ভ্রমণ

যেসব সতর্কতা জরুরি পাহাড় ভ্রমণে

2
pahar

প্রকৃতিতে এখন শীত অনুভূত হচ্ছে। ভ্রমণের জন্য অনেকে এই সময়টা বেছে নেন। ভ্রমনপিপাসুদের মধ্যে সবচেয়ে প্রিয় পাহাড় হাইকিং ও ক্যাম্পিং। তবে রোমাঞ্চকর ট্রেইলগুলোর প্রতি ধাপে ধাপেই যেনো ওত পেতে থাকে হাজারও বিপদ। পাহাড় ভ্রমণে দুর্ঘটনা নতুন কোনো ব্যাপার নয়। তাই প্রয়োজনীয় সর্তকতা না নেয়া হলে পুরো যাত্রাটাই অশুভ হয়ে যেতে পারে। এজন্য নিরাপদ পাহাড় ভ্রমণে কিছু সতর্কতা মেনে চলা জরুরি।

বৃষ্টির মৌসুমে পাহাড়ি এলাকার প্রকৃতির কারণে সাধারণত বেশি দুর্ঘটনা হয়। বৃষ্টিতে ঢাল, গর্ত, খানা-খন্দ, চূড়াসহ পাহাড়ের প্রতিটি পথ পিচ্ছিল হয়ে থাকে। এ অবস্থায় রাস্তা খুব ভালো করে চেনা থাকার পরেও স্থানীয়রা বিপদে পড়েন। আর রাস্তা না জানা পর্যটকদের জন্য দুর্ঘটনায় পড়া স্বাভাবিক ব্যাপার। এ কারণে বৃষ্টির দিন পাহাড় ভ্রমণে অনেক বেশি সতর্ক থাকতে হবে।

পাহাড়ে ভ্রমণকারিদের যাত্রার শুরুতেই পাহাড়ি এলাকার আবহাওয়া সম্বন্ধে জানতে হবে। এখন ইন্টারনেটের মাধ্যমে খুব সহজেই স্থানীয় তাপমাত্রা জেনে নেয়া যায়। ভেজা আবহাওয়ায় পাহাড়ি রাস্তা তো পিচ্ছিল হয়ই; পাশাপাশি গন্তব্য পর্যন্ত যাওয়ার দীর্ঘ পথটুকুও দুর্গম হয়ে ওঠে।

ঠান্ডা বা গরম যেকোনো পরিবেশের জন্য উপযুক্ত পরিধেয় বাছাই করা উচিত পাহাড়ে ভ্রমণে। আর পাহাড়ি এলাকার ক্ষেত্রেও পোশাক বিশেষভাবে বেছে নিতে হবে। ক্লান্তিকর হাইকিং এর সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার জন্য শরীরকে আরামদায়ক রাখতে উপযুক্ত পোশাক এবং জুতা সঙ্গে নেয়া জরুরি। এর জন্য ভ্রমণের আগেই পোশাক ও জুতা কিনে রাখতে হবে।

শীতে কাপড়-চোপড় বেশি লাগে মানে এই না যে ব্যাগ ভর্তি করে যাত্রা করতে হবে। পাহাড় চড়ার জন্য হালকা থাকা আবশ্যক। কেননা ব্যাগে প্যাক করা সমস্ত কিছু নিজেকেই বহন করতে হয়। ভ্রমণের জন্য যাবতীয় গ্যাজেট থেকে যেগুলো না নিলেই নয় সেগুলোই শুধু নিতে হবে। বেশি পোশাক নেয়ার ক্ষেত্রে অন্যান্য সরঞ্জামগুলোর সঙ্গে ভারসাম্য রেখে প্যাক করতে হবে। এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ভ্রমণকারীর জন্য ব্যাগের ওজনটি সহজে বহন করার মত হচ্ছে কিনা।

