা। পাবনার মেয়ে, ছোট্ট একটি গ্রামে আমার বেড়ে ওঠা। বাবা মায়ের চার সন্তানের মধ্যে আমি তৃতীয়। জন্ম ১৯৮৯ সালে ৮ই আগস্ট। আমি ২০০৪ সালে এস.এস.সি কমপ্লিট করি। তারপর পাবনা সিটি কলেজ থেকে ২০০৬ সালে এইচ.এস.সি সম্পন্ন করি। বিয়ের পর পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ থেকে অর্নাস শেষ করি। ছোট বেলা থেকেই যেকোনো কাজ দেখলে আমার সেটা করার প্রতি আগ্রহ অনেক বেশি ছিল। পড়াশোনার পাশাপাশি আমি হাতের কাজ করতে খুব ভালোবাসতাম। তখন থেকেই নিজের একটা পরিচয় গড়ে তুলবো এটা মনের মধ্যে লালন করেছি বহুদিন থেকে। সবসময় মনে হতো কখনো চাকরি করবোনা, নিজে কিছু করবো। আজ সেই লালিত স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে নিজেকে তৈরি করে চলেছি অবিরত। আমি কাজ করছি বিভিন্ন ধরনের শাড়ি, থ্রিপিস, বেডশিট ও হিজাব নিয়ে। ইচ্ছা আছে সামনে জুয়েলারী নিয়ে কাজ করার। আমি মূলত অনলাইন-অফলাইনের মাধ্যমে কাজ করছি। তবে অনলাইন সার্ভিসই বেশি দিয়ে থাকি। সারাদেশে কুরিয়ারের মাধ্যমে আমি হোম ডেলিভারি দিয়ে থাকি। ২০২০ সালে যখন পুরো বিশ্বে করোনা মহামারি আকার ধারণ করেছে। মেয়েদের স্কুল কোচিং বন্ধ থাকায় ঘরে বসে ছিলাম, তখনই আমার মনে হলো কিছু একটা করা দরকার। আমার নিজের জমানো সামান্য কিছু টাকা নিয়ে প্রথম উদ্যোগ শুরু করি। একজন উদ্যোক্তা হতে হলে অনেক বেশি ধৈর্য্য, ইচ্ছা শক্তি ও মনোবল থাকতে হবে। আর বর্তমানে বেশিরভাগ উদ্যোক্তাই যেহেতু কাজ করছে অনলাইন ভিত্তিক। তাই ই-কমার্স সম্পর্কে বেসিক জ্ঞান বা ধারণা থাকা দরকার। বর্তমানে আমার প্রতিষ্ঠানে কোনো কর্মী নেই। আমি নিজেই সব কাজ করি । মাঝে মাঝে আমার স্বামী সাহায্য করে। আমি ছোট বেলা থেকে কোনোদিন ভাবিনি চাকরি করবো। আমার মনে হতো একজন মেয়ে সারাদিন বাইরে কাজ করে এসে তাকেই ঘরের কাজ করা, ছেলে মেয়ের পড়াশোনা সব কিছু দেখতে হবে। তখন হয়তো সংসারের শান্তি নষ্ট হতে পারে । তাই আমি সবসময় ভাবতাম সংসার সন্তান সামলিয়ে ঘরে বসে কিছু করতে পারলে করবো। ইনশাআল্লাহ আমি সেটা আজ করতে পারছি। আমার প্রতিষ্ঠানের নাম মডার্ণ ফ্যাশন। আমি মূলত কাজ করছি বিভিন্ন ধরনের শাড়ি, থ্রিপিস, বেডশিট এবং হিজাব নিয়ে। আমি বলতে চাই আমি আমার প্রতিষ্ঠান থেকে সবসময় ভালো মানের কোয়ালিটিফুল পণ্য ক্রেতাদের দিয়ে আসছি। এভাবেই সততার সাথে সামনে এগিয়ে যেতে চাই। বর্তমান প্রেক্ষাপটে নারীদের জন্য অনেক বড় একটা সুযোগ উদ্যোক্তা হওয়া। এখন নারীরা ঘরে বসে নিজের উদ্যোগ নিয়ে নিজেকে সাবলম্বী করে গড়ে তুলছে। আলহামদুলিল্লাহ এখনো পর্যন্ত তেমন কোনো প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়নি। সবসময় পরিবারের সহযোগিতা পেয়েছি। আলহামদুলিল্লাহ আমার ১ বছরের উদ্যোক্তা জীবনে খুব ভালো সাড়া পেয়েছি। আর আমার প্রতিষ্ঠানের পণ্য নিয়ে কাস্টমার অনেক খুশি । তার জন্য বারবার রিপিট কাস্টমার পেয়েছি আলহামদুলিল্লাহ। এখন পর্যন্ত কোনো সরকারি ও বেসরকারি সহযোগিতা পাইনি। আলহামদুলিল্লাহ আমার এক বছরের উদ্যোক্তা জীবনের প্রথম প্রাপ্তি মাননীয় বানিজ্য মন্ত্রী টিপু মুন্সি’র হাত থেকে লাখপতি ‘সম্মননা নেয়া।’ আমার প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে পরিকল্পনা হলো আমার বিজনেসটা যেহেতু অনলাইন ভিত্তিক, তাই আমি আমার একটা নিজস্ব শোরুম করতে চাই। যেখানে কমপক্ষে দুইজন হলেও আমি অসহায় নারীদের কাজের ব্যবস্থা করে দিতে পারি। আমি আমার উদ্যোগকে একটা ব্র্যান্ড হিসেবে তৈরি করতে চাই। আগামী ৫ বছর আমি নিজেকে একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে দেখতে চাই। এই স্বপ্ন নিয়ে আমি সামনে এগিয়ে যেতে চাই। আমরা নারী আমরাই পারি। নারীরা চাইলে নিজের সংসার সন্তান সামলিয়ে সমাজে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে। কথায় আছে পরিশ্রম সফলতার চাবিকাঠি। পরিশ্রম করলে সফলতা আসবেই ইনশাআল্লাহ।
ই-ক্যাব ইয়ুথ ফোরামের হাত ধরে শান্ত মারিয়াম ইউনিভার্সিটিতে যাত্রা শুরু হতে যাচ্ছে ই-কমার্স ক্লাবের February 8, 20231560 views