উদ্যোক্তার গল্পদেশি উদ্যোক্তা হোমমেইড খাবার নিয়ে উদ্যোগ শুরু করেন সুতপা পাল By নিজস্ব প্রতিবেদক February 1, 20220 ShareTweet 0 উদ্যোক্তা জার্নালের বিশেষ আয়োজন ‘উদ্যোক্তা গল্প’-র আজকের পর্বে, নিজের উদ্যোগ নিয়ে কথা বলেছেন সুতপা পাল। চলুন শুনি তার উদ্যোক্তা জীবনের গল্প। আমি সুতপা পাল। বর্তমানে ঢাকায় বসবাস করছি। আমার জন্মস্থান লক্ষীপুর জেলা সদরে। ওখানেই বেড়ে ওঠা, পড়াশোনা। লক্ষীপুর সরকারি কলেজ থেকে গ্র্যাজুয়েশন কমপ্লিট করার পর, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ থেকে সমাজ বিজ্ঞানে মাস্টার্সে ভর্তি হই। পড়া চলাকালীন আমি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই। তারপর পড়ালেখা শেষ হতে না-হতেই সংসারের বেড়াজালে নিজেকে হারিয়ে ফেলছিলাম। নিজের মনের ভেতর লুকিয়ে থাকা সুপ্ত বাসনা থেকেই আজ আমার এই উদ্যোক্তা জীবনের পথ চলা। আমার মা-বাবা সবসময় চাইতেন আমি নিজের পায়ে দাঁড়াই। নিজের একটা পরিচয় তৈরি করি। আমি মনে করি সব মেয়েদেরই এটা দরকার। সংসার জীবনের অনেকগুলো বছর কেটে গেলেও নিজেকে নিয়ে ভাবার যে একটু অবকাশ পেয়েছি এটাই আমার কাছে অনেক বড়। ২০২০ এর ডিসেম্বর থেকে আমার উদ্যোক্তা জীবনের পথ চলা শুরু। আমার মেয়ের সহযোগিতায় আমি আমার উদ্যোক্তা জীবন শুরু করেছি। প্রথম দিকে নানা কথার সম্মুখীন হলেও এখন সবার সার্পোট পাচ্ছি। পরিবারের এবং আমার মায়ের সহযোগিতা না থাকলে এই পর্যন্ত আসা অতটা সহজ হতোনা। যেহেতু প্রথম দিকে চাকরির কোনো চেষ্টা করিনি, তাই এত বছর পরে এসে কোনো অভিজ্ঞতা ছাড়া চাকরি পাওয়াটা অত সহজ ছিলোনা। আবার চেয়েছিলাম এমন কিছু করতে যা আমি ঘরে বসেই করতে পারবো। সেই ভাবনা থেকেই অনলাইনে নিজের উদ্যোগ নিয়ে কাজ শুরু করলাম। আমি রান্না করতে খুব ভালোবাসি। তাই রান্না নিয়েই পথচলা শুরু করলাম। এছাড়া বেকিং করতেও আমার খুব ভালো লাগে। তাই ভবিষ্যতে বেকিং নিয়েও কাজ করার ইচ্ছে আছে। কোনো কাজ শুরু করার আগে সেই কাজ টা সম্পর্কে ভালোভাবে জ্ঞান থাকাটা ভীষণ জরুরি। তবেই সেই কাজ সফলভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। আমি হোমমেইড বিভিন্ন খাবার ও কাস্টমাইজ খাবার নিয়ে কাজ করছি। আমার উদ্যোগের নাম Tasty and Yummy। প্রায় সব ধরনের খাবার আমার প্রতিষ্ঠানে পাওয়া যায়। বলতে পারেন এক ছাদের তলায় সব কিছু। আমি আমার প্রতিষ্ঠানের সমস্ত খাবার নিজে হাতে তৈরি করি। বর্তমানে আমার প্রতিষ্ঠানে একজন কর্মী আছে। যেহেতু আমার প্রতিষ্ঠান টা এখনো অনেক ছোট তাই আমি আমার বেশিরভাগ কাজ একা হাতেই করে থাকি। আমার উদ্যোগের আরো একজন শেয়ার হোল্ডার বলেন বা সহযোগী বলেন সে হলো আমার মেয়ে। ও না থাকলে তো আমি আমার উদ্যোগই শুরু করতে পারতাম না। আমি উদ্যোগ শুরু করেছি ১ বছর হলো। উদ্যোগ শুরু করার ৩ দিনের মাথায় আমার প্রথম অর্ডার আসে। সেই থেকে আজ পর্যন্ত আমি ২০০+ অর্ডার সার্ভ করেছি। তার জন্য মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা। আমার উদ্যোগের প্রথম এবং প্রধান মুলধন হলো আমার সততা, একনিষ্ঠতা, ধৈর্য্য, কাজের প্রতি একাগ্রতা, ভালোবাসা ও নিজের কাজের প্রতি দায়বদ্ধতা। আর আমি নিজের অভিজ্ঞতা থেকে মনে প্রানে বিশ্বাস করি একজন উদ্যোক্তা হতে গেলে এই গুণগুলো অবশ্যই থাকা দরকার। আমি মনে করি পড়ালেখা শেষ করার পর চাকরিই করতে হবে এমন মনোভাব না রেখে ছাত্রজীবন থেকেই পড়ালেখার পাশাপাশি যেকোনো কাজ শুরু করা উচিত। যে কাজে নিজের ভালোলাগা, ভালোবাসা মিশে থাকবে। আমার প্রতিষ্ঠানের সবচেয়ে বড় অর্জন হলো সবার ভালোবাসা এবং আমার কাজের প্রতি সকলের আত্মবিশ্বাস। যার ফলশ্রুতিতে রিপিট কাস্টমার ও তার সাথে রিপিট কাস্টমারদের হাত ধরে নতুন কাস্টমারের আগমন। এটা আমার সবচেয়ে বড় অর্জন বলে আমি মনে করি, হোক সেটা সংখ্যায় কম। আমি আমার সততা দিয়ে এইটুকু অর্জন করেছি এতে আমি ভীষণ খুশি। যারা ঘরের তৈরি ১০০% হাইজেনিক মান সম্মত খাঁটি খাবার খেতে চান তাদের জন্য মূলত আমার এই উদ্যোগ নিয়ে পথচলা। খাঁটি ও মান সম্মত খাবার সবার কাছে পৌঁছে দেওয়া হলো আমার প্রতিষ্ঠানের মূল লক্ষ্য। আমি ভবিষ্যতে আমার প্রতিষ্ঠান কে অনলাইন থেকে অফলাইনেও নিয়ে আসার স্বপ্ন দেখি। আমার এই প্রতিষ্ঠানকে একদিন সবাই একনামে চিনবে, ভরসা করবে। সবাইকে সর্বোচ্চ সেবা দিতে পারবো এটাই আমার প্রত্যাশা। আরো একটা প্রত্যাশা আছে, আমি চাই আমার প্রতিষ্ঠানে কাজ করে আরো কয়েকজনের যেনো কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিতে পারি।
ই-ক্যাব ইয়ুথ ফোরামের হাত ধরে শান্ত মারিয়াম ইউনিভার্সিটিতে যাত্রা শুরু হতে যাচ্ছে ই-কমার্স ক্লাবের February 8, 20231560 views