উদ্যোক্তার গল্পদেশি উদ্যোক্তা

নেতিবাচক মন্তব্যকে পেছনে ফেলে সফল উদ্যোক্তা আজমীর সুলতানা

2
azmr

উদ্যোক্তা জার্নালের বিশেষ আয়োজন ‌‘উদ্যোক্তা গল্প’-র আজকের পর্বে, নিজের উদ্যোগ নিয়ে কথা বলেছেন আজমীর সুলতানা। চলুন শুনি তার উদ্যোক্তা জীবনের গল্প।

আমি আজমীর সুলতানা। জন্ম ১৯৯৩ সালে, আর বেড়ে ওঠা চাঁদপুর। প্রথম দিকে নিজে কিছু করার কোনো উৎসাহ পাই নাই। এখন আস্তে আস্তে সামনে এগোচ্ছি। আগের থেকে এখন অনেক ভালো অনুপ্রেরণা পাই।

আমি কাজ করছি কাঠের গহনা, মেটালের গহনা, ব্রাইডাল গহনা ও মেয়েদের পোশাক নিয়ে। আমার প্রতিষ্ঠানের নাম হলো ‘ইউনিক অনলাইন স্টোর’। আলহামদুলিল্লাহ সার্ভিস এখন পর্যন্ত ভালো দিচ্ছি এবং আগামীতেও দিবো। এখন বেশিরভাগ ক্রেতা হোম ডেলিভারি নিয়ে থাকে। আবার অনেকে কুরিয়ারে। তো তাদের পছন্দমতো আমি সার্ভিস দিয়ে থাকি।

শুরুটা প্রথমে অনেকের ভালো থাকলেও আমার ছিলোনা। সবসময় কিছু করার চিন্তা ছিলো কিন্তু সাহস ছিলোনা। ৪,০০০ টাকা মূলধন দিয়ে শুরু করেছিলাম। সেটা দিয়েই আমার উদ্যোক্তা জীবনে পা দেয়া।

একজন উদ্যোক্তা হতে অবশ্যই সততা, ধৈর্য্য, কাজের প্রতি দক্ষতা ও যত্নশীল হতে হবে। এছাড়াও ঝুঁকি গ্রহণ করার মন মানসিকতা থাকতে হবে।

বর্তমানে আমার প্রতিষ্ঠানে কোনো কর্মী নেই। আমাকে নিজের হাতে সবকিছু একা করতে হয়। ইনশাআল্লাহ কর্ম পরিধি বাড়ার সাথে সাথে আমার এখানেও অন্যের কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে।

prdcts

আমি ম্যানেজমেন্ট নিয়ে পড়ালেখা সম্পন্ন করি। পড়ালেখা শেষে আমাদের দেশে বেশিরভাগ মানুষ চাকরি খুঁজতে ব্যস্ত। এই দিক দিয়ে আমি অন্যরকম। আমার পড়াশোনাকালীন অবস্থায় আমি ২ জায়গায় চাকরির জন্য আবেদন করেছিলাম। কিন্তু পড়ে আর ইন্টারভিউ দেই নাই ইচ্ছে করে। কেনো জানি চাকরি থেকে নিজে কিছু করার আগ্রহ কাজ করতো বেশি। তারপর থেকেই সাহস নিয়ে উদ্যোক্তা জীবনে প্রবেশ করা।

আমার প্রতিষ্ঠান ছোট হলেও আমার এই প্রতিষ্ঠানকে আমি সবচেয়ে বড় করে দেখি। কারণ ছোট থেকেই ধীরে ধীরে বড় হওয়া। এখন বেশিরভাগ পরিচিত বা অপরিচিত অনেকে পণ্যের জন্য বিশ্বাসের সহিত নক দিয়ে থাকে। যেটা আমার খুবই ভালো লাগে।

আমাদের দেশে বেশিরভাগ নারী গৃহিনী। তাছাড়া কেউ চাকরি করে আবার কেউ পড়াশোনা। আমি তাদের বলবো জীবনে কিছু করতে হলে সামনে এগোতে হয়। যারা গৃহিনী, পড়াশোনা করেন তারা যে অবসর সময়টুকু পাবেন নিজে আলাদা কিছু করার জন্য চেষ্টা করুন। নিজেকে সবার সামনে উপস্থাপন করুন। নিজের পণ্যের মাধ্যমে পরিচিতি তুলে ধরুন।

প্রচুর অভিজ্ঞতা ছিলো। আমি পারবো কিনা, বিক্রি হবে কিনা, কে নিবে, এসব কে পড়বে, কিছু হবে না, শুধু শুধু সময় নষ্ট করতেছি , আমার দ্বারা কিছুই হবে না। এমন অনেক কিছু শোনার পরেও আলহামদুলিল্লাহ পেছনে তাকাইনি। আজকে অনেককেই বলতে শুনি তুমি পারবে। তোমার দ্বারা সম্ভব। এখন বাহবা পাই নিজের কাজের জন্য।

আলহামদুলিল্লাহ সেল ভালো হচ্ছে। আমার পণ্যের ব্যাপারে কাস্টমাররা অনেক বেশি সন্তুষ্ট। আমি নিজে চেষ্টা করি কাস্টমাররা যাতে পণ্য পেয়ে অনেক সন্তুষ্ট থাকে।

আরও পড়ুনঃ মানুষের কল্যাণে দেশীয় পণ্য নিয়ে কাজ করছেন জনি

এখনো সরকারি বা বেসরকারি কোনো সহযোগিতার জন্য জন্য আমি চেষ্টা করি নাই।

নিজের উদ্যোগের মাধ্যমে সবার মাঝে পরিচিতি তুলে ধরতে পেরেছি। আর সবচেয়ে বড় কথা হলো আমি একটা উদ্যোক্তা প্ল্যাটফর্ম এন্টারপ্রেনিউর এন্ড ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম (ইপি) এর সাথে জড়িত আছি। এর মাধ্যমে আমি আরো সুযোগ পাচ্ছি নিজেকে এবং নিজের পণ্যকে সবার মাঝে তুলে ধরতে। ইপি এমন একটা প্ল্যাটফর্ম যার মাধ্যমে আপনি আপনাকে সুন্দর এবং সাবলীলভাবে নিজেকে উপস্থাপন করতে পারবেন, নিজের প্রতিষ্ঠানকে হাইলাইট করতে পারবেন। তাছাড়া আমি ইপির ধানমন্ডি জোন থেকে কাজ করছি।

ভবিষ্যত পরিকল্পনা বলতে আমার এই প্রতিষ্ঠানকে আরো সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। যেটার লক্ষে আমি প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি এবং সবসময় করে থাকি।

অনেক স্বপ্নই দেখি আমার উদ্যোগ নিয়ে। যেটা আমার মতো অনেক উদ্যোক্তারা দেখে। আসলে স্বপ্ন দেখলেই তো হবে না সেটা বাস্তবে রূপ দিতে হবে। আগামী ৫ বছর পর নিজেকে আরেকটু ভালো অবস্থানে দেখতে চাই।

ফাইনাল খেলার আগে বিএনপি দেখতে পাবে টিমে ১১জন নাই : তথ্যমন্ত্রী

Previous article

দেশের উন্নয়নে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করুন: প্রধানমন্ত্রী

Next article

You may also like