উদ্যোক্তার গল্পদেশি উদ্যোক্তা

প্রতিটি কাস্টমারই আমার সেলস এম্বাসেডর- মারুফ মোর্শেদ

0
Cherry Blossom Watercolor Facebook Cover 2

উদ্যোক্তা জার্নালের বিশেষ আয়োজন ‌‘উদ্যোক্তা গল্প’-র আজকের পর্বে, কথা হলো উদ্যোক্তা মোঃ মারুফ মোর্শেদ মজুমদারের সঙ্গে। আজ শুনবো তার উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার গল্প।

আমি মোঃ মারুফ মোর্শেদ মজুমদার। জন্ম পুরান ঢাকায় এবং বেড়ে ওঠাও পুরান ঢাকায়। স্কুল জীবনে যখন ক্লাস সিক্সে পড়ি তখন থেকেই ছোটখাটো উদ্যোগের সাথে জড়িত। কারণ বাবার কাছে যখন টাকা চাইতে যেতাম নিজের আত্মসম্মানে খুব লাগতো, তাই নিজে কিছু করার চিন্তাভাবনা নিয়ে তখনই উদ্যোগ শুরু করি।

মাছ-মাংস নিয়ে কারবার আমার, রেডি টু কুক করে দেই। সিগনেচার পণ্য হচ্ছে ইলিশ মাছের ডিম। কারণ ইলিশ মাছের ডিম নিয়ে হরহামেশা ক্রেতারা অনেক প্রতারণার শিকার হয়, তাই এই ডিম নিয়ে অনলাইনে বিস্তরভাবে আমিই প্রথম কাজ শুরু করি।

আমার প্রতিষ্ঠানের নাম “মাম ফুড”। মাছ-মাংসের সকল আইটেম, সিজনাল ফ্রুটস আম ও লিচু, অষ্টগ্রামের পনির, ঘি, মাখন যা সম্পূর্ণ আমার নিজস্ব ফার্মের দুধ দ্বারা তৈরি হয়; এছাড়াও খাঁটি সরিষার তেল ও খাঁটি নারিকেল তেল নিয়ে কাজ করছি।

শুরুটা ছিলো অনেক কষ্টের। স্কুলের জমানো টাকা দিয়ে আমার মূলধন তৈরি হয়, যা ছিলো খুবই সামান্য, তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকার মতো।

আমি মনে করি একজন উদ্যোক্তা হতে সবচেয়ে বড় প্রয়োজন তার মনোবল, লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য সৎ ইচ্ছা ও ক্রেতাকে সঠিক সার্ভিস দেয়া। বর্তমানে আমার প্রতিষ্ঠানে ৭ জন কর্মী রয়েছে।

সবাই যদি চাকরির পিছনে ছোটে তাহলে এতো চাকরি ও কর্মসংস্থান কিভাবে হবে? আমি বরাবরই চেয়েছি আমার উদ্যোগের মাধ্যমে, আমার কর্মসংস্থানের মাধ্যমে আরো যেনো ১০-১৫টি পরিবার সচ্ছলভাবে চলতে পারে।

আমার প্রতিষ্ঠান থেকে যে একবার যেকোনো একটি পন‍্য ক্রয় করেছেন, ইনশাআল্লাহ সে ঐ পণ্যের ব্যাপারে অন্য কোথাও যায়নি, কারণ আমি বরাবরই চেষ্টা করেছি আমার পণ্যের কোয়ালিটি ঠিক রাখার জন্য। এক কথায় বলতে গেলে খাবারের স্বাদ যদি ঠিক থাকে ক্রেতা আপনার কাছে আসবে এবং কোয়ালিটি সবচেয়ে বড় ফ্যাক্ট যা আমি সবসময় ধরে রাখার চেষ্টা করেছি। তাই প্রতিনিয়ত রিপিট কাস্টমার পাচ্ছি ও আমাকে তারাই আমার রেফারেন্স ক্রেতা দিচ্ছে।

আমি মনেপ্রাণে এটা বিশ্বাস করি ও আমি সফল হতে পেরেছি এটা আমি ভাবি কারণ আমি সবসময় আমার ক্রেতাকে সঠিক পণ্য ও শতভাগ মানসম্মত খাবার দিয়ে থাকি এবং সরবরাহ করে থাকি। এক কথায় বলতে গেলে আমার প্রতিটি কাস্টমারই আমার সেলস এম্বাসেডর।

বর্তমানে আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য খুবই সুন্দর ও মানসম্মত একটি পরিবেশ আছে, যা সঠিকভাবে নারী উদ্যোক্তারা চাইলে কাজে লাগাতে পারে এবং আমি মনে করি প্রতিটি নারী সে হোক একজন গৃহিণী বা একজন কর্মজীবী তার নিজস্ব কিছু উদ্যোগ নিয়ে সে একজন নারী উদ্যোক্তাও হতে পারে।

প্রতিবন্ধকতার অভিজ্ঞতা এক কথায় বলবো খুবই খারাপ, কারণ প্রতিনিয়ত অনেক বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে আজ এই অবস্থানে আসতে পেরেছি।

আল্লাহর রহমতে আমার খুব ভালো সেল এবং আমার ক্রেতারাও খুব সন্তুষ্ট আমার সার্ভিসের উপর। আমি সরকারি ও বেসরকারি কোনো ধরনের সহযোগিতা এখনো পাইনি।

আমার প্রতিষ্ঠানের সবচেয়ে বড় অর্জন কাস্টমার সন্তুষ্টি। প্রতিষ্ঠান নিয়ে আমার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হচ্ছে আমি চাই আমার ‘মাম ফুড’কে বিএসটিআইর অনুমোদনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাজারে আমার প্রত্যেকটি পণ্য রপ্তানির পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া, এটাই আমার স্বপ্ন। আগামী পাঁচ বছর পর অন্তত কয়েকটি দেশে ‘মাম ফুড’র পণ্য রপ্তানি করতে চাই।

পানের বাম্পার ফলনে লাভবান কুমিল্লার চাষিরা

Previous article

অতিরিক্ত লবন খেলে শরীরের কী ক্ষতি হতে পারে?

Next article

You may also like

Comments

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *