উদ্যোক্তার গল্পদেশি উদ্যোক্তা রঙিন সুতোয় স্বপ্ন বুনছেন তাসলিমা পারভীন By নিজস্ব প্রতিবেদক July 27, 20221 ShareTweet 1 উদ্যোক্তা জার্নালের বিশেষ আয়োজন ‘উদ্যোক্তা গল্প’-র আজকের পর্বে, নিজের উদ্যোগ নিয়ে কথা বলেছেন তাসলিমা পারভীন। চলুন শুনি তার উদ্যোক্তা জীবনের গল্প। আমি তাসলিমা পারভীন। আমরা চার ভাই বোন। তিন ভাই আর আমি। আমার জন্ম, বেড়ে উঠা, পড়াশোনা সবকিছু ঢাকাতেই। এস.এস.সি ঢাকার একটি মিশনারী স্কুল থেকে। এইচ.এস.সি লালমাটিয়া মহিলা মহাবিদ্যালয় থেকে। অনার্স ও মাস্টার্স করেছি “শিশু বর্ধন ও পারিবারিক সম্পর্ক” বিষয়ে। মাস্টার্স চলাকালীন সময় থেকেই আমার চাকরি জীবন শুরু হয়। স্বামী একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরিরত। আমি দীর্ঘদিন একজন কর্মজীবি নারী হিসেবেই ছিলাম। নিজের পরিচয়ে পরিচিতি লাভ করা এবং নিজে কিছু একটা করার ইচ্ছা অনেকদিন থেকেই ছিলো। কিন্তু নানাবিধ কারনে নিজের জন্য কিছু একটা করা হয়ে উঠে নি। তবে ২০২০ সালে করোনার কারনে আমাকে চাকরি ছাড়তে হয়। অনেক ব্যস্ত আমি একদমই কর্মহীন হয়ে পড়ি। শখের বশে ২০১৭ সালে অনলাইনে “মুখর” নামে একটা বিজনেস পেইজ খুলি। এই শখই আমার প্রয়োজন পূরন এর সঙ্গী হয়। আমার মনে হয় নানান রং এর কাপড় আর রঙিন সুতোর কাজটাই আমি ভালো পারবো। এ থেকেই আমার উদ্যোগ শুরু ও উদ্যোক্তা হয়ে উঠা। ঠিক সেই সময় টায় যুক্ত হই নারী উদ্যোক্তাদের সবচেয়ে বড় প্লাটফর্ম ‘উই’ এর সাথে। ‘উই’তে এসে নতুন করে স্বপ্ন দেখা শুরু করি এবং তা বাস্তবায়নের পথ খুঁজে পাই। ‘উই’ আমাকে শক্তি ও সাহস জুগিয়েছে একজন উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে তৈরী করার জন্য। আমার উদ্যোগের নাম “মুখর”। আমি শাড়ী, থ্রি পিস, বেবী ড্রেস, ম্যাটারনিটি ড্রেস, ফ্যামিলি কম্বো ও ম্যাচিং ড্রেস নিয়ে কাজ করছি। সব ধরনের কাস্টমাইজড ড্রেস, শাড়ী, ফ্যামিলি কম্বো নিয়ে কাজ করি। ২০,০০০ টাকা মূলধন দিয়ে আমি আমার উদ্যোগ শুরু করি। শুরুটা সহজ ছিলো না, বেশ কঠিনই ছিলো। আমাকে অনেক কিছু শিখতে হয়েছে। একজন উদ্যোক্তা হতে হলে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ধৈর্য্য ও সততার সাথে থাকতে হবে চেষ্টা ও আত্মবিশ্বাস। আমি ও আমার বোন মিলে উদ্যোগ সামলাচ্ছি। বর্তমানে আমার কোনো কর্মী নেই, তবে ভবিষ্যতে আরো অনেক বড় করার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের উদ্যোগকে। পড়াশোনা শেষ করার পরপরই বেশিরভাগ শিক্ষার্থীরা চাকরির জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে, কারণ তারা মনে করে চাকরিতে রয়েছে অর্থনৈতিক নিশ্চয়তা। আমি অনেকদিন চাকরি করার পর নিজের উদ্যোগ বেছে নিয়েছি, কারণ আমি মনে করি আমি আমার স্বপ্ন পূরন করতে পারবো। এর সাথে সাথে আমরা ভবিষ্যতে আরো অনেকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারবো আমাদের উদ্যোগের মাধ্যমে। আমার অনলাইন শপের নাম হচ্ছে “মুখর”। ২০২০ সালে আমি আমার উদ্যোগের কাজ শুরু করি। আমার সিগনেচার পন্য হচ্ছে ব্লকের শাড়ি, ফ্যামিলি কম্বো। আমার উদ্যোগের পণ্য আমি আমেরিকাতেও কয়েকবার পাঠিয়েছি। আমার রিপিট কাস্টমারের সংখ্যাই বেশি। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য উপযোগী করে তুলেছেন নাসিমা আক্তার নিশা আপু ‘উই’ প্ল্যাটফর্ম এর মাধ্যমে। ‘উই’ এর কারনে আজ লক্ষ লক্ষ নারী, উদ্যোক্তা হয়ে নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করছেন। কাজ করতে গেলে প্রতিবন্ধকতা থাকবেই। অনলাইন প্ল্যাটফর্ম সম্পর্কে যথেষ্ট পরিমান জ্ঞান আমার ছিলো না, এই বিষয় টাই আমার উদ্যোগ এর একটি বাধা হিসেবে ছিলো। আলহামদুলিল্লাহ সেল মোটামুটি ভালো। বেশি এক্টিভ থাকলে বেশি সেল হয়। আমার কাজে আমার কাস্টমাররা সবসময় সন্তুষ্ট থাকেন। এখন পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি কোনো সহোযোগিতা পাই নি। কখনো এমন সহযোগিতা পেলে তা আমার উদ্যোগ এ সঠিক প্রয়োগ করবো। কাস্টমারদের বিশ্বাস ও সন্তুষ্টি আমার উদ্যোগ এর সবচেয়ে বড় অর্জন। আমার পণ্যের রিপিট কাস্টমারের সংখ্যাই বেশি। আগামী ৫ বছরের মধ্যে “মুখর” একটি ব্র্যান্ড হিসেবে পরিচিতি লাভ করবে এটাই আমার স্বপ্ন। আর এই উদ্যোগের মাধ্যমে আমি অসহায় ও দুস্থ নারীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে চাই।
ই-ক্যাব ইয়ুথ ফোরামের হাত ধরে শান্ত মারিয়াম ইউনিভার্সিটিতে যাত্রা শুরু হতে যাচ্ছে ই-কমার্স ক্লাবের February 8, 20231560 views