কৃষি

লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি পাটের আবাদ হয়েছে টাঙ্গাইলে

0
paat

চলতি মৌসুমে টাঙ্গাইল জেলায় ১৫ হাজার ৬৪২ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু পাটের আবাদ হয়েছে ১৭ হাজার ১৪৭ হেক্টর জমিতে, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্র জানায়, গতবছর পাটের ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকরা এ বছর পাট চাষের দিকে বেশি ঝুঁকেছেন। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও মাটি চাষের উপযুক্ত হওয়ায় পাট চাষে সফল হয়েছেন চাষিরা।

জেলার ১২টি উপজেলায় ১৬ হাজার ৮৮ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছিলো গত বছর। উৎপাদন হয়েছিলো ১ লাখ ৬৯ হাজার ৯৮৯ বেল্ট পাট। চলতি মৌসুমে ১৫ হাজার ৬৪২ হেক্টর জমিতে চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি ১৭ হাজার ১৪৭ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে।

এ বছর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৭৩ হাজার ৭৫০ বেল্ট। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ২ হাজার ৭৪০ হেক্টর, বাসাইলে ৪২৯ হেক্টর, কালিহাতীতে ১ হাজার ১৯৫ হেক্টর, ঘাটাইলে ৯০০ হেক্টর, নাগরপুরে ১ হাজার ৭৫৬ হেক্টর, মির্জাপুরে ১ হাজার ১৬৮ হেক্টর, মধুপুরে ৯১ হেক্টর, ভূঞাপুরে ৪ হাজার ১২৫ হেক্টর, গোপালপুরে ২ হাজার ৯৪০ হেক্টর, সখীপুরে ১৪০ হেক্টর, দেলদুয়ারে ১ হাজার ৪৫৬ হেক্টর ও ধনবাড়ীতে ২১৭ হেক্টর জমিতে পাটের চাষ করা হয়েছে।

কৃষি অফিস ও স্থানীয় কৃষকরা জানায়, টাঙ্গাইলে দেশি, তোষা, মেশতা, রবি-১ জাতের পাটের আবাদ হয়েছে। তবে উচ্চ ফলনশীল তোষা জাতের পাট চাষ বেশি হয়েছে। প্রতি বিঘায় ৬ থেকে ১০ মণ পাট পাওয়া গেছে। পাট বিক্রি হচ্ছে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকায়।

আরও পড়ুনঃ চালের দাম ৮-১০ টাকা বাড়ানো অনুচিত: খাদ্যমন্ত্রী

এবার বর্ষায় নদী নালা খাল বিলে পানি থাকায় পাট জাগ দিতে তেমন কোনো সমস্যা হয়নি। সদর উপজেলার হুগড়া ইউনিয়নের মালতিপাড়া গ্রামের কৃষক হোসেন বলেন, এ বছর আমি দুই বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি। আবহাওয়া ভালো থাকায় পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। দুই বিঘা জমিতে ১২ মণ পাট ও ১ হাজার ২০০ আটি পাট কাঠি পেয়েছি। প্রতি মণ পাট ৩ হাজার ৮০০ টাকা ও প্রতি আটি পাট কাঠি (পাটখড়ি) পাঁচ টাকা দরে বিক্রি করেছি।

এছাড়া কৃষক ছোলমান মিয়া বলেন, আমি কয়েক বছর ধরে পাট চাষ করেছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চলতি মৌসুমে আমার তিন বিঘা জমিতে পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে পাটের দামও গতবছরের তুলনায় বেশি। আশা করি পাটের দাম আরো বাড়বে।

কালিহাতীর এলেঙ্গা হাটে সরেজমিনে দেখা যায়, চাষীরা পাট বিক্রি করতে এসেছেন। ভালো মানের পাট ৪ হাজার টাকা মন দরে বিক্রি হচ্ছে। কালিহাতীর মশাজান গ্রামের কৃষক লিটন মিয়া জানান, এক একর জমিতে পাট চাষ করে ২০ মণ পাট পেয়েছেন। প্রতি মণ ৪ হাজার টাকা করে বিক্রি করছেন। ভালো ফলন হওয়ায় লাভবান হয়েছেন বলে তিনি জানান।

টাঙ্গাইল জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আহসানুল বাশার বলেন, ৩০০ পাট চাষিকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় রবি-১ নামে পাট বীজ উৎপাদন করার জন্য চাষিদের বীজ ও সার দেয়া হয়েছে। চাষিদের যেকোনো সম্যস্যা সমাধানের জন্য কৃষি বিভাগের কর্মীরা মাঠে কাজ করেছে। উৎপাদন ভালো হওয়ায় কৃষক লাভবান হচ্ছে।

বাজার মূল্যেই হবে জমির দলিল

Previous article

৯০% নদীকে অবৈধ দখলমুক্ত করা সম্ভব হয়েছে: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী

Next article

You may also like

Comments

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More in কৃষি