প্রাণিবৈচিত্র্য

সাপের বিষ থেকে মুক্তি এক ট্যাবলেটেই

0
snkv

এ যেন কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা! বিষে মজুত মারণাস্ত্রকে অকেজো করতে এই পথেই হাঁটছে চিকিৎসাবিজ্ঞান। বিষের চরিত্র বুঝে এমন এক ট্যাবলেট তৈরি করা হয়েছে যা সর্পদষ্টার প্রাণনাশের ঝুঁকি অনেকটাই কমিয়ে দেবে।

এমনটাই দাবি অন্তত চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের। তাদের বক্তব্য, সর্প দংশনের পর রোগীকে দ্রুত এই ওষুধ খাইয়ে দিলে বিষক্রিয়ায় অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিকল হওয়ার সম্ভাবনা কমতে শুরু করবে। চিকিৎসার জন্য মিলবে বাড়তি সময়। এমনই ‘ওয়ান্ডার ড্রাগ’ এর ট্রায়াল শুরু কলকাতা, পার্ক সার্কাসের ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। নেতৃত্বে হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগ।

অ্যান্টিভেনাম থাকার পরেও কেনো প্রয়োজন ট্যাবলেটের? বাংলার ঝোপঝাড়ে চার সাপের প্রভাব মারাত্মক। কেউটে, কালাচ, গোখরা ও চন্দ্রবোড়ার মতো বিষধরের কামড়ে মৃত্যু গা সওয়া। সময়মতো অ্যান্টিভেনাম দিয়েও বাঁচানো যায় না আক্রান্তদের। সর্প বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মৃত্যুর নিশ্চিত হানার নেপথ্যে সাপের বিষের চরিত্র। যা কিনা বদলে যায় এলাকা অনুযায়ী। যে কারণে স্থানীয় সাপের বিষ সংগ্রহ করে অ্যান্টিভেনাম তৈরির উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। তারই মধ্যে এই ট্যাবলেটের ট্রায়াল।

বিজ্ঞানীদের পর্যবেক্ষণ, ট্যাবলেটে রয়েছে মেটাজিনসিন গ্রুপের মেটালোপ্রোটিনেজ ইনহিবিটর, যা জিঙ্কের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার প্রতিযোগিতায় সাপের বিষ অথবা ভেনামে মজুত মেটালোপ্রোটিনেজ এনজাইমকে শরীরে কাজ করতে দেয় না। এই ধরনের ওষুধ হল ব্যাটিমাস্টেট ও মারিমাস্টেট।

এছাড়া, ভারেসপ্লাডির মতো ইনডোল যৌগ ভেনামের ফসফোলাইপেজকে এরাকিডনিক অ্যাসিড সৃষ্টিতে বাধা দেয়। ফলে শরীরে প্রোস্টাগ্ল্যানডিন, লিউকোট্রাইনের মতো প্রদাহ সৃষ্টিকারী যৌগ তৈরি হতে পারে না। এর জেরে শরীরে কিছুটা হলেও বিষের তীব্র ক্ষতিকর পরিণতি থেকে রেহাই মেলে। নয়া এই ওষুধের নাম ভারেসপ্লাডিব।

ইতিমধ্যেই এই ওষুধের প্রয়োগ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। একদল বিশেষজ্ঞের দাবি, এই ওষুধ সর্পরোগ চিকিৎসার প্রোটোকল বিরোধী। কারণ, জাতীয় প্রোটোকল অনুযায়ী সর্পদংশনের পর রোগীকে দ্রুত এভিএস দিতে হয়। সাপে কাটার ‘হান্ড্রেড রুল’ অনুযায়ী ১০০ মিনিটের মধ্যে। কিন্তু এই ট্যাবলেট দিতে হবে এভিএস দেওয়ার আগে। অর্থাৎ ট্যাবলেট দেওয়ার জন্য বারুইপুর, নলমুড়ি, ক্যানিংয়ের রোগীদের পার্ক সার্কাসে নিয়ে আসতে হবে। যা অত্যন্ত ঝুঁকিবহুল হতে পারে।

ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল ফ্যাসিলিটেটর স্নেহেন্দু কোনার জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই সুন্দরবন, বারুইপুর, নলমুড়ি, ক্যানিং প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। ট্রায়াল চলাকালীন সেখান থেকেই রোগী আসবেন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে। ট্রায়ালে যে ১০০জন অংশ নেওয়ার কথা তাঁদের সকলকেই এভিএস দেওয়া হবে। তবে একটা অংশকে দেওয়া হবে শুধু ট্যাবলেট। পর্যবেক্ষণ করে দেখা হবে শুধু অ্যান্টিভেনাম আর ট্যাবলেট প্লাস অ্যান্টিভেনাম, বিষ ঠেকাতে কার ক্ষমতা বেশি। ওই ট্যাবলেটের ফেজ ওয়ান এবং ফেজ টু ট্রায়াল হয়েছে পাশ্চাত্যে। দেখা গিয়েছে কার্যকারিতা ৮০ শতাংশ।

সূত্র: টাইমস নাউ

ফ্রিতে তাজমহল দেখার সুযোগ!

Previous article

চিত্রনায়িকা শিলা এবার লেখিকা

Next article

You may also like

Comments

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *