উদ্যোক্তার গল্পদেশি উদ্যোক্তা প্রতিবন্ধকতার চেয়ে সহযোগিতা পেয়েছি বেশি- নাছিমা ইয়াছমিন By নিজস্ব প্রতিবেদক August 6, 20220 ShareTweet 0 উদ্যোক্তা জার্নালের বিশেষ আয়োজন ‘উদ্যোক্তা গল্প’-র আজকের পর্বে, নিজের উদ্যোগ নিয়ে কথা বলেছেন নাছিমা ইয়াছমিন। চলুন শুনি তার উদ্যোক্তা জীবনের গল্প। আমি নাছিমা ইয়াছমিন, বড় হয়েছি গোপালগঞ্জ এর মুকসুদপুর উপজেলার গোহালা ইউনিয়নে। মাধ্যমিক শেষ করে প্রথম নিজ গ্রাম, পরিবার ছেড়ে ভর্তি হই ফরিদপুর সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজে। এরপর বিয়ে, প্রথম সন্তানের ৪ বছর হওয়ার পরে স্থায়ীভাবে ঢাকায় বসবাস। সংসার, ২ বাচ্চার দেখাশোনা, স্কুল নিয়ে ব্যস্ত সময় যাচ্ছিলো। বৈশ্বিক মহামারীর সময়ে সবার মতো আমিও ঘরবন্দী, সময় যাচ্ছিলো না, কিছু একটা করতে পারলে ভালো হতো মনে হলো। সময় কাটবে, সাথে দুঃশ্চিন্তা দূর হবে, পাশাপাশি যদি পরিবারের জন্য কিছু করা যায় তাহলে তো আরো ভালো। ততোদিনে বাসায় ইন্টারনেট সংযোগ নেয়া হলো। তাই আগের থেকে মোবাইলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো নিয়ে বেশি থাকা হয়, আর তখন ‘উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স ট্রাস্ট (উই)’ এ অনেক নারীদের অগ্রগতি দেখতে পাই। তারা খুবই সিম্পল, ঘরোয়া জিনিস দিয়ে কাজ শুরু করেছেন। সেটা দেখে আমারো ভালো লাগে। ২০২০ সালের ২০ ডিসেম্বর ‘উই’তে যুক্ত হই। ২০২১ এর ১৩ ফেব্রুয়ারী আমার উদ্যোগ শুরু। তখন আমিও আমার ঘরের জিনিস দিয়েই প্রথমে শুরু করি। পরবর্তীতে ৫,০০০ টাকা বিনিয়োগ করি। তারপর সব রকমের দেশীয় পোশাক ও বিভিন্ন পণ্য বাড়াতে থাকি কাস্টমার এর চাহিদা অনুযায়ী। আমার উদ্যোগের নাম “Amon Bahar by Nasima” (আমন বাহার বাই নাছিমা)। বর্তমানে আমার উদ্যোগে রয়েছে মসলিন শাড়ীসহ দেশীয় শাড়ী, থ্রি পিস, হিজাব, কুর্তি, বেডশিট, লাল চাল, ঘানি ভাঙা সরিষার তেল, মধু, খেজুরের গুড় এবং নকশা করা কোরআন শরিফ এর রেহাল। আমরা সবসময় চেষ্টা করছি আমাদের সার্ভিস দিয়ে সবার মন জয় করতে। উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ধৈর্য্য, সৎ থাকা, কথার মূল্যায়ন করা ও কাস্টমার কে সেরা পণ্য টা দেয়ার চেষ্টা করা। কারণ পণ্য ভালো হলে কাস্টমার বারবার ফিরে আসবে, উদ্যোগ সচল থাকবে ইনশাআল্লাহ। আমার প্রতিষ্ঠানের বাহিরের কাজগুলো আমার স্বামী করেন বেশি। সোর্সিং ও প্রচার এর কাজ আমি বেশি করি। পেইজ ও প্যাকেজিং এর কাজে আমার সন্তানরা সাহায্য করে। পরিবারের চারজন মিলেই আমার উদ্যোগের কাজগুলো করি। অনেকের মতো চাকরি করছি না, খুঁজিওনি কারণ আমি স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছি। ভালো মানের পণ্য দিয়ে মানুষের সেবা করতে পারছি, পরিবার ও সন্তানদের কে নিজের ইচ্ছে মতো সময় দিতে পারছি। আমার কাস্টমাররা যখন বলে, আপনার কাছে থেকে নিশ্চিন্তে থাকি পণ্য নিয়ে তখন খুব ভালো লাগে। আমার বহুবারের রিপিট কাস্টমার রয়েছেন, যারা আমার কাছে থেকে আমার সব পণ্য নিচ্ছেন প্রয়োজন হলে। ভালো রিভিউ দিচ্ছেন, প্রয়োজনে পরামর্শ নেই তাদের কাছে থেকে। তাদের ভালো সেবা দেয়ার জন্য সচেষ্ট থাকি সবসময় ইনশাআল্লাহ। ‘উই’ থেকে লাখোপতি হয়েছি উদ্যোগ শুরু করার কিছুদিন পরেই, আলহামদুলিল্লাহ আমার সেল নিয়ে আমি সন্তুষ্ট। সব ভালো কাজেই প্রতিবন্ধকতা থাকবেই, তবে আমি প্রতিবন্ধকতার চেয়ে সাপোর্ট পেয়েছি বেশি আলহামদুলিল্লাহ। আমার পরিবার থেকে কোনো সমস্যার সম্মুখীন হয়নি, আমার আত্মীয় স্বজনরাও আমাকে সাপোর্ট করেছেন। এখনো কোনো সরকারি বা বেসরকারি সহোযোগিতা পায়নি। আমার প্রতিষ্ঠানের সবচেয়ে বড় অর্জন ক্রেতার সন্তুষ্টি লাভ। আমার মা, আমার শাশুড়ী কে আমার উদ্যোগ থেকে উপহার দিতে পেরেছিলাম। তাদের সাথে কাটানো শেষ ঈদে এটা আমার জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি। তাছাড়া আমার উদ্যোগের পণ্যের মধ্যে সরিষার তেল, মধু এবং আমাদের কাজ করা মসলিন শাড়ী কয়েকটি দেশে গিয়েছে কাস্টমার এর হাত ধরে। কিছুদিন হলো আমরা সিংগাপুরে আমাদের প্রবাসী ভাইদের ব্যান্ড দলের জন্য টি-শার্ট এর কাজ করেছি আলহামদুলিল্লাহ। এভাবেই আস্তে আস্তে আমার উদ্যোগ কে দেশে-বিদেশে সবার সামনে তুলে ধরতে চাই, ভালো পণ্য ও সেবার মাধ্যমে ইনশাআল্লাহ।
ই-ক্যাব ইয়ুথ ফোরামের হাত ধরে শান্ত মারিয়াম ইউনিভার্সিটিতে যাত্রা শুরু হতে যাচ্ছে ই-কমার্স ক্লাবের February 8, 20231560 views