উদ্যোক্তার গল্পদেশি উদ্যোক্তা চাকরিকে বিদায় জানিয়ে পুরোদস্তুর উদ্যোক্তা মো: শাওন মাহমুদ By নিজস্ব প্রতিবেদক January 25, 20220 ShareTweet 0 উদ্যোক্তা জার্নালের বিশেষ আয়োজন ‘উদ্যোক্তা গল্প’-র আজকের পর্বে, অনলাইনে নিজের উদ্যোগ নিয়ে আলাপ করেছেন মোঃ শাওন মাহমুদ। যিনি কাজ করছেন খাঁটি খাবার পণ্য নিয়ে। চলুন শুনি তার উদ্যোগের সফলতার গল্প। আমি মোঃ শাওন মাহমুদ। ২৯/০৯/১৯৯০ ইং তারিখে জন্ম। বেড়ে ওঠা, স্কুল এবং কলেজ ঈশ্বরদী উপজেলার দাশুড়িয়া গ্রামে। তারপর বিবিএ, এমবিএ করেছি ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামে। ছোট থেকে আমার চাকরি একদম পছন্দ ছিলোনা। কিন্তু লেখাপড়া করেছি তাই পরিবারের চাপে চাকরি করতে হতো। আমি চার বছর নিউ এরা ফাউন্ডেশন নামে একটি এনজিওতে প্রধান মানবসম্পদ কর্মকর্তা পদে কর্মরত ছিলাম। কিন্তু কোনোভাবে মনকে স্থির করতে পারছিলাম না। তখন আমার বড় বোন কানাডা প্রবাসী ওকে সব খুলে বলি। সে মূহুর্তে আমার বড় বোন আমাকে অনুপ্রেরণা যোগান উদ্যক্তা হওয়ার। এরপর ০১/১১/২০২০ ইং তারিখ থেকে আমার উদ্যোক্তা জীবনের পথচলা শুরু হয়। আমি চাই মানুষের কাছে গ্রাম থেকে শতভাগ খাঁটি পণ্যগুলো পৌঁছে যাক। তারই ধারাবাহিকতায় কাজ করছি পাবনার গাওয়া ঘি, সরের ঘি, প্রাকৃতিক চাকের মধু, কালোজিরা ফুলের মধু, সরিষা ফুলের মধু, লিচুর ফুলের মধু, বরই ফুলের মধু, কাঠের ঘানিতে ভাঙ্গানো সরিষার তেল, খেজুরের পাটালী ও ঝোলা গুড়, আখের গুড়, যবের ছাতু, লাল চাল এবং লাল চিনি নিয়ে। শুরুটা অনেক কষ্টের ছিলো। কারণ নিজের কাজটা সঠিকভাবে না গুছিয়ে চাকরি ছাড়তে পারছিলাম না। তাই সকাল ৮ টা থেকে রাত ৮/৯ টা পর্যন্ত অফিস করে প্রায় সারা রাত বিভিন্ন পণ্য প্যাকেজিং করা থেকে যাবতীয় কাজ করতে হতো নিজের। পরদিন আবার সকালে অফিস। অনেক কষ্ট করতে হয়েছে শুরুতে। ২০ হাজার টাকা মুলধন নিয়ে আমি শুরু করেছিলাম। বর্তমানে আমার ২ জন কর্মী রয়েছে। আমার মতে উদ্যোক্তা হতে হলে সততা, ধৈর্য্য ও সত্যবাদিতা থাকা খুব দরকার। যার মধ্যে এ ৩ টা গুণ থাকবে সে সফল হতে পারবে। আমার দৃষ্টিতে পড়ালেখা শেষ করে চাকরি করতে হবে তা না। পড়ালেখা নিজের জ্ঞানকে বৃদ্ধি করে এবং তার আলোকে জীবন পরিচালনা করতে সাহায্য করে। আমি চাই এমন কিছু করতে যাতে সমাজের মানুষের ভুল ধারণা ভেঙ্গে যায়। এখনও সমাজে অনেক মানুষ আছে তারা একটা শিক্ষিত ছেলে বা মেয়েকে কোনো কাজ করতে দেখলে বলেন পড়ালেখা শেষ করে এসব কাজ করছে। তাদের ধারণা পড়াশোনা করে শুধু চাকরি করতে হবে। অথচ নিজের চেষ্টায় কিছু একটা করে আরো ৩/৪ জন বেকারকে কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেয়া যায় সেটা তার বুঝতে চায় না। আমার প্রতিষ্ঠানের মূল লক্ষ্য শতভাগ খাটি পণ্য সরবরাহ করা। আমরা যেটা নিজেরা প্রস্তুত বা সংগ্রহ করতে পারি শুধু সেগুলোই ক্রেতাদের কাছে সরবরাহ করে থাকি। সে জন্য আমার প্রতিষ্ঠানের নাম ‘খাঁটি পণ্যের সমাহার’। আমাদের দেশে এখন অনেক মা-বোন উদ্যোক্তা হয়ে তাদের জীবিকা নির্বাহ করছে। অনেক বোন তাদের লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়াও সমাজে তাদের আত্মমর্যাদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমান প্রেক্ষাপট নারী উদ্যোক্তাদের জন্য সম্পূর্ণ উপযোগী। অনলাইন উদ্যক্তাদের প্রধান প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে ডেলিভারি সমস্যা। এর জন্য অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। অনেক অর্ডার বাতিল হয়ে যায়। আলহামদুলিল্লাহ আমার সেল বর্তমানে অনেক ভালো। আমার সেবাতে ৯৫% মানুষ সন্তুষ্ট। আমি সরকারি বা বেসরকারি কোনো সহযোগিতা পাই নাই। ২০ হাজার টাকা মূলধন থেকে বর্তমানে আমার ৫ লক্ষ টাকা মূলধন হয়েছে। আমার প্রতি অনেক মানুষের বিশ্বাস অর্জন হয়েছে। ২ জন মানুষের কিছুটা হলেও কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে। আমার প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা আমাদের সেল সেন্টার হবে। সেখানে অনেক মানুষের কর্ম সংস্থানের সুযোগ হবে। ৫ বছর পর আমি আমার দ্বারা আরো ২০ টি পরিবারের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরী করে নিজের প্রতিষ্ঠানের সকল পণ্যকে ব্র্যান্ডে পরিণত করতে চাই।
ই-ক্যাব ইয়ুথ ফোরামের হাত ধরে শান্ত মারিয়াম ইউনিভার্সিটিতে যাত্রা শুরু হতে যাচ্ছে ই-কমার্স ক্লাবের February 8, 20231563 views