জাতীয়

পানিতে ডোবা প্রতিরোধে ইউনিসেফ’র সচেতনতামূলক কর্মশালা

1
cvr

শিশু ও কিশোরদের মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ পানিতে ডুবে যাওয়া, যা বর্তমানে একটি অবহেলিত জাতীয় সংকট হিসেবে বলছে শিশুদের নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান ইউনিসেফ। বাংলাদেশকে একটি নিরাপদ এবং স্বাস্থ্যসম্মত ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যাবে উল্লেখ করে প্রতিষ্ঠানের মুখপাত্র ড. এলিসা কল্পনা বলেন সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় পানিতে ডোবা প্রতিরোধকে একটি জাতীয় অগ্রাধিকার হিসেবে স্থাপন করতে কাজ করে যাবে ।

মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) ঢাকার গুলশান-২ এর একটি হোটেলে পানিতে ডোবা প্রতিরোধে সচেতনতামূলক কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে ইউনিসেফ বাংলাদেশের অফিসার ইনচার্জ এবং চাইল্ড প্রোটেকশন চিফ ড. এলিসা কল্পনা এসব কথা বলেন।

সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ বাংলাদেশ (সিআইপিআরবি) এর আয়োজনে এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের (ময়েস) সহযোগিতায় এই অনুষ্ঠানে কারিগরি দিকনির্দেশনা দেয় ইউনিসেফ।

পানিতে ডোবা প্রতিরোধের মতো গুরুত্বপূর্ণ জনস্বাস্থ্য সমস্যার তাৎপর্য তুলে ধরে এলিসা বলেন, “বাংলাদেশে পানিতে ডোবা প্রতিরোধে ইউনিসেফ শুরু থেকেই বিশেষ ভূমিকা পালন করে আসছে। সিআইপিআরবি, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ শিশু একাডেমি এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের (মওকা) সহযোগিতায় পরিচালিত ‘সুইমসেফ’ প্রোগ্রামের মাধ্যমে আমরা শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের জীবন রক্ষাকারী দক্ষতা শেখাচ্ছি। পাশাপাশি জলবায়ু সহনশীলতা ও সমতার মতো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ভূমিকা রাখছি।”mdleড. এলিসা কল্পনা উপস্থিত সাঁতার প্রশিক্ষক ও ক্ষুদে সাঁতারুদের কথা শুনে আনন্দ প্রকাশ করে বলেন, “এই প্রোগ্রাম শুধু জীবন বাঁচায় না, খেলাধুলার মাধ্যমে মেয়েদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে তাদের ভবিষ্যৎ গড়ার পথে অগ্রসর হওয়ার ক্ষমতা প্রদান করে। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে সহায়তা করে। যা সমাজের ক্ষতিকর প্রথাগুলোর বিরুদ্ধে দাঁড়াতে সাহায্য করছে।”

ইউনিসেফের চাইল্ড প্রোটেকশন স্পেশালিস্ট মনিরা হাসান প্রোগ্রামটির বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বলেন, “২০০৬ সালে শুরু হওয়া ‘সুইমসেফ’ প্রোগ্রাম ইতোমধ্যে ৬ লাখেরও বেশি শিশু ও কিশোর-কিশোরীকে সাঁতার শেখাতে পেরেছে। ১০ হাজার কমিউনিটি ভলান্টিয়ারকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে এবং লক্ষাধিক অভিভাবক ও তত্ত্বাবধায়ককে সচেতন করা হয়েছে। এই উদ্যোগ ডোবানো প্রতিরোধে এক বিপ্লব ঘটিয়েছে।”

তিনি বলেন, নিরব ঘাতক এই পানিতে ডুবে মারা যাওয়া। প্রতিদিন ৪১জন শিশু মারা যাচ্ছে। এ নিয়ে এ জন্য আমাদের আরো সচেতন হতে হবে। করোনা ভাইরাস নিয়ে আমরা সচেতনতা বৃদ্ধি করছি অথচ প্রতিদিন আমাদের যে ৪১ মায়ের বুক খালি হচ্ছে সেদিকে খেয়াল করছি না। সরকারি বেসরকারি সকলকে একযোগে এ নিয়ে কাজ করা দরকার।

তবে ধীরে হলেও কাজ হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ২০২২ সালে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় প্রোগ্রামটি আরও সম্প্রসারিত হয়েছে, যা এর কার্যকারিতা বহুগুণে বৃদ্ধি করেছে।

আরও পড়ুনঃ বিজয় দিবস উপলক্ষে ধানমন্ডি সোসাইটির উদ্যোগে মেলা ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা অনুষ্ঠিত

শিশুদের জন্য সাঁতার প্রশিক্ষণের সুযোগ সহজলভ্য করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন মো. তারিকুল ইসলাম চৌধুরী, প্রোগ্রাম ম্যানেজার, বাংলাদেশ সুইমিং ফেডারেশন এবং শিশু একাডেমি (আইসিবিসি প্রজেক্ট)। প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই কার্যক্রম শুরু করার ওপর জোর দেন তিনি।

যুগ্ম সচিব, বাংলাদেশ শিশু একাডেমি যুগ্ম সচিব মো. গোলাম মোস্তফা পানিতে ডোবা প্রতিরোধের উদ্যোগ সম্প্রসারণে অংশীদারিত্বের গুরুত্বের উপর জোর দেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিভিন্ন অতিথি পানিতে ডোবা প্রতিরোধে টেকসই সম্প্রসারণে সহযোগিতার গুরুত্ব তুলে ধরেন, ড. মো. শিব্বির আহমেদ ওসমানী, যুগ্ম সচিব, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, শিশু মৃত্যুরোধে স্বাস্থ্যখাতের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেন। সানজিদা ইসলাম, ইউনিসেফ এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের স্পোর্টস ফর ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের কো-অর্ডিনেটর, খেলাধুলার মাধ্যমে শিশুদের জীবন রক্ষাকারী দক্ষতা শেখানোর গুরুত্ব তুলে ধরেন।

এছাড়াও মো. আজিম হোসেন, সহকারী পরিচালক, ক্রীড়া অধিদপ্তর, শিশু সুরক্ষা কার্যক্রমে খেলাধুলার ভূমিকা নিয়ে কথা বলেন। ইভেন্টটি শেষ হয় সুইমসেফ প্রোগ্রামের আরও বিস্তৃতি এবং বহুমুখী অংশীদারিত্ব জোরদার করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে। তারা সবাই অনুষ্ঠানে প্রতিশ্রুতি দেন যে, এ উদ্যোগ দেশের শিশু ও কিশোর কিশোরীদের জীবন সুরক্ষার পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তন এবং সামাজিক বৈষম্যের মতো চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে ও তারা এ নিয়ে কাজ করে যাবেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন ট্রাম্প

Previous article

মুন্সিগঞ্জের কামারখাড়া ইউনিয়নে যুবদলের অফিস উদ্ধোধন

Next article

You may also like

1 Comment

  1. […] আরও পড়ুনঃ পানিতে ডোবা প্রতিরোধে ইউনিসেফ’র সচেত… […]

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *