কৃষি

বলসুন্দরী কুল চাষ করে ৬ লাখ টাকা বিক্রির আশা বদরুলের

0
kul

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার আদর্শ কৃষক বদরুল আলম কৃষি বিভাগের উদ্ভাবন করা নতুন জাতের কুল বলসুন্দরী বাগান করে এলাকার জনসাধারণের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এই জাতের বাগান করে লাভের স্বপ্ন দেখছেন তিনি।

দিনাজপুর কৃষি অধিদপ্তরের ফল ও বিভিন্ন জাত উদ্ভাবন নিয়ে গবেষণায় নিয়োজিত সহকারী পরিচালক মো. আশরাফুজ্জামান জানান, জেলার ১৩টি উপজেলাতেই শীতকালীন সময়ে কুল বরই যথেষ্ট পরিমাণ হয়ে থাকে। অনেক বাগান মালিক আম ও লিচুর বাগানের মধ্যে এবং পৃথকভাবেই কুলের আলাদা বাগান সৃজন করছেন।

কুলের চাহিদা শীতকালীন মৌসুমে থাকায় গত কয়েক বছর থেকে বাগান মালিকরা বিভিন্ন জাতের কুল বাজারজাত করতে সক্ষম হচ্ছে। গতবছর কৃষি বিভাগের উদ্ভাবিত বলসুন্দরী নামের কুলের চারা বেশ কিছু বাগান মালিকের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে।

চলতি বছর এই মৌসুমে দিনাজপুর ঘোড়াঘাট উপজেলার নিতাইশা এলাকায় ২ একর জমিতে বলসুন্দরী কুল জাতের বরই বাগান করেছেন আদর্শ কৃষক বদরুল আলম। বাগানের বয়স এক বছর পেরিয়ে যেতেই গাছে ফুল এসেছে। হেমন্তের হাওয়ায় কার্তিক মাসের শুরুতেই ছোট-ছোট গুটিতে ভরে উঠেছে প্রতিটি বলসুন্দরী কুল গাছ। ফুল আর গুটির ভারে নুয়ে পড়ছে গাছগুলো। বদরুল ইসলাম অপেক্ষার প্রহর গুণছেন কুল বরই বিক্রি করার জন্য।

তিনি জানান বাগানে প্রায় ১ হাজার গাছ রয়েছে। বাগান করতে ব্যায় হয়েছে প্রায় ৫ লাখ টাকা। বাগান তৈরির শুরু থেকে আমি নিজে শ্রমিকদের নিয়ে বাগান পরিচর্যার কাজ করে যাচ্ছি। গাছের যত্ন নেয়া এবং সঠিক সময়ে জৈব ও গোবর সারসহ কিছু রাসায়নিক সারও গাছের গোড়ায় দূরত্ব বজায় রেখে দেয়া হয়েছে। গাছে যাতে কোনো ধনের প্রাকৃতিক বালাই আক্রান্ত করতে না পারে এ জন্য কৃষি বিভাগের পরামর্শে জীবানুমুক্ত ট্যাবলেট প্রত্যেক গাছ থেকে ১ ফুট দূর দিয়ে ৬ইঞ্চি নিতে পুঁতে দেয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ বারোমাসি টমেটো চাষে শাওনের সাফল্য

বাগানের কাজে নিয়োজিত শ্রমিক সরেন হাসদা জানান, এই বাগান শুরু থেকে দিন ও রাতে সে বাগানে থেকে দেখাশুনার কাজ করে। এ ধরনের একটি নতুন উদ্ভাবনের ফল বলসুন্দরী কুল বাগানের পরিচর্যার কাজে থাকতে পেরে সে নিজে খুব খুশী। গাছগুলোতে ফুল ও ফলের গুটি বের হতে শুরু করেছে। ফলগুলো বড় হলে আরো ভালো দেখা যাবে বলে তার আশ্বাস।

এ বিষয়ে বদরুল আরো বলেন, গাছ লাগানো আমার নেশা। আর নেশা থেকেই একে আমি পেশা হিসেবে নিয়েছি। বাগানে ড্রাগন, মাল্টা এবং পেঁপে গাছ আছে। অনেক আশা এবং স্বপ্ন নিয়ে বলসুন্দরী কুল বরই বাগান করেছি। প্রতিটি গাছে পর্যাপ্ত ফুল এবং গুটি এসেছে। আগামী ফেব্রুয়ারি মাস থেকে বরই বাজারজাত করবো। আশা করছি ফলন ভালো হলে এই সিজনে ৫ থেকে ৬ লাখ টাকার বরই বিক্রি করতে পারবো।

জেলার ঘোড়াঘাট উপজেলা কৃষি অফিসার এখলাছ উদ্দিন সরকার বলেন, দিনাজপুর জেলায় ২১২ হেক্টর জমিতে এবারে বিভিন্ন জাতের কুলের বাগান রয়েছে। বাগানগুলো সঠিক পরিচর্যার জন্য কৃষি বিভাগের মাঠকর্মীরা পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে। ওই তালিকার মধ্যেই ঘোড়াঘাট উপজেলায় ১০ হেক্টর জমিতে বরই চাষ হচ্ছে। ৭টি বরই বাগান আছে। বদরুল ইসলাম আমাদের পরামর্শ নিয়ে উন্নত জাতের বলসুন্দরী বরই বাগান করেছেন। বাগানে প্রচুর পরিমাণে ফুল ধরেছে। বাগানটি দেখে অনেকেই বাগান তৈরির জন্য আমাদের কাছে পরামর্শ নিচ্ছেন। আশাকরি বাগান মালিক কাঙ্খিত ফল পাবেন।

মঙ্গল গ্রহে আছড়ে পড়া উল্কার আঘাতে গ্রহটি কেঁপে উঠেছিলো : নাসা

Previous article

মেসি যাদুতে মেক্সিকোকে ২-০ গোলে হারালো আর্জেন্টিনা

Next article

You may also like

Comments

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More in কৃষি