জাতীয় সংবাদ মাধ্যমে শব্দ ব্যবহারে আরো সচেতন হতে হবে By নিজস্ব প্রতিবেদক January 29, 20251 ShareTweet 1 সংবাদ লেখা ও পরিবেশনে জেন্ডারের স্পর্শকাতরতা এবং ভাষার বিষয়টি গণমাধ্যমকর্মীদের মনে রেখে প্রতিবেদন তৈরির পরামশ জেন্ডার বিশেষজ্ঞগনের। অন্তর্ভূক্তিমূলক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে জেন্ডার সমতার বিকল্প নেই। শুধু নারী-পুরুষের অধিকারই নয়, অন্য লিঙ্গের মানুষের সমঅধিকারের বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে। মানুষের মানবাধিকার রক্ষা করা না গেলে মানুষ পূর্ণাঙ্গ হতে পারে না। এই বিষয়গুলো বেশী বেশী প্রচার করে গণমাধ্যম বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারে বলেও মত দেন তারা। বিভিন্ন গণমাধ্যমে জেন্ডার নীতিমালাকে যথাযথ অগ্রাধিকার না দেওয়ার ফলে পক্ষপাতমূলক এবং অসংবেদনশীল প্রতিবেদন তৈরি হয়। এটি জেন্ডারভিত্তিক ন্যায্যতা এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্বের অভাব সৃষ্টি করে। এই সমস্যাগুলি সমাধানে সরকারের এবং মিডিয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন যাতে জেন্ডার-সংবেদনশীল প্রতিবেদন এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতিমালা নিশ্চিত করা যায়। গবেষণাভিত্তিক এডভোকেসি প্রতিষ্ঠান- ভয়েসেস ফর ইন্টারেক্টিভ চয়েস অ্যান্ড এমপাওয়ারমেন্ট (ভয়েস) শনিবার ঢাকায় ‘সাংবাদিক ও নারী মানবাধিকার কর্মীদের জন্য জেন্ডার সংবেদনশীল প্রতিবেদন তৈরির প্রশিক্ষণ কর্মশালা’ শীর্ষক একটি প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করে। রাজধানীর ‘এনজিও ফোরাম ফর পাবলিক হেলথ’ কনফারেন্স রুমে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এতে নারী সাংবাদিকসহ সংবাদকর্মী ও নারী অধিকার কর্মীগণ অংশগ্রহণ করেন। কর্মশালার উদ্দেশ্য তুলে ধরেন ভয়েসের নির্বাহী পরিচালক আহমেদ স্বপন মাহমুদ। বক্তারা বলেন, আজ সমাজে পরিবর্তন আসছে। অনেক গণমাধ্যমের শীর্ষে নারীরা আসছেন। এছাড়া ব্যাংক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, খেলাধুলাসহ প্রায় সব স্তরেই নারীদের শক্ত বিচরণ দেখা যাচ্ছে। সমাজের দৃষ্টি ভঙ্গির অনেক পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু এর পরেও জেন্ডার সমতার বিষয়টি এখনো অনেক ক্ষেত্রে উপেক্ষিত থাকছে। এটি কাম্য নয়।সংবাদ লেখার ক্ষেত্রে বখাটে, শ্লীলতাহানি ও ইভ টিজিং এর মতো ভাষার ব্যবহার অহরহ হচ্ছে। কিন্তু এই ভাষাগুলোর অস্পষ্টতা রয়েছে। সেদিকে খেয়াল রাখা হচ্ছে না। এক্ষেত্রে দেখা যায় যে, নিপীড়ক ব্যক্তি যিনি কথায় বা ইশারা ইঙ্গিতে বা গায়ে হাত দিয়ে কিংবা ধর্ষণের মাধ্যমে নারীকে যৌন হয়রানি করেন। কিন্তু তার পরিচয় হিসেবে সংবাদ মাধ্যমগুলো বিশেষণবাচক শব্দ ‘বখাটে’ ব্যবহার করে। এদিকে যিনি যৌন নির্যাতনের শিকার- তাকে বলা হয় শ্লীলতাহানির শিকার। কিন্তু এগুলোর আভিধানিক অর্থ দেখা হয় না। এই ভাষার