জীবনযাপন

পরিবারের সবচেয়ে কাছের কেউ মারা গেলে কাটতে হয় আঙুল

0
dani tribe

ইন্দোনেশিয়ার জয়াউইজায়া প্রদেশে বাস দানি উপজাতির। মোমের নিচে যেমন অন্ধকার, ঠিক তেমনই এই জাতির ইতিহাস। সেখানে আধুনিকতা পেরিয়ে অত্যাধুনিকের পথে এগিয়েছে সভ্যতা। সেখানে আজও তারা মেনে চলেন তাদের প্রাচীন রীতিনীতি।

কিছু রীতি তো এতো অদ্ভুত এবং বীভৎস যা শুনলে রীতিমত শরীরে কাঁটা দিয়ে ওঠে।

এই প্রাচীন উপজাতির মধ্যে আজও বীভৎস এক রীতি প্রচলিত আছে। পরিবারের কেউ মারা গেলে ঘরের নারী সদস্যদের একটি আঙুল কেটে ফেলতে হয়। এটা তারা করেন মূলত প্রিয়জনের স্মৃতির উদ্দেশে। এটি শুধু নারীরাই করেন।

তাদের এই উদ্ভট প্রথার নাম ইকিপালিন। প্রথা অনুযায়ী, পরিবারের কোনো পুরুষ সদস্য মারা গেলে তার প্রিয়জন হাতের একটি আঙুল কেটে ফেলেন। তবে পুরো আঙুল কাটেন না তারা। শুধু আঙুলের উপরের অংশ কেটে ফেলেন পরিবারের যে কোনো একজন নারী। তাকে হতে হবে পরিবারের সবচেয়ে কাছের কেউ।

দানি উপজাতির লোকেরা বিশ্বাস করেন, যথাযথভাবে ইকিপালিন পালন করলে মৃত ব্যক্তির আত্মা শান্তি পায়। আঙুলের মাথা কেটে ফেলার পর যখন গলগল করে রক্ত বেরিয়ে আসে, তখন সেই রক্তপাত বন্ধ করার জন্য আছে আরও নিষ্ঠুর পন্থা। আঙুলের ডগা আগুনের কাছে এনে পুড়িয়ে দেওয়া

১৯৭০ এর দশকের গোড়ার দিকে ইন্দোনেশিয়ার সরকার দানি জাতিকে সভ্যতার মূল স্রোতে আনতে চেয়েছিল। নগ্ন এই জাতির জন্য শুরু করেছিল ‘অপারেশন কোটেকা’। এটি ছিল তাদের দানি পুরুষের নিম্নাঙ্গে ছোট একটি কাপড় দিয়ে আবৃত করার ব্যর্থ প্রয়াশ।

তবে কাপড় ব্যবহার না করলেও দানিরা শুকনা লাউয়ের খোসা দিয়ে তৈরি এক ধরনের খোলস ব্যবহার করেন নিম্নাঙ্গে।

এই জাতির বেশিরভাগ নারী বিশেষ করে যারা বয়স্ক তাদের হাতের কয়েকটি আঙুল কাটা। নিজেদের সংস্কৃতি ও আইনে চলে তারা। তবে তাদের মধ্যে অনেকের ছিল কান কাটা। এটিও নাকি ইকিপালিনের অংশ। তারা সবসময় মুখে ছাই এবং কাদামাটির প্রলেপ দিয়ে রাখে। এখনো শিকার করেই আসে খাদ্যের যোগান।

নিষ্ঠুর এই প্রথা বন্ধ করতে ইন্দোনেশিয়ার সরকার অনেক পদক্ষেপ নিয়েছে। আগের চেয়ে ইকিপালিনের দাপট অনেক কমেছে। তবে আজও তা নির্মূল হয়নি। দানিরা এখনো মেনে চলেন পূর্ব পুরুষের রেখে যাওয়া নিষ্ঠুর এই প্রথা। তবে জাতি হিসেবে দানিরা খুবই সহজ সরল। নিজেদের মধ্যে ঐক্য রেখেই চলেন তারা।

আরও পড়ুনঃ জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা গভীর মহাকাশে আলোর সবচেয়ে উজ্জ্বল ঝলকানি দেখে বিস্মিত

চা না হলে চলতই না রানি এলিজাবেথের

Previous article

২৪ ঘণ্টায় কয়টি রেস্তোরাঁর খাওয়া সম্ভব?

Next article

You may also like

Comments

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *