জাতীয়

সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধায় সিক্ত হলেন সাংবাদিক পীর হাবিবুর রহমান

0
image 29530 1644152262

বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও সাংবাদিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষের ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধায় সিক্ত হলেন সিনিয়র সাংবাদিক ও বাংলাদেশ প্রতিদিনের নির্বাহী সম্পাদক পীর হাবিবুর রহমান।

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২: আজ দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে সাংবাদিক পীর হাবিবুর রহমানের মরদেহে শ্রদ্ধা জানান জাতীয় প্রেসক্লাবের পক্ষে সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন ও সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান।

এসময় এডিটরস গিল্ড বাংলাদেশ এর পক্ষে সংগঠনের সভাপতি ৭১ টিভির সিইও মোজাম্মেল বাবু,  বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ এবং যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম প্রয়াতের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

এছাড়াও বিএফইউজের সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, সহ-সভাপতি ইশতিয়াক রেজা, বিএফইউজের মহাসচিব দীপ আজাদ, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপুসহ এ সময় বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও সাংবাদিক সংগঠন তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ‘এই বিদায় শুধু আনুষ্ঠানিকতামাত্র, তিনি আমাদের মনে থাকবেন আজীবন। তিনি লেখার ক্ষেত্রে কাউকে তোয়াক্কা করতেন না, তার লেখায় দেশ ও জাতি উপকৃত হয়েছে। দেশ একজন সাহসী সাংবাদিককে হারিয়েছে। তার কিছু লেখনি আছে, সেটা প্রেসক্লাব প্রকাশ এবং সংরক্ষণ করবে।’

প্রয়াত পীর হাবিবের ছেলে ব্যারিস্টার অন্তর বলেন, ‘বাবা ছিল আমাদের পরিবারের ছায়া, এই ছায়া চলে গেল। ছোট বেলায় বাবার সঙ্গে অনেক আসতাম এখানে। আমার সেগুলো মনে পড়ছে। বাবা বলতেন আমার টাকার দরকার নেই, আমি মারা গেলে মরদেহ শহীদ মিনারে যাবে, প্রেসক্লাবে যাবে। বাবার ইচ্ছামত সেটা হয়েছে। বাবা অনেক কিছুই লিখতেন, তারপরও সীমাবদ্ধতা ছিল। বাবা মাথা উঁচু করে বেঁচেছেন, গেলেন মাথা উঁচু করে। আমার বাবার জন্য দোয়া করবেন।’

এর আগে জাতীয় প্রেসক্লাবে তার দ্বিতীয় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় তার দীর্ঘদিনের সাংবাদিক সহকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। জাতীয় প্রেসক্লাবে তার মরদেহ এসে পোঁছালে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। তার দীর্ঘ দিনের সহকর্মীরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। পীর হাবিবকে শেষ বারের মতো বিদায় জানাতে প্রেসক্লাবে সহকর্মীদের দীর্ঘ সারি দেখা যায়।

এরপর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি চত্ত্বরে পীর হাবিবের তৃতীয় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, ডিআরইউ সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু, সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম হাসিবসহ  ইউনিটির অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ও তার দীর্ঘদিনের সহকর্মীরা।
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, পীর হাবিব সাংবাদিক জগতের একজন পথিকৃৎ।

তিনি এত অকালে যে চলে যাবেন, যুদ্ধ শেষ না করে যে তিনি চলে যাবেন, ভাবতেও পারিনি। তিনি ছিলেন কঠিন কলমযোদ্ধা, গণতন্ত্রের জন্য, মানুষের জন্য, অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির জন্য এবং রাষ্ট্রবিরোধীদের বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন সোচ্চার কলমযোদ্ধা।

তিনি গণমানুষের পক্ষের মানুষ ছিলেন, তিনি সত্যসন্ধানী ছিলেন। বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, একসাথে আমরা কাজ করেছি। দু’জন দুই অঙ্গনে  কাজ করেছি। সব বিবেচনায় আজ একটি বেদনার দিন পার করছি আমরা, সবাই শোকে আচ্ছন্ন।

জানাজা শেষে সাংবাদিক পীর হাবিবের মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য ও সিলেট বিভাগের সাংবাদিকসহ সর্বস্তরের মানুষ।

এর আগে ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য তার মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হয়। এসময় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দলের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, আফজাল হোসেন, শফিউল আলম নাদেল, পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, শিক্ষা সম্পাদক শামসুর নাহার চাপা, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিষ্টার বিপ¬ব বড়–ুয়া, উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কেন্দ্রীয় সদস্য আজিজুস সামাদ আজাদ ডন, জাসদ সভাপতি ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এমপি, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, আমরা মুক্তিযাদ্ধা সন্তান, বাংলাদেশ আবৃত্তি পরিষদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে মাহবুবুল আলম হানিফ বলেন, দেশের প্রতিটি সঙ্কটে লেখনীর মাধ্যমে সমাধানের কাজ করে গেছেন পীর হাবিবুর রহমান। হাসানুল হক ইনু বলেন, তিনি অনেক বরেণ্য সাংবাদিক ছিলেন। সাংবাদিকতায় তিনি ছিলেন অকুতোভয়। তার মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত।

ডিআরইউতে জানাজা শেষে তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় তার দীর্ঘদিনের কর্মস্থল বাংলাদেশ প্রতিদিন অফিসে। সেখান থেকে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে জন্মস্থান সুনামগঞ্জে।

সোমবার দুপুর ১২টায় সুনামগঞ্জ পৌর শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা হবে পীর হাবিবুর রহমানের মরদেহ। বাদ জোহর সুনামগঞ্জ কেন্দ্রীয় মসজিদে এবং নিজ গ্রাম মাইজবাড়ীতে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে পিতা-মাতার কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন পীর হাবিবুর রহমান।

শনিবার বিকেল ৪টায় বরেণ্য সাংবাদিক পীর হাবিবুর রহমান শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। এরপর তার মরদেহ উত্তরার বাসায় নেয়া হয়। পরে বাদ এশা উত্তরা ৪ নম্বর সেক্টরের পার্ক মসজিদে প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

রেলওয়ের জন্য ৪২০টি ব্রডগেজ ওয়াগন সংগ্রহে চুক্তি স্বাক্ষর

Previous article

রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে নাম চাইবে সার্চ কমিটি

Next article

You may also like

Comments

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *