জীবনযাপন

মধ্যযুগের দামি পেশা ইঁদুর ও জোঁক ধরা

0
europe

বিচিত্র সব পেশা শুধু এ যুগেই নয়, মধ্যযুগেও ছিল। বরং আরও অদ্ভুত ছিলো। যমেন- জোঁক সংগ্রহ করা, ইঁদুর ধরা, অন্যের বমি সংগ্রহ, বগলের লোম পরিষ্কার করা ইত্যাদি।

এমন সব অদ্ভুত অদ্ভুত পেশার অস্তিত্ব ছিল মধ্যযুগে। এমনকি অন্যের হয়ে চাবুকের মার খাওয়াও ছিল পেশা। আর সে সময় নাপিতরা করতেন দাঁতের চিকিৎসা!
মধ্যযুগে পরিচিত পেশা ছিল জোঁক সংগ্রহ করা। বিশেষ করে নারীরাই বেশি এই পেশায় যুক্ত ছিলেন। নর্দমায় নেমে জোঁক খুঁজে নিয়ে আসতেন তারা। জোঁক সেসময় ব্যবহার হত ওষুধ তৈরি ও নারীদের রূপচর্চায়। সমাজের ধনী শ্রেণির নারীরা জোঁক দিয়ে রূপচর্চা করতেন।

পরে জোঁকদের রক্ত খাইয়ে হৃষ্টপুষ্ট করতে হত। অর্থাৎ জোঁক ধরে আনার পর এগুলোকে বিভিন্ন মানুষের গায়ে লাগিয়ে রক্ত খাওয়ানো হতো। রক্ত খেয়ে জোঁকগুলো যখন ফুলে ঢোল হয়ে যাবে তখন এগুলো ব্যবহার করা হবে। জোঁকগুলোকে মেরে এর রক্ত নারীরা ফেসপ্যাক হিসেবে ব্যবহার করতেন। এছাড়াও এর থেরাপিও নিতেন তারা। শরীরের ফোলাভাব ও ব্যথা দূর করতে জোঁকের থেরাপি নিতেন অনেকে।

আবার এখনকার মতো তখনকার সময়েও নারীদের ফর্সা হওয়ার খুব চল ছিল। বিভিন্ন উপাদান ব্যবহার করতেন ত্বক ফর্সা করতে। জোঁক ব্যবহার হতো সবচেয়ে বেশি। পুরো মুখে জোঁক লাগিয়ে রাখা হত। যেন মুখের রক্ত জোঁক চুষে খেতে পারে। মুখ রক্তশূন্য হয়ে ফ্যাকাসে দেখাতো তখন। ১৮০০ শতকে জার্মানি, ইংল্যান্ডে জোঁক আমদানি রপ্তানি ছিল অনেক বেশি।

ইঁদুর ধরা ছিল মধ্যযুগের আরেকটি দামি পেশা। সেসময়ের মানুষেরা যেহেতু পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা নিয়ে চিন্তিত ছিল না। তাই পুরো বাড়িতে থাকত প্রচুর ইঁদুর। দেখলে যেন মনে হবে ইঁদুরের বাড়িতেই থাকতে এসেছে কয়েকজন মানুষ। রান্নাঘর, শোবার ঘর কোথাও বাকি নেই। সব জায়গায় ইঁদুর আর ইঁদুর। তাই ইঁদুর তাড়াতে নিয়োজিত ছিল একদল কর্মী। যাদের কাজ ছিল এলাকা থেকে ইঁদুর তাড়ানো।

এখানেই শেষ নয়, মধ্যযুগে মানুষই বেশ নোংরা প্রকৃতির থাকায় বাড়িঘর তো দূরের ব্যাপার নিজের শরীরও ঠিকভাবে পরিষ্কার করত না। গোসল তখন আবিষ্কার হয়নি!
স্পেনের রানি ইসাবেল তো জীবনে মাত্র দুইবার গোসল করেন। যেদিন তার জন্ম হয় এবং দ্বিতীয় ও শেষবার তার বিয়ের দিন।

ফ্রান্সে রাজপ্রাসাদকে বলা হয় ‘শাঁতো’। ফ্রান্সের রাজা প্রথম ফ্রাঁসোয়া ফ্রান্সজুড়ে এমন অনেক প্রাসাদ বা শাঁতো গড়েছেন। একেকটা প্রাসাদে শত শত কক্ষ। তবে মজার ব্যাপার হলো, এতো বড় প্রাসাদে ছিল না কোনো বাথরুম।

এখন ছবির মতো এখনকার যে ঝকঝকে ইউরোপ দেখতে পান। তা একসময় ছিল বস্তির মতো। তখনকার ১০ হাজার রাজ প্রাসাদসহ কর্মচারী ও চাকরদের থাকার স্থান সবকিছুই ছিল খুবই অপরিষ্কার।

সে সময় রোমানীয়রা এতোই অলস ছিল যে উঠে গিয়ে বমি করতে পারত না। তারা বার বার খাওয়ার জন্য একবার খাওয়ার পরই বমি করে পেট পরিষ্কার করত। এজন্য একদল কর্মী নিয়োগ দেওয়া ছিল যাদের কাজ ছিল মালিকের বমি সংগ্রহ করা।

আরও পড়ুনঃ জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা গভীর মহাকাশে আলোর সবচেয়ে উজ্জ্বল ঝলকানি দেখে বিস্মিত

দুটি আক্কেল দাঁত তুলে ৯ বছরের শিশুর নাম গিনেস বুকে

Previous article

গ্রাহককে মুখে তুলে আঙুর খাওয়ানো হয় যে রেস্তোরাঁয়

Next article

You may also like

Comments

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *