কৃষিসারাদেশ

সারাদেশে যাচ্ছে জয়পুরহাটের সজিনা

2
sojina

প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না থাকায় জয়পুরহাট জেলায় এবার সজিনার বাম্পার ফলন হয়েছে। নিজ জেলার চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। এতে আর্থিক ভাবেও লাভবান হচ্ছেন জেলার কৃষকরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জয়পুরহাট জেলায় এবার ২ হাজার ১শ হেক্টর জমিতে সজিনা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হলেও চাষ হয়েছে ২ হাজার তিনশ হেক্টর জমিতে। এতে সজিনার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১০ হাজার ৭শ মেট্রিক টন।

উল্লেখ্য জেলার পাঁচ উপজেলাতেই বিশেষ করে সদর উপজেলার মোহাম্মাদাবাদ, বম্বু, ভাদসা, দোগাছী, জামালপুর, চকবরকত, ধলাহার ও পাঁচবিবি উপজেলার আয়মারসুলপুর, মোহাম্মদপুর, আওলাই, ধরঞ্জি, বাগজানা ও কুসুম্বা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় বাড়ির পাশের অনাবাদি ও পতিত জমিতে সাধারণ চৈতালি সজিনার পাশাপাশি বারোমাসি সজিনারও চাষ হয়েছে। এছাড়াও কালাই উপজেলার মাত্রাই, উদয়পুর, পুনট, জিন্দারপুর ও আহম্মেদাবাদ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় অকৃষি বা পতিত জমিতে হাইব্রিড, বারোমাসি ও দেশী জাতের সজিনার চাষ হচ্ছে।

বসতবাড়ির আশে পাশে, পুকুর পাড়ে, ছাদে ও হাসপাতাল, স্কুল, কলেজের মাঠে এবং রাস্তার দু’পাশে অকৃষি বা পতিত জমিতে পুষ্ঠিগুণে ভরপুর ও আশঁজাতীয় সজিনার সারি সারি গাছগুলো এখন সজিনার ভারে ন্যুয়ে পড়েছে। জেলায় পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ সজিনা চাষ দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে। এখানকার সজিনা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হয়ে থাকে বলে জানান স্থানীয় কৃষক নাজমুল হোসেন।

নতুনহাটের পাইকারী ক্রেতা আইয়ুব আলী জানান, জয়পুরহাটের চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ নাটোর, খুলনা, চূয়াডাঙ্গা, যশোর, ভোলা জেলায় পাঠানো হচ্ছে। এতে পারিবারিক চাহিদা মিটানোর পাশাপাশি সজিনা বিক্রি করে অনেকেই অর্থিকভাবেও লাভবান হচ্ছেন। বাজারে ওঠা প্রথম দিকে আগাম জাতের ও বারোমাসি সজিনা ২০০ টাকা কেজি বিক্রি হলেও বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি। এবার সজিনার ভালো দাম পেয়ে কৃষকরাও খুশি।

আরও পড়ুনঃ চট্টগ্রামে মাসব্যাপী শুরু হলো জামদানী ও ক্ষুদ্র শিল্প মেলা

ইতোমধ্যেই সজিনা চাষ অর্থকরি ফসল হিসেবে সকলের কাছে বিবেচিত হচ্ছে। প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না থাকায় এবার সজিনার বাম্পার ফলন হয়েছে বলে জানান কৃষকরা। সদর উপজেলার ধলাহার এলাকার সজিনা চাষি মো: রফিকুল ইসলাম বলেন, বাড়ির সামনে রাস্তার দু’ধারে ১৫টি সজিনার গাছ লাগানো হয়েছিলো। গত বছর ওইসব সজিনার গাছ থেকে প্রায় ৮ মণ সজিনা পেলেও এবার ৯ মণ সজিনা বিক্রি করা সম্ভব হয়েছে। এবার সজিনার বাম্পার ফলন পেয়ে খুশি বলে জানান তিনি।

জয়পুরহাটের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা: মনিরুজ্জামান মানিক বলেন, সজিনা পুষ্ঠিগুণে ভরপুর একটি ডাটা জাতীয় সবজি। সজিনার মধ্যে ভিটামিন-এ ও সি আছে। এটি মানব দেহে কোলেষ্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। সজিনা উচ্চরক্ত চাপ ও ডায়াবেটিস জনিত রোগীদের জন্য বিশেষ উপকারী। তাছাড়া সজিনার পাতাও শাক হিসেবে খাওয়া যায়। এটিও প্রচুর পুষ্টি গুণাগুন সমৃদ্ধ।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ রাহেলা পারভীন বলেন, সজিনা একটি পরিবেশবান্ধব ও অর্থকরি আশঁজাতীয় সবজি। এবার জয়পুরহাটে সজিনার বাম্পার ফলন হয়েছে এবং জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের অন্যান্য জেলায় যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি আরো জানান, এটি বসতবাড়ির আশপাশের অনাবাদি ও পতিত জমিতেও চাষ করা যায়। সজিনা চাষে তেমন খরচ লাগে না। বাজারে দামও ভালো পাওয়া যায়। সজিন গাছের তেমন কোনো রোগ-বালাই নেই বললেই চলে। একটু পরিচর্যা করলেই অনেক ভালো ফলন পাওয়া যায় বলে জানান তিনি।

এবার উল্কাপিণ্ড থেকে তৈরি হলো ব্যাগ

Previous article

সব বিশ্ববিদ্যালয়ে একক ভর্তি পরীক্ষা হবে আগামী বছর থেকে : শিক্ষামন্ত্রী

Next article

You may also like

2 Comments

  1. […] আরও পড়ুনঃ সারাদেশে যাচ্ছে জয়পুরহাটের সজিনা […]

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More in কৃষি