ফ্যাশন

ফ্যাশন হোক হাতঘড়িতে

0
w2

সময় যতই আধুনিক হোক, আর প্রযুক্তি যতই উন্নত হোক, হাতঘড়ির আভিজাত্য ফ্যাশনের দুনিয়ায় চিরন্তন। শৌখিনদের কাছে হাতঘড়ির মূল্য অপরিসীম। ফ্যাশনে, সৌন্দর্যে, ব্যক্তিত্বে, আভিজাত্যে হাতঘড়ি এখন নতুন নান্দনিকতার প্রতীক। শুধু তারুণ্যের নয়, সব বয়সী মানুষের হাতের কবজিতেই এখন হাতঘড়ি বেশ শোভা পাচ্ছে।

মানুষ এখন মোবাইল ফোনের ডিজিটাল পর্দা উপেক্ষা করে হাতের ঘড়িতেই সময় খুঁজছেন। সামর্থের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ফ্যাশন অনুষঙ্গ হিসেবে ঘড়ি কিনছেন অনেকে। যা তার ব্যক্তিত্বকেও বাড়িয়ে দিতে পারে বহুগুণ। আপনি যে পোশাকই পরেন তার সাথে যদি একটা ঘড়ি পরেন দেখবেন আপনার আউটলুকটাই বদলে গেছে। আপনাকে অন্য আর দশটা মানুষ থেকে একটু আলাদা ও ভিন্ন ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষ মনে হবে। এ ধারায় আপনাকে শুধু সুন্দরই লাগবে না, প্রকাশ পাবে আপনার রুচিশীল ব্যক্তিত্ব!

অনেক বিত্তবান ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ কোটি টাকা দামের ঘড়িও পরেন। মেয়েদের গহনার মতো নানা ব্র্যান্ডের অসংখ্য ঘড়ির সংগ্রহও আছে কারো কারো কাছে। পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে একেক দিন একেকটা পরেন। যা আভিজাত্য ও ফ্যাশন আইকন বলে বিবেচিত, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ফেভার লুইবা।

সুইজারল্যান্ডের ঘড়ি নির্মাতা আব্রাহাম ফেভার এটি প্রথম প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তী সময়ে আব্রাহাম ফেভার ও তার দুই ছেলে ফ্রেডারিক ও হেনরি লুইস ১৭৯২ সালে নতুন নামকরণ করেন এ ফেভার অ্যান্ড ফিলস। সেই থেকে তারা মূল কোম্পানির অধীনে ফেভার লুইবা নামে ঘড়ি বাজারজাত করে আসছে।

ঘড়ি শিল্পে আব্রাহাম ফেভার ও তার দুই সন্তানের অবদান অসীম। প্রথম থেকেই তারা ঘড়ির সৌন্দর্য ও নিখুঁত সময় দেয়ার ওপর জোর দিয়ে আসছেন। বলা হয়, তাদের হাতেই ঘড়ি নিখুঁত রূপ পায়। ডিজাইনের বৈচিত্র্য, টেকসই আর ঐতিহ্য নিয়ে ফেভার লুইবা ঘড়ি আজ ঘড়িপ্রেমীদের স্বপ্ন।

রোলেক্স এসএ আজ সারা বিশ্বে পরিচিত লাক্সারি সুইস ঘড়ি নির্মাতা হিসেবে। কোম্পানির প্রতিষ্ঠাস্থল লন্ডন, ইংল্যান্ডে। রোলেক্স প্রতিদিন ২ হাজার ঘড়ি উৎপাদন করে। বর্তমানে রোলেক্স সারা বিশ্বে স্ট্যাটাস সিম্বল বলে বিবেচিত। সুইস ঘড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান রাডো, যার সদর দপ্তর সুইজারল্যান্ডের লেংগুনাউয়ে। প্রতিবছর কোম্পানিটি ৫ লাখের বেশি ঘড়ি উৎপাদন করে থাকে। গুণগত মান নিশ্চিত করেই রাডো আজ ফ্যাশন দুনিয়ায় ঘড়ির সেরা এক আইকন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।