তাড়াহুড়া অথবা শর্টকাটে যাওয়ার জন্য অনেকে বিপজ্জনক রাস্তা বেছে নেয়। এখানে মনে রাখা ভালো যে, পর্বতগুলো কিন্তু কোথাও যাচ্ছে না। তাই সতর্কতামুলক কাজে দেরি হলে কোনো সমস্যা নেই। বরং তা অনেক খারাপ পরিস্থিতি থেকে বাঁচাবে।একজন পর্বত আরোহীর দক্ষতা যে স্তরেরই হোক না কেনো, প্রতিটি যাত্রাই ভিন্ন ভিন্ন ঝুঁকির হাতছানি দেয়। তাই সবচেয়ে ভালো হয় একজন পেশাদার গাইডকে সঙ্গে রাখা।

যেকোনো দীর্ঘ ভ্রমণের সময় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে হাইড্রেটেড থাকা এবং শক্তি বজায় রাখার জন্য খাবার খাওয়া। এজন্য বিভিন্ন ফলমুলের পাশাপাশি হালকা খাবার সঙ্গে নিয়ে নিতে হবে। পর্যাপ্ত পানির চাহিদা পূরণের জন্য একটি রিফিল-যোগ্য পানির বোতল সঙ্গে রাখা যেতে পারে।

আরও পড়ুনঃ ৮৫ বছর পর পাওয়া গেল বিখ্যাত আলোকচিত্রীর ক্যামেরাটি

পর্বতারোহণের সময় সুস্বাস্থ্যের জন্য শরীরে খাদ্যের ভালো যোগান অপরিহার্য। সাধারণত হাইকিং করার সময় ৩০০০ থেকে ৬০০০ ক্যালোরি খরচ হতে পারে, যা দ্রুত পুষিয়ে নেয়া দরকার।

সূর্যের অতিরিক্ত তাপ থেকে বাঁচতে এক জোড়া সানগ্লাস ও সানস্ক্রিন রাখা যেতে পারে। এর থেকেও দরকারি জিনিস হলো ফ্ল্যাশলাইট এবং পাওয়ার ব্যাঙ্ক সঙ্গে রাখা। হাইকিংয়ের সময় বিশ্রামের জন্য সময় নেয়া একটি মৌলিক উপায়, যা ভ্রমণকে নিরাপদ, আনন্দদায়ক এবং সতেজ করে তোলে।

প্রতিটি পদক্ষেপে মনযোগ দিতে হবে পাহাড়ি রাস্তায় চলার সময়। একটি ছোট ভুল পদক্ষেপের জন্য মারাত্মক বিপদের মধ্যে ফেলে দিতে পারে। একটি পিচ্ছিল পাথর বা কাঁদা মাটিই যথেষ্ট গুরুতর দুর্ঘটনা ঘটানোর জন্য। তাই নিরাপদে থাকার জন্য প্রয়োজনে গতি কমিয়ে দেয়া যেতে পারে। ঘন ঝোপ-ঝাড়, গর্ত, পিপড়ার ঢিবি, ঝিরি পথ পেরনোর সময় সতর্ক থাকা উচিত।

পাহাড়ি এলাকার প্রাণী ও পোকামাকড় শহরের মতো ঝুঁকিহীন নয়। খুব ছোট কোনো প্রাণীও বিড়ম্বনার কারণ হতে পারে। পাহাড়ি পিঁপড়া ও মশাগুলো বেশ বিপজ্জনক হয়। এগুলোর জন্য পোকামাকড় নিরোধক নেয়ার পরেও সতর্ক থাকতে হবে। কোন কোন এলাকাগুলো এ ধরণের উপদ্রব বেশি তার জন্য গাইড বা স্থানীয়দের সাহায্য নেয়া উচিত।

অনূর্ধ্ব-১৯ নারী বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে শুভ সূচনা বাংলাদেশের

Previous article

মটরশুঁটি বেশি দিনের জন্য যেভাবে সংরক্ষণ করবেন

Next article

You may also like

2 Comments

  1. […] আরও পড়ুনঃ যেসব সতর্কতা জরুরি পাহাড় ভ্রমণে […]

  2. […] আরও পড়ুনঃ যেসব সতর্কতা জরুরি পাহাড় ভ্রমণে […]

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *