উদ্যোক্তার গল্পদেশি উদ্যোক্তা পাট পণ্য নিয়ে কাজ করছেন পূরবী বর্মন লিলি By নিজস্ব প্রতিবেদক February 9, 20220 ShareTweet 0 উদ্যোক্তা জার্নালের বিশেষ আয়োজন ‘উদ্যোক্তা গল্প’-র আজকের পর্বে, কথা হলো উদ্যোক্তা পূরবী বর্মন লিলির সঙ্গে। আজ শুনবো তার উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার গল্প। আমার নাম পূরবী বর্মন। ডাক নাম লিলি। ঢাকা দোহার নবাবগঞ্জ জেলার মেয়ে আমি। গ্রামের নাম গোবিন্দপুর। আমার জীবন-যাপন সেই রকমই ছিল যেমনটা গ্রামের একটি সাধারণ মেয়ের হয়ে থাকে। ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনার পাশাপাশি সেলাই কাজটা করতে খুবই ভালো লাগত। মূলত আমি আমার মায়ের কাছ থেকেই এই সেলাই কাজের অনুপ্রেরণা পেয়েছি। আমার মা ছোট ছোট নকশা এঁকে আমাকে নানা রকম ডিজাইন দিয়ে জামা তৈরি করে দিতেন। মায়ের হাতের কাজগুলো দেখতে দেখতেই সেলাইয়ের প্রতি আমার ভালোবাসা জন্ম হয়। আমি বিভিন্ন রকমের হাতের কাজ শিখি আমার মায়ের কাছ থেকে। এখন আমি কাজ করছি পাট পণ্য নিয়ে। পাট নিয়েই আমি এগিয়ে যেতে চাই। আমার প্রতিষ্ঠানের নাম Purabi’s Dreams। এখান থেকে সর্বোচ্চ ভালো মানের সার্ভিস দেওয়ার চেষ্টা করি। এই প্রতিষ্ঠান থেকে যেকোনো কাস্টমার তার নিজের পছন্দ অনুযায়ী ডিজাইন এবং কালার দিয়ে প্রোডাক্ট তৈরি করে নিতে পারেন। প্রথমদিকে সবার কষ্ট হয়, আমারও তেমন কষ্ট হয়েছে নিজের উদ্যোগকে এগিয়ে নিয়ে যেতে। তাছাড়া অন্যান্য সাধারণ নারী উদ্যোক্তার মতো আমাকেও সংসার সামলিয়ে নিজের প্রোডাক্ট এর কাজ করতে হয়, এখনো করছি । আমি খুবই অল্প মূলধন দিয়ে শুরু করেছিলাম আমার উদ্যোগ। আমার মূলধন ছিল ৭০০ টাকা। একজন সফল উদ্যোক্তা হতে হলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, অবশ্যই তাকে ভালো মনের অধিকারী হতে হবে এবং সবসময় সহযোগিতার মনোভাব রাখতে হবে। বর্তমানে আমার কোনো কর্মী নেই। তবে ভবিষ্যতে কর্মী নেওয়ার চিন্তাভাবনা আছে। কাজের প্রতি ভালোবাসা থাকলে যে কেউ কাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। সবাইকে অবশ্যই তার কাজকে ভালবাসতে হবে। আমার অল্প বয়সে বিয়ে হয়ে যাওয়ার কারণে পড়াশোনাটা কন্টিনিউ করতে পারিনি। আমার পড়াশোনা এইচএসসি পর্যন্তই সমাপ্তি ঘটে। কিন্তু মনের ভিতর সবসময় নিজেকে একজন সফল মানুষ হিসেবে দেখতে ইচ্ছে করতো ।এই ইচ্ছে থেকেই আমি একজন সফল উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখি । আমার প্রতিষ্ঠানের কথা বলতে গেলে Purabi’s Dreams এমন একটি প্রতিষ্ঠান, যেখানে আমাদের হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী পণ্যকে নতুনভাবে নতুন রূপে বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করছি। আমি পাট দিয়ে এখন পর্যন্ত তৈরি করেছি ওয়াল ম্যাট, টেবিল ম্যাট, পাপোশ, ওয়াল হ্যাংগিং এবং ডায়েরি। পরবর্তীতে আরও বিভিন্ন আইডিয়া কাজে লাগিয়ে নতুন নতুন কাজ করার চিন্তা ভাবনা করছি। এখন পর্যন্ত সরকারি বা বেসরকারি কোনো সহযোগিতা পাইনি। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপট নারী উদ্যোক্তার জন্য খুব একটা উপযোগী নয়। এখনো আমাদের দেশে অধিকাংশ মানুষের এমন মানসিকতা রয়েছে, যারা চায় নারীরা ঘরে বসে শুধুমাত্র সংসারের কাজ করবে। তারা মনে করেন বাইরে কাজের জন্য নারীরা উপযোগী নয়। এ ধরনের সমস্যার জন্য আমাদের দেশের অনেক নারী বিভিন্ন ধরনের প্রতিকূলতার শিকার হচ্ছেন। সেক্ষেত্রে যারা শারীরিক এবং মানসিক দিক দিয়ে শক্ত শুধু তারাই এসব সামলিয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে । আমার সেল ভালোই হচ্ছে। এখন পর্যন্ত যতগুলো প্রোডাক্ট সেল করেছি তারা সবাই সন্তুষ্ট, আর মূলকথা আমি তাদের কাছ থেকে বেশি সময় চেয়ে থাকি, কারণ হাতের কাজের ব্যাপার একটু সময় বেশি নিয়ে করলে কাজটি আরও সুন্দর এবং নিখুঁত হয় । আমার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হলো আমার প্রতিষ্ঠান কে আরো সর্বোচ্চ স্থানে তোলার, যেখানে বাইরের দেশের মানুষেরা এই প্রতিষ্ঠানটি সম্পর্কে জানবে। এজন্য প্রোডাক্টগুলোর মধ্যে সবসময় একটা ইউনিক লুক দেওয়ার চেষ্টা করি। আর প্রতিষ্ঠানটি নিয়ে অনেক অনেক স্বপ্ন রয়েছে আমার। তার মধ্যে একটি হলো, নারীদের পাটের কাজ শিখিয়ে তাদেরকে কর্মসংস্থান এর সুযোগ সৃষ্টি করা।
ই-ক্যাব ইয়ুথ ফোরামের হাত ধরে শান্ত মারিয়াম ইউনিভার্সিটিতে যাত্রা শুরু হতে যাচ্ছে ই-কমার্স ক্লাবের February 8, 20231565 views