খেলা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ মাতাচ্ছেন বোলাররা By নিজস্ব প্রতিবেদক June 12, 20241 ShareTweet 1 টি২০ মানেই ব্যাটসম্যানদের দাপট। ধুন্ধুমার ব্যাটিং দেখতেই মাঠে আসেন দর্শক। ক্রিকেটের আকার যত ছোট হয়ে এলো, বিশ্বজুড়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে বিনোদনের ফেরিওয়ালা হয়ে উঠলেন ক্রিস গেইল, জস বাটলার, আন্দ্রে রাসেলরা। টি২০ ক্রিকেটের আরেক নাম হয়ে উঠল চার-ছক্কা। বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসিও এখন বৈশ্বিক আসরে ব্যাটিংবান্ধব উইকেট তৈরিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে থাকে। ভারতে রান-বন্যার আইপিএলের ঠিক পর পরই ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হয় এবারের টি২০ বিশ্বকাপ। দানবীয় ব্যাটিংয়ের বিপরীতে অসহায় বোলারদের জন্য দর্শক হয়তো আগাম সান্তনা জানিয়ে রাখছিলেন; কিন্তু বাস্তবে তার উল্টোটা ঘটছে! সর্বোচ্চ ২০ দল নিয়ে অনুষ্ঠিত এবারের টি২০ বিশ্বকাপে গ্রুপ-পর্বে মোট ম্যাচ ৪০টি। ২১টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে সোমবার পর্যন্ত। গ্রুপ-পর্বের মধ্যপথে এসেও একটি মাত্র ম্যাচে দলীয় ২০০ রান দেখেছে বিশ্বকাপ; নেই কোনো সেঞ্চুরি! বিপরীতে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন বোলাররা। পেসাররা যেখানে রীতিমতো ত্রাস ছড়াচ্ছেন। ফজল হক ফারুকী, এনরিখ নরকিয়া, জাসপ্রিত বুমরাহর মতো দ্রুতগতির বোলার এরই মধ্যে রেকর্ড বইয়ের অনেক পরিসংখ্যান নাড়িয়ে দিয়েছেন। মার্কিন মুলুকে বাংলাদেশের হয়ে দুটি ম্যাচে দুর্দান্ত বোলিংয়ে নজর কেড়েছেন তাসকিন আহমেদ আর তানজীম হাসান সাকিব। স্পিনাররাও কম যাচ্ছেন না। আকিল হোসেন, রশিদ খানের মতো তারকার পাশাপাশি ঘূর্ণিবলে আলো ছড়াচ্ছেন কেশব মহারাজ, টাইগার লেগস্পিনার রিশাদ হোসেন। কিপটে বোলিংয়ে ৪৩ বছর বয়সে উগান্ডার হয়ে প্রথম বিশ্বকাপ খেলতেই এসেই কিপটে বোলিংয়ের রেকর্ড গড়েছেন ডানহাতি অফস্পিনার ফ্রাঙ্কো এনসুবুগা (৪-২-৪-২)! ২০টি দল ৪টি ভাগে ভাগ হয়ে টি২০ বিশ্বকাপ খেলছে। প্রতিটি গ্রুপে ৪টি করে দল। প্রতিটি দলের চারটি করে ম্যাচ গ্রুপ-পর্বে । এর মধ্যে দু-একটি দল ছাড়া প্রায় সব দল এরই মধ্যে ২টি করে ম্যাচ খেলে ফেলেছে, ৩টি করে ম্যাচও খেলেছে কয়েকটি দল। যেখানে বোলিংয়ে ২ ম্যাচে ৯ উইকেট নিয়ে সবার ওপরে আফগান বাঁহাতি পেসার ফজল হক ফারুকী। ৩ ম্যাচে ৮ উইকেট নিয়ে দুইয়ে দীর্ঘদেহী দক্ষিণ আফ্রিকান ডানহাতি পেসার এনরিখ নরকিয়া। ২টি করে ম্যাচ খেলে ৬টি করে উইকেট নিয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ বাঁহাতি স্পিনার আকিল হোসেন ও আফগান তারকা লেগস্পিনার রশিদ খান। ২ ম্যাচে ওমানের ডানহাতি পেসার মেহরান খানও নিয়েছেন সমান ৬ উইকেট। ৫টি করে উইকেট আছে ৯ জনের। ৪টি করে ১৩ জনের। এই তালিকায় আছেন বাংলাদেশের পেসার তাসকিন আহমেদ, তানজীম সাকিব ও লেগস্পিনার রিশাদ হোসেন। বিশ্বকাপে এবার মোট ৯টি ভেন্যুতে খেলা হচ্ছে। ৬টি ওয়েস্ট ইন্ডিজে ও তিনটি যুক্তরাষ্ট্রে। সহ-আয়োজক হিসেবে এবারই প্রথম বিশ্বকাপ খেলছে যুক্তরাষ্ট্র। এখানকার তিনটি ভেন্যু টেক্সাসের ডালাস, নিউইয়র্ক ও ফ্লোরিডার লডারহিল। সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে নিউইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উইকেট নিয়ে। বিশ্বকাপের জন্য মাত্র সাড়ে পাঁচ মাসে তৈরি অস্থায়ী এ সেডিয়ামে ব্যবহার করা হয়েছে ‘ড্রপ ইন পিচ’। যেটি নিয়ে আসা হয়েছে সুদূর অস্ট্রেলিয়া থেকে। যে পিচে বিশ্বখ্যাত সব ব্যাটারদের সামনেও যমদূত হয়ে উঠেছেন পেসাররা। এখানেই অনুষ্ঠিত হয় উন্মাদনার ভারত-পাকিস্তান দ্বৈরথ। ভারতের ১১৯ রানের জবাবে ৭ উইকেটে ১১৩ রানে থেমে যাওয়া পাকিস্তান হারে মাত্র ৬ রানে। ১৪ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হন বুমরাহ। এই মাঠে প্রথম ম্যাচেই ৭৭ রানে অলআউট হয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ৬ উইকেটে হারে শ্রীলঙ্কা। মাত্র ৭ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হন প্রোটিয়া পেসার নরকিয়া। টি২০তে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে সেরা বোলিংয়ের পাশাপাশি গড়েন বিশ্বকাপে ৪ ওভারের কোটা পূর্ণ করা বোলারদের মধ্যে মিতব্যয়ী বোলিংয়ের রেকর্ড। পেছনে ফেলেন ৪ ওভারে ৮ রান দেয়া অজন্তা মেন্ডিস (২০১২, জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে), মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ (২০১৪, আফগানদের বিপক্ষে) ও ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাকে (২০২২, আমিরাতের বিপক্ষে)। একদিন পরেই পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে নরকিয়ার রেকর্ড ভেঙে দেন অফস্পিনার এনসুবুগা। ৪ ওভারে ২ মেডেন, ৪ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট। উগান্ডাও পায় বিশ্বকাপে তাদের ঐতিহাসিক প্রথম জয়। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২ উইকেটের জয়ে মিশন শুরু করে বাংলাদেশ। ডালাসে ৯ উইকেটে শ্রীলঙ্কার ১২৪ রানের জবাবে ১৯ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় টাইগাররা। ক্যারিয়ারসেরা বোলিংয়ের পথে ২২ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হন লেগস্পিনার রিশাদ। ১৭ রানে মুস্তাফিজুর রহমানের শিকার ৩ উইকেট। তাসকিন ২ ও তানজীম সাকিব নেন ১ উইকেট। অর্থাৎ ৯ উইকেটের ৬টিই নেন পেসাররা। নিউইয়র্কে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ৪ রানের কাস্টের হারের দিনে ৬ উইকেটে ১১৩ রান করেছিল প্রোটিয়ারা। ১৮ রানে ৩ উইকেট নেন পেসার তানজীম সাকিব, তাসকিন ১৯ রানে ২টি। রিশাদ ৩২ রানে ১। অর্থাৎ প্রথম দুই ম্যাচে বাংলাদেশের পেসারদের শিকার ১১ উইকেট। আফগান তারকা ফারুকীও আসরের শুরু থেকে দুর্দান্ত বোলিং করছেন। টানা দুই জয়ে ‘সি’ গ্রুপে টেবিলের শীর্ষে রশিদ খানের দল। উগান্ডাকে মাত্র ৫৮ রানে অলআউট করে ১২৫ রানের বিশাল জয় তুলে নেয় তারা। মাত্র ৯ রানে ৫ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হন ফারুকী। টি২০ বিশ্বকাপের ইতিহাসে যা চতুর্থ সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড, আফগানদের হয়ে সেরা। আগের সেরা ছিল ২০২১ আসরে মুজিব-উর রহমানে ২০ রান দিয়ে ৫ উইকেট। পরের ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে ৭৫ রানে গুটিয়ে দিয়ে ঐতিহাসিক জয়ের দিনে বাঁহাতি এ পেসার নেন ১৭ রানে ৪ উইকেট। বিশ্বকাপে ২ ম্যাচে ৯ উইকেটের কীর্তি আর কারো নেই। রশিদও নেন ৪ উইকেট। শ্রীলঙ্কা, নেদারল্যান্ডস ও বাংলাদেশ- তিন ম্যাচে নরকিয়ার বোলিং ৪/৭, ২/১৯ ও ২/১৭। পিএনজি ও উগান্ডার বিপক্ষে আকিল হোসেনের ১/৯ ও ৫/১১। আয়ারল্যান্ড ও পাকিস্তানের বিপক্ষে বুমরাহর ২/৬ ও ৩/১৪।
ই-ক্যাব ইয়ুথ ফোরামের হাত ধরে শান্ত মারিয়াম ইউনিভার্সিটিতে যাত্রা শুরু হতে যাচ্ছে ই-কমার্স ক্লাবের February 8, 20231641 views