উদ্যোক্তার গল্পদেশি উদ্যোক্তা

কাস্টমারের সন্তুষ্টি অর্জনই বড় অর্জন- উদ্যোক্তা সায়মা খান

1
Untitled design 10

উদ্যোক্তা জার্নালের বিশেষ আয়োজন ‌‘উদ্যোক্তা গল্প’-র আজকের পর্বে, কথা হলো উদ্যোক্তা সায়মা খানের সঙ্গে। আজ শুনবো তার উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার গল্প।

আমি সায়মা খান। জন্ম বরিশাল সদরে, ওখানেই বেড়ে ওঠা এবং পড়াশোনা করা। পড়াশোনাকালীন অবস্থায় বিয়ে হয়‍ে যায়। বিয়ের পরে ইচ্ছে ছিলো পড়াশোনা চালিয়ে যাবো, কিন্তু বড় পরিবার আবার সবার বড় ছিলাম তাই ইচ্ছে আর পূরণ হয়নি।

কিছু করার ইচ্ছে অনেক আগে থেকেই ছিলো, কিন্তু ছেলেমেয়ে তখন ছোট থাকায় করতে পারিনি। এখন মাশাআল্লাহ ওরা বড় হয়েছে, এখন কিছু করা দরকার। কিন্তু কি করবো, কিভাবে করবো এটা যখন ভাবছি তখন আমার এক বান্ধবী আমাকে ‘উই’ এর সাথে যুক্ত করে দেন। তবে কি নিয়ে কাজ করবো ভেবে পাচ্ছিলাম না, তখন মেয়ে বললো তোমার খাবার অনেক মজার হয়, তুমি খাবার নিয়ে কাজ শুরু করো। আমি রান্নার একটা কোর্স করেছিলাম, তখন থেকেই ইচ্ছে ছিলো খাবার নিয়ে কাজ করার। তাই প্রথমে খাবার নিয়ে শুরু করেছিলাম তারপর আস্তে আস্তে আরো একটা পেইজ খুলে অন্যান্য প্রোডাক্ট নিয়েও কাজ শুরু করি, এখন দুইটাই চালিয়ে যাচ্ছি।

আমি খাবার, শাড়ি, থ্রিপিস, ব‍্যাগ, চাদর এবং আরো বিভিন্ন আইটেম নিয়ে কাজ করছি। আমার প্রতিষ্ঠানের নাম “Fashion Fanatic” (ফ্যাশন ফ্যানাটিক) এবং “Sayma’s Kitchen” (সায়মা’স কিচেন)। আমার খাবারের গুনগতমান ঠিক রেখে আমি সার্ভিস দিয়ে থাকি।

আমার শুরুটা তেমন একটা ভালো ছিলোনা, তবে সবার সাপোর্ট ছিলো আর আমার নিজের প্রতি বিশ্বাস ছিলো যে আমি একদিন ভালো কিছু করতে পারবো ইনশাআল্লাহ। শুরুতে মূলধন ১০ হাজার টাকা ছিলো, সেটা দিয়েই শুরু করি। আলহামদুলিল্লাহ আমার প্রোডাক্ট দেশের বাহিরে বেশ কয়েকবার পাঠিয়েছি, তার মধ‍্যে দুজন আমার রিপিট কাষ্টমার আছে।

একজন উদ‍্যোক্তাকে আগে থেকে পরিকল্পনা করে কাজ শুরু করতে হবে এবং কাজের প্রতি ধৈর্য্যশীল হতে হবে। আমার প্রতিষ্ঠানে কোনো কর্মী নেই। আমার মেয়ে আমার কাজে সাহায‍্য করে, সব কাজ আমরা নিজেরাই করি। আমার মেয়ে আমাকে প্রতিটা কাজে অনেক সাপোর্ট দেয়। আমার ছেলেমেয়ে ওরাই আমার পেইজের লোগো করে দিয়েছে।

চাকরি করতে হলে অন‍্যের অধীনে করতে হবে এটা আমি কখনো পছন্দ করিনা। আমি আমার মতো করে কাজ করতে পছন্দ করি। আমাদের দেশের নারীরা এখন দেশীয় পন‍্য নিয়ে ‘উই’ এর নাছিমা আক্তার নিশা আপুর সহযোগিতায় অনেক দুর এগিয়ে যাচ্ছেন এবং ভবিষ‍্যতে আরো অনেক নারীরা উই এর কল‍্যানে এগিয়ে যাবেন ইনশাআল্লাহ।

এখনকার প্রতিযোগিতার বাজারে কাজ করতে গেলে প্রতিবন্ধকতা আসবে। আমার সেল মোটামুটি ভালো আলহামদুলিল্লাহ। তবে আমার কাষ্টমার সন্তুষ্ট আছে, কাষ্টমারের কোনো অভিযোগ নেই এটাই আমার অর্জন।

সরকারি বা বেসরকারি কোনো সহযোগিতা এখনো পাইনি। তবে ‘উই’ নারীদের অনেক সুযোগ সুবিধা দিচ্ছে আর ‘উই’তে যখন আছি ইনশাআল্লাহ পাবো। আর পেলে আমার উদ‍্যোগকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাবো।

আমার কাষ্টমারদের আমার পন‍্য নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই এবং তাদের কাছ থেকে ফিডব্যাক ভালোই পাই। রিপিট কাষ্টমার পেয়েছি এটাই আমার প্রতিষ্ঠানের জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি।

আমার ইচ্ছা ভবিষ‍্যতে আমি একটা রেষ্টুরেন্ট দিবো এবং সেখানে সব মেয়ে কর্মী থাকবে, তাদের নিয়েই আমি কাজ করতে চাই ইনশাআল্লাহ। ৫ বছর পর নিজের প্রতিষ্ঠান কে আরো সামনের দিকে এগিয়ে নিতে চাই।

রঙিন সুতোয় স্বপ্ন বুনছেন তাসলিমা পারভীন

Previous article

‘ইয়েসবিডির’ ২য় বর্ষপূর্তী আজ!

Next article

You may also like

1 Comment

  1. অনেক দোয়া রইল আপনার উদ্যোগ এর জন্য আপু

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *