খেলা

শ্বাসরুদ্ধকর জয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন মেসির আর্জেন্টিনা

1
wc1

বিশ্বকাপের শিরোপার জন্য আর্জেন্টিনার অপেক্ষা বহু বছরের। লিওনেল মেসির অপেক্ষাটা আরো বড়। এক জীবনে ফুটবল ক্যারিয়ারের যা জেতার সব জিতেও একটি সোনালি ট্রফির জন্য ক্যারিয়ারজুড়ে অপূর্ণতা ভর করেছিলো তার। মরুর বুকে ধুয়েমুছে গেলো সব অপূর্ণতা। শেষ হলো আর্জেন্টিনার দীর্ঘ অপেক্ষা। অবসান ঘটলো ৩৬ বছরের। রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ের পর টাইব্রেকারে ফ্রান্সকে হারিয়ে লিওনেল মেসির যুগে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হলো আর্জেন্টিনা।

কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালে টাইব্রেকারে ফ্রান্সকে ৪-২ গোলে হারিয়ে বিশ্বকাপ জিতেছে আর্জেন্টিনা। ম্যাচের নির্ধারিত সময়ে দু’দল ছিলো ৩-৩ গোলের সমতায়। দিয়েগো ম্যারাডোনার পর লিওনেল মেসির যুগে এসে নিজেদের তৃতীয় শিরোপার দেখা পেলো আর্জেন্টিনা। দলের জয়ের ম্যাচে জোড়া গোল করেছেন লিওনেল মেসি নিজে। সঙ্গে জালের দেখা পেয়েছেন ডি মারিয়া। ফ্রান্সের হয়ে হ্যাটট্রিক করেছেন কিলিয়ান এমবাপ্পে।

লুইসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে কাতার বিশ্বকাপের ফাইনাল মহারণে লড়াইয়ের আগে ফেভারিটের তকমা ছিল ফ্রান্সের গায়ে। সেটা হওয়াটা স্বাভাবিক। কারণ ৪ বছর আগেই বিশ্বকাপের শিরোপা উঁচিয়ে ধরেছিলো তারা। কিন্তু মূল লড়াইয়ের প্রথমার্ধ বিশ্ব দেখল আর্জেন্টিনার দাপট। কি বল দখল, কি আক্রমণ—আর্জেন্টিনার দাপট ছিল সর্বত্র।

কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধ থেকেই বারবার রং বদলায়। যেখানে ফ্রান্স-আর্জেন্টিনা দু’দলই লড়াই করেছে সমানে সমান। পুরো ম্যাচে ৫৪ ভাগ সময় বল দখলে রেখে ২০বার আক্রমণে যায় আর্জেন্টিনা। যার মধ্যে অনটার্গেট শট ছিলো ১০টি। ম্যাচের প্রথমার্ধে একবারও আক্রমণে যেতে না পারা ফ্রান্স বাকি সময়ে ১০ বার আক্রমণে যায়। তাতেই ঘুরে যায় ম্যাচ। দলকে সমতায় ফিরিয়ে খেলা জমিয়ে তোলেন এমবাপ্পে। কিন্তু টাইব্রেকারে গড়ালে আর্জেন্টিনার সামনে পেরে ওঠেনি ফরাসিরা।

৪-৪-২ ফরমেশনে মাঠে নামা আর্জেন্টিনা ম্যাচের শুরু থেকেই ছিলো আক্রমণাত্মক। আক্রমণে উঠে পঞ্চম মিনিটে নেয় প্রথম শট। তবে অ্যালিস্টারের নেওয়া শট ঠেকিয়ে দিতে ভুল করেননি হুগো লরিস। ১৭তম মিনিটে সুযোগ হাতছাড়া করেন ডি মারিয়া। প্রতিপক্ষের ডি বক্সে বল পেয়ে তিনি মারলেন ক্রসবারের অনেক উপর দিয়ে।

তবে গোলের অপেক্ষা দীর্ঘ হয়নি আর্জেন্টিনার। ম্যাচের বয়স তখন ২১ মিনিট। প্রতিপক্ষের ডি বক্সে বল নিয়ে ঢুকে যান ডি মারিয়া। কিন্তু ওই মুহূর্তে ডি মারিয়াকে পেছন থেকে ফাউল করে বসেন উসমান দেম্বেলে। পেনাল্টির সুযোগ পেয়ে যায় আর্জেন্টিনা।

পেনাল্টির সুযোগ হাতছাড়া করেননি লিওনেল মেসি। সফল স্পট কিকে আর্জেন্টিনাকে ১-০ গোলে এগিয়ে নেন অধিনায়ক। এবারের বিশ্বকাপে এটি মেসির ১২তম গোল। স্পর্শ করলেন ফুটবল কিংবদন্তি পেলেকে। গোল করায় তাদের চেয়ে এগিয়ে কেবল আর চারজন।

আরও পড়ুনঃ শেষ বলের নাটকীয়তায় ভারতের বিপক্ষে সিরিজ জয় টাইগারদের

এগিয়ে যাওয়ার আমেজ শেষ না হতেই ফের গোল উৎসব। এবার পেনাল্টি নয়, নায়ক বনে যান কোপা আমেরিকা জেতানো ডি মারিয়া। ম্যাচের ৩৬ মিনিটে ডি মারিয়ার পা থেকে আসে পরের গোলটি। এখানেও আছেন মেসি। মাঝমাঠে থেকে বল এগিয়ে দেন তিনি। পাস পেয়ে আলভারেজ বাড়ান ম্যাক অ্যালিস্টারকে। তার পাস বক্সে বা দিক থেকে চোখ ধাঁধানো শট নেন ডি মারিয়া। ফ্রান্স গোলকিপার হুগো লরিসের কিছুই করার ছিলো না।

আর্জেন্টিনা ২-০ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায়। বিরতি থেকে ফিরেও আক্রমণে দাপট ছিলো তাদের। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের শেষ ১০ মিনিটে খেলা ঘুরিয়ে দিলেন এমবাপ্পে। ৮০তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে করেন প্রথম গোল, পরের মিনিটেই দিলেন দ্বিতীয় গোল। এলোমেলো হয়ে যায় আর্জেন্টিনা।

দ্বিতীয়বার জালে বল পাঠিয়ে টুর্নামেন্টে সপ্তম গোল স্পর্শ করেন এমবাপ্পে। মেসিকে ছাপিয়ে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতা বনে যান তিনি। ফ্রান্স সমতায় ফিরলে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে জমে ওঠে লড়াই। আবারও ত্রাতা হলেন মেসি। ১০৮তম মিনিটে গোল করে আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে নেন রেকর্ডবারের বর্ষসেরা ফুটবলার।

কিন্তু না, শেষ হয়েও হলো না! আবারও দৃশ্যপটে হাজির এমবাপ্পে। এবার পেনাল্টি থেকে তুলে নেন হ্যাটট্রিক। ম্যাচের স্কোর দাঁড়ায় ৩-৩। ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানেই জয়ের হাসি হাসে আর্জেন্টিনা। টাইব্রেকারে গোল ঠেকিয়ে দিয়ে বিশ্বকাপের নায়ক বনে যান আর্জেন্টাইন গোলকিপার মার্টিনেজ। উচ্ছ্বাসে ভাসে আর্জেন্টিনা।

নিজের একটা পেস্ট্রি শপের স্বপ্ন দেখেন উদ্যোক্তা উম্মে হানি

Previous article

ইরানে গ্রেফতার হয়েছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী তারানেহ আলিদুস্তি

Next article

You may also like

1 Comment

  1. […] আরও পড়ুনঃ শ্বাসরুদ্ধকর জয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন মে… […]

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More in খেলা