অস্পষ্টতা দূর করতে হবে। পাশাপাশি নারীকে নিয়ে সংবাদ লেখার সময় নামের আগে বিভিন্ন বিশেষণ যুক্ত করা হয়। যেমন সুন্দরী, কিশোরী, চরিত্রহীনতা, সম্মানহানি, সম্ভ্রমহানি, পতিতা, ফস্টি-নষ্টি, দেহ মিলন ইত্যাদি শব্দ। এগুলো ব্যবহার পরিহার করতে হবে। সংবাদ লেখার সময় অবশ্যই গণমাধ্যমকর্মীদের জেন্ডার সংবেদনশীল শব্দ ব্যবহার করতে হবে। যাতে নির্যাতিত নারীর সম্মানে কোনভাবেই আঘাত না লাগে। বক্তারা বলেন, নারীর প্রতি প্রচলিত পুরুষতান্ত্রিক সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির বাইরে গিয়ে নারীর অবস্থা ও অবস্থানের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরতে হবে। অর্থনৈতিক,সামাজিক, সাংস্কৃতিক, নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার ভেদে পুরুষ ও নারীর সমান অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সব মানুষ সমানভাবে স্বাধীনতা এবং সমান মর্যাদা ভোগ করবে। সব কাজে নারী-পুরুষ সমানভাবে অংশগ্রহণ করবে। তাহলেই সমাজে ও দেশে ন্যায্যতা নিশ্চিত হবে। পাশাপাশি দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। এদিকে জাতীয় বাজেট প্রণয়নের সময় জেন্ডার বাজেট আলাদা করে তৈরি ও তা বাস্তবায়নে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। কেননা অর্থনৈতিকভাবে সমতা নিশ্চিত করা না গেলে এর নেতিবাচক প্রভাব অনেক ক্ষেত্রেই পড়বে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে জেন্ডার নীতিমালাকে যথাযথ অগ্রাধিকার না দেওয়ার ফলে পক্ষপাতমূলক এবং অসংবেদনশীল প্রতিবেদন তৈরি হয়। এটি জেন্ডারভিত্তিক ন্যায্যতা এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্বের অভাব সৃষ্টি করে। এই সমস্যাগুলি সমাধানে সরকারের এবং মিডিয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন যাতে জেন্ডার-সংবেদনশীল প্রতিবেদন এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতিমালা নিশ্চিত করা যায়। এ প্রেক্ষিতে গবেষণাভিত্তিক এডভোকেসি প্রতিষ্ঠান- ভয়েসেস ফর ইন্টারেক্টিভ চয়েস অ্যান্ড এমপাওয়ারমেন্ট (ভয়েস) শনিবার ঢাকায় ‘সাংবাদিক ও নারী মানবাধিকার কর্মীদের জন্য জেন্ডার সংবেদনশীল প্রতিবেদন তৈরির প্রশিক্ষণ কর্মশালা’ শীর্ষক একটি প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করে। রাজধানীর ‘এনজিও ফোরাম ফর পাবলিক হেলথ’ কনফারেন্স রুমে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এতে নারী সাংবাদিকসহ সংবাদকর্মী ও নারী অধিকার কর্মীগণ অংশগ্রহণ করেন। কর্মশালার উদ্দেশ্য তুলে ধরেন ভয়েসের নির্বাহী পরিচালক আহমেদ স্বপন মাহমুদ। প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রশিক্ষকগণ সাংবাদিক এবং মানবাধিকার কর্মীদের জেন্ডার-সংবেদনশীল প্রতিবেদন তৈরির বিষয়ে শব্দ ব্যবহারসহ প্রতিবেদন তৈরির বিভিন্ন দিকে দক্ষতা বৃদ্ধি করার গুরুত্ব তুলে ধরেন। পাশাপাশি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ এবং নারী বিষয়ক অধিদপ্তরকে দ্রুত উদ্যোগ নিতে এবং দেশব্যাপী জেন্ডার-সংবেদনশীল প্রতিবেদন তৈরির প্রশিক্ষণ প্রদানে বিশেষভাবে সংবাদকর্মীদের জন্য জেন্ডার-সংবেদনশীল নীতি প্রণয়ন করার আহ্বান জানান। আরও পড়ুনঃ তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী পাসের আহ্বান তামাক বিরোধী তরুণ ফোরামের সাংবাদিকদের মানবাধিকার বিষয়ক কাঠামো যেমন সর্বজনীন মানবাধিকারের ঘোষণাপত্র এবং দেশের সংবিধান সম্পর্কে সচেতন হওয়া উচিত যাতে তারা নারীর অধিকার সম্পর্কে যথার্থভাবে বুঝতে পারে। এআইইউবির গণমাধ্যম ও গণযোগাযোগ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আফরোজা সোমা, অধিকার কর্মী শেখ মনজুর ই আলম, অধিকার এবং জেন্ডার ইস্যু বিশেষজ্ঞ সানাইয়া ফাহিম আনসারি দৈনিক আমার দেশ-এর ডেপুটি এডিটর সুলতান মাহমুদ এবং ভয়েস এর প্রজেক্ট ম্যানেজার প্রমিতি প্রভা চৌধুরী কর্মশালাটি পরিচালনা করেন, যেখানে ২০ জন সাংবাদিক এবং মানবাধিকার কর্মী অংশগ্রহণ করেন। সুলতান মাহমুদ তার উপস্থাপনায় উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে জেন্ডার-সংবেদনশীল প্রতিবেদন প্রায়ই জাতীয় বাজেট এবং সম্পাদকীয় নীতিতে উপেক্ষিত থাকে। গণমাধ্যমের গঠনমূলক ভূমিকা থাকা সত্ত্বেও জেন্ডার- বিষয়ক প্রতিবেদনের জন্য জাতীয় বাজেটে যথেষ্ট অর্থ বরাদ্দ নেই। কর্মশালায় সাংবাদিকদের নারী বিষয়ক প্রতিবেদন তৈরির জন্য বিভিন্ন বিষয় এবং ভারসাম্যপূর্ণ প্রতিনিধিত্বের গুরুত্ব আলোচনা করা হয়। পরবর্তীতে মানবাধিকার ও নারীদের অধিকারসমূহ সেইসঙ্গে আন্তর্জাতিক চুক্তি নিয়ে আলোচনা হয়। প্রশিক্ষকরা বলেন, সংবাদমাধ্যম নারী সম্পর্কিত বিষয়গুলো সঠিকভাবে উপস্থাপনে কম যত্নবান হচ্ছেন, যার ফলে অসংবেদনশীল প্রতিবেদনগুলো নারী ভুক্তভোগীদের পুনরায় মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। তারা বাংলাদেশের নারী সম্পর্কিত আইন, যৌন হয়রানির নীতিমালা এবং নারীর প্রতি সকল বৈষম্য বিলোপ সনদ (সিডও) নিয়ে আলোচনা করেন যা নারীর অধিকার এবং জেন্ডার সমতা সুরক্ষিত করে। এছাড়াও প্রতিবেদন কাঠামোর সমস্যা ও সচেতনতার অভাব নিয়ে আলোচনা করা হয়। দিনব্যাপী কর্মশালাটি সাংবাদিকদের জেন্ডার বিষয়ক দায়িত্বশীল প্রতিবেদন তৈরির দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করেছে।
সাংবাদিকদের নিরাপত্তা এবং নাগরিক পরিসরে অন্তর্ভুক্তিমূলক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে : ভয়েস September 30, 20250
জাকের পার্টির চেয়ারম্যান আলহাজ্ব খাজা মোস্তফা আমীর ফয়সল মুজাদ্দেদীর পক্ষ থেকে অসহায় দুঃস্থ মানুষের মাঝে ঈদ উপহার বিতরণ March 29, 2025201 views
এমবিবিএস-বিডিএস ডিগ্রি ছাড়া নামের আগে ডাক্তার ব্যবহার করা যাবে না : হাইকোর্ট March 13, 2025138 views
ই-ক্যাব ইয়ুথ ফোরামের হাত ধরে শান্ত মারিয়াম ইউনিভার্সিটিতে যাত্রা শুরু হতে যাচ্ছে ই-কমার্স ক্লাবের February 8, 20231908 views