উদ্যোক্তার গল্পদেশি উদ্যোক্তা চাকরির চেষ্টা না করে উদ্যোক্তা জীবন বেঁছে নেন তাজমিনা আক্তার রুমা By নিজস্ব প্রতিবেদক February 2, 20220 ShareTweet 0 উদ্যোক্তা জার্নালের বিশেষ আয়োজন ‘উদ্যোক্তা গল্প’-র আজকের পর্বে, উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার গল্প শুনবো তাজমিনা আক্তার রুমার কাছে। আমি তাজমিনা আক্তার রুমা। জন্ম আর বেরে উঠা ব্রাহ্মনবাড়িয়া। সেখান থেকে খুলনা আবার খুলনা থেকে চট্টগ্রাম, তারপর কুমিল্লা কারণ বাবার চাকরির সুবিধার্থে থাকতে হয়েছে। এ জেলা থেকে সেই জেলা ঘুরে বেড়াতে হয়েছে আমাদের পরিবারের সবাইকে। আমরা ছয় ভাই-বোন, আমি ৪র্থ। একটু চঞ্চল স্বভাবের ছিলাম ছোট বেলা থেকেই যা দেখতাম তাই বীচক্ষন ও অনুকরণ করতে পারতাম। অনেক কিছুই করতে পারতাম, ড্রয়িং করতাম, হাতের কাজ করতে পারতাম, যেমন- ব্লক বাটিক সুতার কাজ সবই মোটামুটি করতে পারতাম। এক সময় এই সব কিছু মিলিয়ে শুরু করেছি ইভেন্টের কাজ। আমার মনে হলো এই কাজটায় একটা মজা আছে, ফুল-কাপড় দিয়ে একটা খেলা আছে। তারপর ভালোই চলছিলো আলহামদুলিল্লাহ। কিন্তু বেশিদিন আর চালানো যাচ্ছিলো না, শুরু হয়ে গেলো ভয়াবহ প্যানডেমিক। এ সময় সবাই ঘরে বসা। আমি অস্থির হয়ে গিয়েছিলাম একেবারে। বাসার সবাই ঘরে, এমন সময় আমার ১৫ বছরের ছেলে বললো মামনি তুমি ঘরে বসে কিছু একটা করো। এভাবে বসে থাকলে তুমি তো অসুস্থ হয়ে যাবে। তারপরে ছেলের কথা মোতাবেক শুরু করলাম অনলাইন বিজনেস। এরপর শুরু করলাম অনলাইনে শতরঞ্জি নিয়ে কাজ। রংপুরের ঐতিহ্য শতরঞ্জি, মাশাআল্লাহ ভালো সাড়া পাচ্ছিলাম। তারপর ভাবলাম একটা আইটেম নিয়ে বসে থাকলে তো হবে না, আইটেম বাড়াতে হবে। সিলেটের মনিপুরী শাড়ি ও কুমিল্লার বাটিক সিল্ক শাড়ি নিয়ে কাজ শুরু করলাম। এ থেকেই আমার ব্যবসার যাত্রা শুরু। কিন্তু আমার শুরু টা খুব সহজ ছিলোনা। আমার শহর, আমার স্বামী আমাকে সাপোর্ট করেনি। বন্ধুবান্ধব কেমন জানি প্রথম প্রথম তিরস্কার করছিলো, সেসব তোয়াক্কা না করে আমি আমার গতি থামিয়ে রাখিনি। নিজের কিছু জমানো টাকা ছিলো, সেই থেকে শুরু করলাম আমার মূলধন। সরকারি বা বেসরকারি কোনো সাহায্যের প্রয়োজন পড়েনি এখন পর্যন্ত। তাছাড়া সাহায্য চাইনি, কারণ আমি জানতাম কারো কাছে সাহায্য পাবোনা। তাই নিজের সাধ্যের মধ্যেই অল্প পরিমাণ কিছু টাকা দিয়ে প্রোডাক্ট আনি, সেই থেকে আমার পথ চলা। আমি মনে করি একজন উদ্যোক্তার প্রথমতো নিষ্ঠাবান, সততা, অপর কে উপকার করার মন মানসিকতা, ন্যায়বিচারক ইত্যাদি থাকা আবশ্যক ও গুরুত্বপূর্ণ। আমার প্রতিষ্ঠান এখনো আমি একাই চালাচ্ছি, কিন্তু সামনে আমার প্রতিষ্ঠান একদিন অনেক অনেক শ্রমিক জনতার মতো কাজ করবে ইনশাআল্লাহ। আমার জীবনে চাকরি করার ইচ্ছা ছিলোনা, কারণ আমি স্বাধীনচেতা মানুষ, স্বাধীনভাবে চলতে ভালোবাসি এবং স্বাধীনভাবে কথা বলতে ভালোবাসি। আমি আমার পড়াশোনার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ব্যবসায়িক জীবন শুরু করতে চেয়েছিলাম। আজ বিশ্ব অনেক দূরে পুরুষশাসিত সমাজ থেকে।। অনেকটা এগিয়ে আসছে নারী সমাজের নারীরা।প্রতিটা ঘরে ঘরে এখন নারী উদ্যোক্তা হয়েছে। শুধু উদ্যোক্তা কেনো বলবো, চাকরিজীবী, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, পাইলট এবং প্রধানমন্ত্রী প্রতিটি পদেই নারীদের আধিপত্য। আমি গর্বিত, আমরা নারী আমরা সবই পারি। আলহামদুলিল্লাহ আমার সেল অনেক ভালো। আমার কাষ্টমাররা অনেক সুন্দরভাবে আমার প্রোডাক্ট নিচ্ছে। তার কারণ আমি বলবো আমি অন্যান্যদের কাছ থেকে কিছু প্রফিট রেখে উনাদের দেই, তাই হয়তো আমাকে উনারা এতো ভালোবেসে আমার কাছ থেকে প্রোডাক্ট নিচ্ছে। আমার প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন বিজনেস গ্রুপ থেকে এওয়ার্ড পেয়েছে আলহামদুলিল্লাহ। আমার জীবনে এখন আল্লাহ পাক এর কাছে একটাই চাওয়া, আমি যেন আমার এই উদ্যোক্তা জীবন আন্তর্জাতিকভাবে সমাজে প্রতিষ্ঠা করতে পারি। আমি আমার আমিকে একজন পারসোনাল ব্র্যান্ড হিসেবে পরিচিত করতে চাই।
ই-ক্যাব ইয়ুথ ফোরামের হাত ধরে শান্ত মারিয়াম ইউনিভার্সিটিতে যাত্রা শুরু হতে যাচ্ছে ই-কমার্স ক্লাবের February 8, 20231563 views