এতো দামি ঘড়ির ভিড়ে বর্তমান সময়ে এখন জায়গা করে নিয়েছে স্মার্টওয়াচ। ঘড়ি দেখার পাশাপাশি আরও বেশকিছু কাজ চালিয়ে নেয়া যায় এই ঘড়ির মাধ্যমে। যার মধ্যে রয়েছে, ফোনকল বা মেসেজ আদানপ্রদান, স্বাস্থ্যবিষয়ক বিভিন্ন সেবা। তাই দিন দিন চাহিদা বাড়ছে স্মার্টঘড়ির।

নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো তাই প্রয়োজনের সঙ্গে সঙ্গে গুরুত্ব দিচ্ছে হাল ফ্যাশনের দিকটিও। অ্যাপল তাই প্রতি বছরই তাদের ওয়াচে আনছে পরিবর্তন। হুয়াওয়ে ছেলেদের এবং মেয়েদের জন্য নিয়ে এসেছে আলাদা আলাদা ডিজাইন স্মার্টওয়াচ।

আরও পড়ুনঃ গরম আর পুজোর ভিড়ে সুগন্ধির সুবাস ধরে রাখবেন কিভাবে?

ক্লাসিক ক্যাসিওর ঘড়ি মানুষ এখনো খোঁজে। কারণ দামের দিক থেকেও ঘড়িতে মানুষের পছন্দের বিষয়টি ভিন্ন। অনেকে বেশি দামের ঘড়ির দিকেই আগ্রহ দেখায়। এক্ষেত্রে তাদের নকশা ও ঘড়ির বৈশিষ্ট্য বিষয়টি পছন্দের তালিকায় থাকে। বাজারে যেমন চেইনের ঘড়ি দেখা যায়, তেমনি গোলাকৃতি, ওভাল, চতুভু‌র্জ আকৃতির বিভিন্ন ডায়ালের ঘড়ির দেখাও মেলে। ট্র্যাডিশনাল ঘড়ির পাশাপাশি আমাদের এখানে ক্রনোগ্রাফ ঘড়িগুলোই বেশি চলে।

সাধারণ ঘড়িতে তিনটা কাঁটা থাকে। কিন্তু ক্রনোগ্রাফ ঘড়িতে ছয়টা কাঁটা। এটা সময়, দিন, তারিখ দেখানোর পাশাপাশি স্টপ ওয়াচের কাজও করে। দিন-রাত ২৪ ঘণ্টায় ইচ্ছামতো সময় সেট করা যায়। ফলে এটা সাঁতারু, অ্যাথলেট কিংবা পর্বতারোহীদের দারুণ কাজে দেয়। কিছু ঘড়িতে আবার স্টপ ওয়াচের পাশাপাশি একই সঙ্গে তিন থেকে চারটা দেশের সময় দেখা যায়।

ব্র্যান্ডের ওপর ঘড়ির দাম নির্ভর করে। বাজারে যেসব ব্র্যান্ডের ঘড়ি মেলে তার মধ্যে রয়েছে টাইটান, ফাস্টট্র্যাক, ওমেগা, ওরিয়েন্ট, রোমার, টিসোট, ইয়াডো‌র,গুচি, এমিকা, ফসিল, ডিজেল, সুইস্টার, লোবর, ভিকটোরি নক্স, বারবারি, রয়েল ক্রাউন, প্যারিলাইনার, ট্যাগহয়ার, রোমানসন, ওয়েস্টার, সিটিজেন।

এছাড়াও চীন থেকে আমদানি করা নন-ব্র্যান্ড কালারফুল সিলিকন, চেইন ও কাপড়ের বেল্টে তৈরি বিভিন্ন ঘড়ি পাওয়া যায়, যার মধ্যে রয়েছে নেভিফোর্স, কুরিন, স্ড়েমি, ববোবার্ডসসহ অনেক ধরনের ঘড়ি। মিলবে স্যামসাং, হুয়াওয়ে, অ্যাপল, অনার, জিব্যালেজ, অ্যামেজফিটসহ চায়না বেশকিছু ব্র্যান্ডের স্মার্টওয়াচ। এসব ঘড়ি বা স্মার্টওয়াচ মিলবে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন মার্কেটে। এছাড়া অনলাইন এবং ই-কমার্স সাইটগুলোতেও পাবেন।

বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার প্রদান করলেন প্রধানমন্ত্রী

Previous article

গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচন বন্ধ

Next article

You may also like

Comments

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *