উদ্যোক্তার গল্পদেশি উদ্যোক্তা মাল্টি লেভেল মার্কেটিং কোম্পানি প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেন পিণাক মন্ডল By নিজস্ব প্রতিবেদক February 2, 20220 ShareTweet 0 উদ্যোক্তা জার্নালের বিশেষ আয়োজন ‘উদ্যোক্তা গল্প’-র আজকের পর্বে, নিজের উদ্যোগ নিয়ে আলাপ করেছেন পিনাকি মন্ডল। আজ শুনবো তার উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার গল্প। আমি পিণাক মন্ডল। স্বত্বাধিকারী TRENDY FASHION। আমার প্রথম পরিচয় আমি মানিকগঞ্জের ছেলে, জন্মস্থান মানিকগঞ্জেই। বাবা-মার সরকারি চাকরির জন্য আমার জন্মের ১.৫/২ বছরের মাথায় বাবা-মার সাথে চলে যাই রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলাতে। শৈশবের ১.৫/২ বছর পার হয় পাংশা উপজেলাতেই। এরপর আবার চলে আসি মানিকগঞ্জে। এখান থেকেই আমার স্কুল জীবন শুরু হয়। এস.এস.সি পাশ করি মানিকগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০০৯ সালে। নিজে কিছু করার উৎসাহ টা আসলে সেভাবে কারো থেকে পাইনি। নিজে নিজে কিভাবে যেনো মনের মধ্যে কাজ করতে শুরু করলো আমি চাকরি ছাড়া ব্যতিক্রম কিছু করতে পারি কিনা, যেহেতু পড়াশোনা কিছু টা হলেও জানি। এই চিন্তা থেকেই কিভাবে যেনো আউটসোর্সিং এর কাজ নিজে করতে করতে মাথায় আসলো কাজ টা তো আমি নিজে না করে অন্য কে দিয়েও করাতে পারি। এই চিন্তা থেকেই মূলত আউটসোর্সিং জব সার্ভিস মার্কেটিং শুরু করি। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি ক্যারিয়ার ভাবনা নিয়ে। আমার মূল কোম্পানি টা আসলে ই-কমার্স বিজনেস প্রতিষ্ঠান। যেটির নাম My Dream। আমার কোম্পানির বর্তমান সেবাসমূহঃ- বেসিক কম্পিউটার ট্রেনিং, বেসিক আউটসোর্সিং ট্রেনিং, আউটসোর্সিং জব সার্ভিস এবং এফ-কমার্স ফ্যাশন। প্রথমে চুক্তিতে যেমন টা কাজের পেমেন্ট দেয়ার কথা ছিলো সেটা ঠিক মতো পেতাম না। এমনকি মাস শেষে ফুল পেমেন্টও ঠিক মতো পেতাম না। অবশেষে কাজ বাদ দিয়ে দেই। ২০১৫ সালে মেসে থাকাকালীন সময়ে আমার এক রুমমেট এর মাধ্যমে আপওয়ার্কে একাউন্ট করলাম, এরপর সেই ভাইয়ার মাধ্যমে প্রথম আউটসোর্সিং এ নিজের আইডি থেকে কাজ পাওয়া। পরবর্তী ৫ বছরে অনেক প্রজেক্ট কমপ্লিট করেছি। আমার কোম্পানির ইনভেস্টমেন্ট বলতে আউটসোর্সিং এর শুরুতে কিছুই না, শূন্য থেকে শুরু। যদিও ২০১৮ এর পর থেকে পেইড সিস্টেমে গেলে সেখানে শুরু ১,৫০০ টাকা দিয়ে। এর পরবর্তীতে কবুতর ফার্মিং এর শুরুতে ইনভেস্ট টা ছিলো ২,০০০ টাকা। সেখান থেকে শুরু করে ৬ মাসে ৫০,০০০ টাকার বেশি ইনভেস্ট ছিলো। রিটার্ন ও আসতে শুরু করেছিলো, কিন্তু পরবর্তীতে প্যানডেমিকের জন্য বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়ে লস প্রজেক্ট হয়। এরপর এফ-কমার্স বিজনেসে ইনভেস্ট ছিলো ৩,৫০০ টাকা। বর্তমানে আমার প্রতিষ্ঠানে আমি নিজেই কোম্পানির সব কাজ করছি। যেহেতু এখনো কোনো আউটলেট নেই আমার কোম্পানির। তবে আমাদের দেশে একটা কথাই শোনা যায় যে চাকরি ছাড়া নাকি ভাত নাই। কথায় আছে না, একটা সমাজে যখন সবকিছু এককেন্দ্রিক হয়ে পড়ে তখন অসুস্থ প্রতিযোগিতার সৃষ্টি হয়। বর্তমানে আমাদের সমাজে খুব শোনা যায় স্টুডেন্ট লাইফে টিউশন করবে ২/৩ টা, নিজের থাকা-খাওয়ার খরচ উঠে আসবে, আর অনার্স পাশ করে বিসিএস বা ব্যাংক জবের জন্য পড়াশোনা করো। আমি একটা বয়সে এসে হয়ে পড়ি একতরফা চিন্তার, যে আমাকে কেনো অন্য সবার মতোই হতে হবে। ব্যতিক্রম কিছু করলে সমস্যা কোথায়? এই চিন্তা ধারা থেকে মূলত এইচ.এস.সি পাশ করার পর থেকে কিছু করার চিন্তা কাজ করতো মাথায়। আমার প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে বলতে গেলে প্রথমেই আসছে আউটসোর্সিং জব সার্ভিস এর বিষয় টা। কারন আমার প্রতিষ্ঠান মূলত আউটসোর্সিং এর কাজের মধ্য দিয়ে চালু হয় ২০১৫ সাল থেকে। এরপর কিছু নতুন প্রজেক্ট শুরু হয়েছে আবার বন্ধ হয়ে গেলেও ২০২১ থেকে মূলত আউটসোর্সিং এর সাথে এফ-কমার্স ফ্যাশন প্রোডাক্ট নিয়ে নতুন প্রজেক্ট শুরু হয়ে এখনো চলছে। প্রতিবন্ধকতার কথা বলতে গেলে জীবনে এখন পর্যন্ত অনেক প্রতিবন্ধকতা পার করে আজ এই পর্যন্ত এসেছি। এখনো অনেক ছোট-খাটো প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। সবথেকে বড় প্রতিবন্ধকতার কথা বলতে গেলে জীবনে বড় হোঁচট খাই ২০১৭-২০১৮ সালে। নিজের আউটসোর্সিং জব সার্ভিস থেকে ইনকামের ৭-৮ লক্ষ টাকা ধরা খাই অনলাইন স্পোর্টস গ্যাম্বেলিং এ। এরপর অনেক প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে আবার শুরু করার পর নতুন করে হোঁচট খাই ২০২০ এর শুরুতে প্যানডেমিক এর জন্য। কবুতরের ফার্মে আবারো ধাক্কা খাই। এছাড়া দৈনন্দিন জীবনে ছোটোখাটো অনেক প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হয়, যেগুলো উপেক্ষা করেও এগিয়ে যাবার চেষ্টা করছি। সেল এর কথায় যদি আসি তবে এখনো ১.৫ বছর পথ হাঁটার পরও কোম্পানির সেল খুব সীমিত। মাসিক ১০ হাজার টাকার উপর সেল পাচ্ছি।। তবে চেষ্টা করি কাস্টমারদের কে রিজনেবল প্রাইসে কোয়ালিটি পন্য দিতে সেই সাথে সেল বৃদ্ধি করতে। এখন পর্যন্ত যারা আমাদের প্রতিষ্ঠানের কাস্টমার হয়েছেন তারা সবাই সন্তুষ্ট, কোনো কাস্টমার এখনো হতাশ হননি আমাদের থেকে কেনাকাটা করে। যারা কাস্টমার হয়েছেন তাদের অনেকেই এখন আমাদের নিয়মিত কাস্টমার। আমার প্রতিষ্ঠান এখনো সরকারি বা বেসরকারি কোনো সহযোগিতা পায়নি। কারন এখন পর্যন্ত কোনো সহযোগিতার জন্য আবেদন করা হয়নি। প্রতিষ্ঠানের অর্জন বলতে গেলে এখনো তেমন কিছুই অর্জন হয়নি। প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা বলতে গেলে নিজের প্রতিষ্ঠান কে অনন্য এক উচ্চতায় নিয়ে যাবার স্বপ্ন দেখি। আমার পরিকল্পনা হলো প্রতিষ্ঠান টা হবে মাল্টি লেভেল মার্কেটিং কোম্পানি। যেখানে বেশকিছু পন্য ও সেবার আওতায় থাকবে প্রতিষ্ঠান টি। পাঁচ বছর পর নিজের অবস্থান সম্পর্কে বলতে গেলে মাথায় কাজ করে প্রথমত একটা প্রতিষ্ঠিত কোম্পানির ওনার।
ই-ক্যাব ইয়ুথ ফোরামের হাত ধরে শান্ত মারিয়াম ইউনিভার্সিটিতে যাত্রা শুরু হতে যাচ্ছে ই-কমার্স ক্লাবের February 8, 20231565 views