উদ্যোক্তার গল্পদেশি উদ্যোক্তা

হাউজ ওয়াইফ হওয়াটাই যেনো দোষেরঃ শান্তু হাসানাত

0
WhatsApp Image 2022 06 27 at 9.57.53 PM

উদ্যোক্তা জার্নালের বিশেষ আয়োজন ‌‘উদ্যোক্তা গল্প’-র আজকের পর্বে, কথা হলো উদ্যোক্তা শান্তু হাসানাতের সঙ্গে। আজ শুনবো তার উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার গল্প।

আমি শান্তু হাসানাত, জন্ম ঢাকাতে হলেও পড়াশুনা শেষ করেছি চট্টগ্রামে। তারপর বিয়ের পর থেকে আবার ঢাকায়।

আসলে মানুষের জীবনে কোনো একটা সময় আসে যখন সে বুঝতে শিখে তার নিজের একটা অস্তিত্ব দরকার। নিজের একটা পরিচিতি দরকার যেটা একান্ত শুধু নিজের। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রী নিয়ে, ভালো সাবজেক্ট নিয়ে পড়েও অনেক সময় শুনতে হয়েছে তুমি হাউজ ওয়াইফ। এটা যেনো অনেক দোষের কাজ। সংসার কে সুন্দর করা, বাচ্চাদেরকে মানুষের মতো মানুষ করা এসব কোনো কৃতিত্ব তোমার না।

তাই যখন সময় এবং সুযোগ আসলো, তখন এই মধ্য বয়সে এসেই শুরু করে দিলাম নিজের জন্য কিছু করার। সেই থেকেই আমার উদ্যোক্তা জীবনের শুরু।

আমি যেহেতু জুয়েলারি আর ব্যাগের বিষয়টা ভালোই বুঝি, তাই এই দুইটা নিয়েই কাজ শুরু করলাম। আমার পেইজের নাম “Wishing Star by Shantu” (উইশিং স্টার বাই শান্তু)। আমার পণ্য মানুষ ঘরে বসেই অনলাইনে অর্ডার দিয়ে পেয়ে থাকে।

শুরুটা ছিলো আমার জন্য অনেক চ্যালেঞ্জের। এর কারণ আমার উদ্যোক্তা জীবনের শুরুটা হয়েছে মধ্য বয়সে। যেই বয়সে মানুষ নিজেকে যেকোনো ক্ষেত্রে প্রায় গুছিয়ে নেয়। আমি জানতাম না, কি করে আমার প্রোডাক্ট আমি মানুষের কাছে পৌঁছাবো। কিন্তু যখন কাজে নেমে পড়লাম তখন দেখলাম সব ভয়কে আমি জয় করতে শিখে গেছি।

খুব বেশি মূলধন নিয়ে আমি আমার ব্যবসাটা শুরু করি নি। কিন্তু খুব মানসম্মত পণ্য নিয়ে আমি কাজ শুরু করি।

একজন উদ্যোক্তা হতে হলে আমার মনে হয় সবার আগে প্রয়োজন, মনের জোর এবং কাজ করার ইচ্ছা। তারপরের ধাপগুলো কেমন করে যেনো নিজে নিজেই হাতের কাছে ধরা দেয়। যদিও এটা একান্ত আমার নিজের কথা।

আমি নিজে, আমার মেয়ে এবং ছেলে আমার সাথে পেইজের কাজ দেখাশুনা করে। আর পেপারফ্লাই এর মাধ্যমে আমি পণ্য ডেলিভারি দিয়ে থাকি। আমি আগেই বলেছি সংসারের নানা ঝামেলায় আমার চাকরি করা হয়নি। তাই এমন একটা কাজ আমি বেছে নিয়েছি যার ফলে আমি সংসার এবং ব্যবসা দুটোই একসাথে করতে পারছি।

আমার লক্ষ্য হলো একটা ভালোমানের পণ্য ক্রেতার হাতে তুলে দেওয়া, আমি নিজে যেটা ব্যবহার করি সাধারণত সেই ধরনের পণ্যই বেশি আমার পেইজের জন্য নির্বাচন করি।

বর্তমানে আমাদের দেশের পেক্ষাপটে যদি বিবেচনা করি, তাহলে বলবো এখন নারীরা উদ্যোক্তা হিসেবে বেশ এগিয়ে যাচ্ছে। নিজেদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি হওয়ার ফলে যেকোনো বাধাকে অতিক্রম করার মানসিকতা এখন অনেক টাই গড়ে উঠেছে।

আলহামদুলিল্লাহ নতুন উদ্যোক্তা হিসেবে আমি আমার সেল নিয়ে খুবই খুশি। তবে প্রতিটি মানুষেরই তো স্বপ্ন থাকে আরো বড় কিছু করার, সেই হিসাবে আমিও আমার এই পেইজ টা কে একটা ব্র্যান্ড হিসাবে পরিচিত করতে চাই।

ইনশাআল্লাহ ৫ বছর পর আমার “Wishing Star by Shantu” অনেক তারার ভিড়ে নিজের অস্তিত্ব কে জানান দিবে সগৌরবে। এটাই আমার স্বপ্ন, ইচ্ছা, সাধনা অর্থাৎ জীবনের বেঁচে থাকার একটা গুরুত্বপূর্ণ অবলম্বন।

পরিবারের সহযোগিতায় এগিয়ে চলছেন সাবরিনা ইয়াসমিন

Previous article

বড় ভাইয়ের সহযোগিতায় উদ্যোক্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন নিশি আক্তার

Next article

You may also like

Comments

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *