উদ্যোক্তার গল্পদেশি উদ্যোক্তা বৃদ্ধ এবং পক্ষাঘাতগ্রস্ত ব্যক্তিদের পাশে দাঁড়াতে চান জান্নাতুল ফেরদৌস জেসী By নিজস্ব প্রতিবেদক January 26, 20220 ShareTweet 0 উদ্যোক্তা জার্নালের বিশেষ আয়োজন ‘উদ্যোক্তা গল্প’-র আজকের পর্বে, অনলাইনে নিজের উদ্যোগ নিয়ে আলাপ করেছেন জান্নাতুল ফেরদৌস জেসী। চলুন শুনি তার উদ্যোগের সফলতার গল্প। আমি জান্নাতুল ফেরদৌস জেসী। জন্মগতভাবে ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করছি। মানবিক শাখা থেকে এসএসসি করেছি মতিঝিল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে। একই বিভাগ থেকে ভিকারুননিসা নূন কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেছি। সমাজকর্মে মাস্টার্স করেছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। লেখাপড়া চলাকালীন সময়ে বিয়ে এবং তারপর একমাত্র কন্যা সন্তানকে নিয়ে চাকরি করার ইচ্ছে থাকলেও বাস্তবে হয়ে ওঠেনি। সন্তানকে পুরো সময় দিয়ে বাইরে যাওয়া খুব কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। এমতাবস্থায় প্যান্ডেমিক সিচুয়েশনে পুরো বিশ্ব ঘরবন্দি। চিকিৎসা সামগ্রীর অপ্রতুলতা সাথে কিছু অসাধু মহলের কারসাজিতে সাধারণ মানুষ অসহায় হয়ে পড়ে। আমার স্বামী পেশায় ডাঃ হওয়ায় চিকিৎসা সামগ্রী নিয়ে তার অভিজ্ঞতা বেশ ভালো, তাছাড়া এগুলো নিয়ে ২০১৪ সালে তার অফলাইনে কিছু কার্যক্রম ছিল যা পরবর্তীতে বিভিন্ন ব্যস্ততায় বন্ধ হয়ে যায়। লকডাউন পরিস্থিতিতে পুরোনো সোর্স কাজে লাগিয়ে মানুষের পাশে দাড়ানোর পাশাপাশি আত্মকর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে আমি চিকিৎসা সামগ্রী এবং অর্গানিক ফুডের উদ্যোগ শুরু করি। আমার উদ্যোগের নাম Health Aid Bd। আমার এই উদ্যোগে সবচেয়ে বেশি অনুপ্রেরণা এবং উৎসাহ দিয়েছেন আমার স্বামী। Health Aid Bd ফেসবুক পেইজ এবং ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে আমরা বিশ্বমানের চিকিৎসা সামগ্রী এবং অর্গানিক ফুড বাংলাদেশের যেকোন প্রান্তে সরবরাহ করি। তাছাড়া উত্তরায় আমাদের প্রতিষ্ঠানের একটি ফিজিওথেরাপি সেন্টার রয়েছে, যার নাম Health Aid Bd Physiotherapy. এর মাধ্যমে আমরা হোম সার্ভিসও দিয়ে থাকি। বর্তমানে আমাদের প্রতিষ্ঠান চলে ৭/৮ জন জনবল নিয়ে। বাংলাদেশের সামাজিক প্রেক্ষাপটে একজন নারীর চাকরি করা যতটা স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করা হয় উদ্যোক্তা হিসেবে তা এখনও গ্রহনযোগ্য হয়ে ওঠেনি। আমি আমার সন্তানকে বেড়ে ওঠার সময়ে আমার পুরোটা সময় দিতে চেয়েছি যার ফলে বাইরে গিয়ে ৯-৫ টা চাকরি আমার পক্ষে খুব কষ্টদায়ক মনে হয়েছে। তাছাড়া এই সময়ে যেখানে “চাকরি যেন সোনার হরিণ” সেখানে এই হরিণের পেছনে ছুটে চলার চেয়ে নিজের উদ্যোগের মাধ্যমে কিছু সংখ্যক মানুষের সোনার হরিণ পাওয়ার ব্যবস্থা করা বেশি যুক্তিযুক্ত বলে আমি মনে করেছি। তাই নিজের বাসায় পন্য স্টক রেখে এখান থেকেই ডেলিভারির ব্যবস্থা শুরু করি। আমার উদ্যেগের প্রচার এবং প্রসারের জন্য আমি ফেসবুক পেইজ খোলার কয়েকদিনের মধ্যে কিছু ফেসবুক বিজনেস গ্রুপে জয়েন করি। এর মধ্যে YEESBD একটি। ইয়েসবিডি একটি উদ্যোক্তাবান্ধব গ্রুপ। এই গ্রুপের মাধ্যমে আমি ডিজিটাল মার্কেটিং এর বিভিন্ন টার্ম শিখেছি এবং তার সফল প্রয়োগ করতে পেরেছি। এছাড়া গ্রুপে একটিভ থাকার ফলে আমার ব্যবসার ব্যপক প্রচার হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ। যা আমার সেল বৃদ্ধিতে সহায়তা করছে। এই প্ল্যাটফর্ম আমাকে বিভিন্ন সময়ে ভিন্নধর্মী কিছু অভিজ্ঞতা লাভ করার সুযোগ এবং সম্মাননা প্রদান করেছে। সে জন্য আমি বিশেষভাবে এই প্ল্যাটফর্মের কাছে কৃতজ্ঞ। এখানে আমি কয়েকটি ওয়ার্কশপ করতে পেরেছি যা আমার উদ্যোগে বেশ কাজে লাগছে। নারী উদ্যোক্তা হিসেবে ছোটখাটো কিছু অসুবিধা ছাড়া তেমন কোন প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হয়নি এখন পর্যন্ত। তবে সরকারী বা বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আমি আমার উদ্যোগকে আরও বড় পরিসরে নিয়ে যেতে পারব বলে আশা করছি। আমি চাই আমার প্রতিষ্ঠানকে একটি বড় প্রতিষ্ঠানে রূপ দিতে, যা বৃদ্ধ এবং পক্ষাঘাতগ্রস্ত ব্যক্তিদের জন্য রিহ্যাবিটেশন হিসেবে কাজ করবে। সকলের দোয়া এবং শুভ কামনা থাকলে আমি আমার লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব ইনশাআল্লাহ।
ই-ক্যাব ইয়ুথ ফোরামের হাত ধরে শান্ত মারিয়াম ইউনিভার্সিটিতে যাত্রা শুরু হতে যাচ্ছে ই-কমার্স ক্লাবের February 8, 20231560 views