জীবনযাপন

পুরুষ তিমির দাঁত নিতে হয় বিয়ের প্রস্তাবে!

0
127739186

বিশ্বজুড়ে নানা দেশে বিয়ের প্রস্তাবের নানান রীতি বিদ্যমান। এর কিছু রীতি তো চমকে দেয়ার মতো। যেমন ফিজির কথায় ধরা যাক। দেশটিতে পাত্রীর বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব দিতে হলে সঙ্গে নিতে হবে পুরুষ তিমির দাঁত। পাত্র তিমির দাঁত কনের বাবা-মাকে দিয়ে প্রস্তাব দেবেন এমনই রীতি সেখানে। এ প্রথা ফিজিতে ট্যাবুয়া নামে পরিচিত।

সেখানকার বাজারে বিক্রিও হয় তিমির দাঁত। মূলত তারা সমুদ্রে ভেসে আসা মৃত তিমির দাঁত সংগ্রহ করে বিক্রি করেন। যদিও প্রাচীন ফিজিরা তিমি শিকার করেই দাঁত সংগ্রহ করতেন বলে ধারণা করা হয়।

এ ছাড়াও ফিজিদের সংস্কৃতির একটি অংশ হচ্ছে, যে কোনো অনুষ্ঠানে একে অপরকে উপহার দেওয়া। কিছু সম্প্রদায় আছে, যারা যে কোনো অনুষ্ঠানে উপহার হিসেবে দিয়ে থাকেন খাবার। তার সঙ্গে থাকে ভার্গের কাপড় ও কাভা। কাভা হলো ফিজিদের জাতীয় পানীয়। যা তৈরি করা হয় বিশেষ একধরনের উদ্ভিদের শেকড় দিয়ে। তাদের একটি ঐতিহ্যবাহী খাবার হলো লোভ ফিস্ট। যা তৈরি করা হয় ভূগর্ভস্থ গরম চুল্লিতে।

 

গবেষণা মতে, সূর্যোদয়ের দেশ হলো ফিজি। এখানে প্রতিদিন সবার আগে সূর্য ওঠে। ইন্টারন্যাশনাল ডেট লাইনে অবস্থিত পৃথিবীর একমাত্র আবাদ অঞ্চল এটি। এই ডেট লাইনের পাশেই আছে একটি মনোরম মসজিদ। এখান থেকেই প্রতিদিন পৃথিবীর সর্বপ্রথম আজান শোনা যায়।

মজার বিষয় হলো, দেশটিতে ৪০ শতাংশ মানুষই ভারতীয়। তাই একে দ্বিতীয় ভারতীয় বলা হয়। তাদের সরকারি ভাষা ইংরেজি। তবে ফিজিয়ানের পাশাপাশি হিন্দি ভাষাও এখানে ব্যবহার হয়। ফিজির আদিবাসীদের বলা হয় ক্যাভেতে। তাদের চেহারায় আফ্রিকা ও দক্ষিণ এশিয়ার ছাপ বিদ্যমান। অর্থাৎ আফ্রিকা এবং এশিয়ানরা এখানে এসে এক হয়েছে। ফলে তাদের মধ্যে ভারতীয় ছাপ যতটা আছে; ততটাই আছে আফ্রিকানদের ছোঁয়া।

তবে শুধু চেহারায় নয়, এখানকার আদিবাসিদের জীবনযাপন, রীতি-নীতিও অনেকটা আফ্রিকান বিভিন্ন উপজাতির মতো। এ দেশের গ্রামগুলোয় সানগ্লাস এবং টুপি পরা নিষিদ্ধ। কারণ এখানে শুধু স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরাই সানগ্লাস ও টুপি পরতে পারেন।

ফিজিরা কালো জাদুতে খুবই পারদর্শী। আধুনিক ফিজিরা এখান থেকে সরে এলেও তাদের পূর্বপুরুষরা ছিলেন কালো জাদুতে বিশেষ দক্ষ। এমনও শোনা যায়, তারা আত্মার সঙ্গে কথা বলতে পারতেন। এমনকি আত্মাকে বশ করতে পারতেন। বিশ্বে প্রথম নরমাংস খাওয়ার প্রথাও চালু হয়েছিল ফিজিতে। খ্রিষ্টধর্ম সূচনা হওয়ার আগপর্যন্ত দেশটিতে এ প্রথার প্রচলন ছিল। ফিজিয়ানরা বিশ্বাস করেন, পাহাড়ের গুহায় দিঘী নামক একটি বৃহৎ সাপ এখনো অবস্থান করছে। এমনকি স্বর্গদেবতা তাদের সমুদ্রের মধ্য দিয়ে ফিজিতে এনেছিলেন।

১৯৭০ সালে ব্রিটিশদের কাছ থেকে স্বাধীনতা পেলেও ফিজি এখনো কমনওয়েলথের অংশ। যে কারণে ফিজির পতাকায় এখনো ইউনিয়ন জ্যাক দেখতে পাওয়া যায়। যা ইংল্যান্ডের পতাকার একটি নাম। এমনকি কাগজের টাকায় রানি ভিক্টোরিয়ার ছবি ব্যবহার করা হয়।

আরও পড়ুনঃ জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা গভীর মহাকাশে আলোর সবচেয়ে উজ্জ্বল ঝলকানি দেখে বিস্মিত

বাংলার প্রথম সিরিয়াল কিলার

Previous article

গুজরাট ট্রাজেডিতে প্রধানমন্ত্রীর গভীর শোক

Next article

You may also like

Comments

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *