খবরজাতীয়শীর্ষ সংবাদ

সার্বজনীন পেনশনের ব্যবস্থা করছে সরকার

0
সার্বজনীন পেনশনের ব্যবস্থা করছে সরকার

সরকারি, আধা-সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা চাকরিজীবীদের পাশাপাশি দেশের সব কর্মক্ষম মানুষকে পেনশনের আওতায় আনতে নতুন একটি আইন প্রস্তাব করেছে সরকার।

সোমবার জাতীয় সংসদে ‘সার্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা বিল-২০২২’ নামে একটি আইনের খসড়া সংসদে উত্থাপন করেছে সরকার। সংসদে উত্থাপনের পর এখন বিলটি অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটিতে যাবে। সেখানে যাচাই বাছাইয়ের পর বিলটি সংসদে অনুমোদন দেয়া হলে আইনে পরিণত হবে।

এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, আগামী এক বছরের মধ্যেই সরকার এই পেনশন ব্যবস্থা চালু করতে চায়।

বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারে সবার জন্য পেনশন চালু করার অঙ্গীকার ছিল। এবছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৬০ বছরের বেশি বয়সী নাগরিকদের জন্য সার্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালুর বিষয়ে তাগিদ দেন। এর আগে শুধুমাত্র সরকারি, আধা-সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা চাকরিজীবীরা অবসরের পর পেনশন সুবিধা পেতেন।

সার্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা বিল-২০২২’এর খসড়া থেকে জানা যাচ্ছে, প্রথমে একটি জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ গঠন করা হবে। একজন চেয়ারম্যান ও চারজন সদস্যকে নিয়ে গঠিত সেই কর্তৃপক্ষের আওতায় সার্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু হবে।

জাতীয় পরিচয়পত্রের ভিত্তিতে ১৫ থেকে ৫০ বছর বয়সী নাগরিকরা এই স্কিমে অংশ নিতে পারবেন। এমনকি বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি নাগরিকরাও অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন।

সরকার প্রজ্ঞাপন জারি না করা পর্যন্ত সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সার্বজনীন পেনশন ব্যবস্থার বাইরে থাকবে। এ ধরনের চাকরিজীবীরা এর মধ্যেই অবশ্য সরকারিভাবে পেনশন সুবিধা পেয়ে থাকেন। প্রাথমিকভাবে সার্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্তি ঐচ্ছিক থাকলেও পরবর্তীতে বাধ্যতামূলক হতে পারে।

কমপক্ষে ১০ বছর চাঁদা প্রদান করলে পেনশন সুবিধা পাওয়ার যোগ্যতা হবে। চাঁদা দাতার বয়স ৬০ বছর পূর্তিতে পেনশন তহবিলে জমা ও মুনাফার বিপরীতে তিনি পেনশন পাবেন। ইলেকট্রনিক ফান্ড ব্যবস্থাপনায় গ্রহীতার কাছে পেনশন পৌঁছে দেয়া হবে। প্রত্যেক চাঁদা দাতার জন্য আলাদা আলাদা পেনশন হিসাব থাকবে। চাকরিজীবীরা চাকরি পরিবর্তন করলেও নতুন করে হিসাব খুলতে হবে না। নতুন কর্মস্থলের বিপরীতে তাদের আগের হিসাবই পরিচালিত হবে।

পেনশন কর্তৃপক্ষ সর্বনিম্ন চাঁদার হার নির্ধারণ করে দেবে। এই চাঁদা মাসিক ও ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে, অগ্রিম বা কিস্তি আকারে জমা দেয়া যাবে। তবে চাঁদার হার কতো হবে, তা এখনো নির্ধারিত হয়নি। কোন কারণে মাসিক চাঁদা জমা দিতে দেরি হলে জরিমানা হবে। পরবর্তীতে জরিমানার টাকা সহ মাসিক চাঁদা জমা দিয়ে পেনশন হিসাব সচল রাখতে হবে।

পেনশনারগন আজীবন, অর্থাৎ মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত পেনশনের সুবিধা পাবেন। পেনশনে থাকাকালে ৭৫ বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই মৃত্যু হলে, তার নমিনি অবশিষ্ট সময় (মূল পেনশনারের ৭৫ বছর পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত) মাসিক পেনশন পাবেন। পেনশন তহবিলে অন্তর্ভুক্ত হয়ে চাঁদা দেয়া শুরু করে ১০ বছর পার হওয়ার আগেই কেউ মারা গেলে, তার সব জমা টাকা মুনাফাসহ তার নমিনিকে ফেরত দেয়া হবে।

পেনশন তহবিলে জমা দেয়া টাকার ৫০ শতাংশ পর্যন্ত চাঁদা দাতা ঋণ আকারে উত্তোলন করতে পারবেন। তবে সেজন্য ফি দিতে হবে। পরবর্তীতে ফিসহ মূল টাকা আবার পেনশন তহবিলে ফেরত দিতে হবে। পেনশন তহবিলে যে টাকা জমা দেয়া হবে, সেজন্য কর রেয়াত পেতে পারে। মাসিক পেনশন হিসাবে পাওয়া টাকাও করমুক্ত আয় থাকবে।

সার্বজনীন পেনশন পদ্ধতিতে সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান অংশ নিতে পারবে। সেক্ষেত্রে কর্মী ও প্রতিষ্ঠানের চাঁদার অংশ জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করে দেবে। নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য পেনশন তহবিলে চাঁদার একটি অংশ সরকার অনুদান হিসাবে দেবে।

প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে, সরকারি অনুদান, নাগরিকদের চাঁদা, বিনিয়োগকৃত অর্থের মুনাফা, প্রতিষ্ঠানসমুহের অংশগ্রহণের চাঁদা, ইত্যাদি নিয়ে পেনশন তহবিল গঠিত হবে। এক বা একাধিক ব্যাংক, পোস্ট অফিস সমূহ এই পেনশন তহবিলের চাঁদা আদায়ের সম্মুখ অফিস হিসাবে কাজ করবে।

 

দেশকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের বাইরে নিতে দেবো না: মোস্তফা জব্বার

Previous article

সফল ব্যবসায়ী হিসেবে নতুনদের আইকন হতে চান পপি হিমাদ্রি

Next article

You may also like

Comments

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More in খবর