উদ্যোক্তার গল্পদেশি উদ্যোক্তা নিজের পরিচয়ে পরিচিত হতে উদ্যোক্তা হলেন শিউলি খান By নিজস্ব প্রতিবেদক July 30, 20221 ShareTweet 1 উদ্যোক্তা জার্নালের বিশেষ আয়োজন ‘উদ্যোক্তা গল্প’-র আজকের পর্বে, নিজের উদ্যোগ নিয়ে কথা বলেছেন শিউলি খান। চলুন শুনি তার উদ্যোক্তা জীবনের গল্প। আমি শিউলি খান। জন্ম নরসিংদী জেলার শিবপুর থানা ব্রজের কান্দি গ্রামে। বেড়ে ওঠা টঙ্গীতে। বাবা সরকারি চাকরি করতেন, তাই ছোট থেকে বড় হয়েছি টঙ্গী শহরে। নিজে কিছু করার অনুপ্রেরণা পেয়েছি আমার মেয়েদের কাছে। আমার মেয়েদের কাছে তাদের মা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মা। তাদের মা এতো কিছু পারে তাহলে কিছু করে না কেনো? তাই মেয়েদের উৎসাহে নতুন করে অনুপ্রেরণা পেলাম কিছু করার। আমি মুলত আমাদের দেশের ঐতিহ্য ঢাকাই জামদানী শাড়ি নিয়ে কাজ করছি। কাস্টমারের চাহিদা অনুযায়ী এখন সিলেটের মনিপুরী শাড়ি, দেশীয় তাঁতের শাড়ি এবং দেশীয় সবধরনের ড্রেস এর কালেকশন নিয়েও কাজ করছি। আমার পেইজ এর নাম “তিন কন্যা”। অনলাইন ও অফলাইন দুই ক্ষেত্রেই আমি কাজ করছি। শুরুটা একটু কষ্টের ছিলো। কারণ আমি কারো কাছ থেকে টাকা নিয়ে কিছু করতে চাইনি। চেয়েছি সম্পূর্ণ নিজের টাকায় কিছু করতে। স্বামীর টাকাতো আমার কাছে থাকেই, ভাই বোনের কাছে চাইলেও দিবে এমনকি দেবর ননদ তাদের কাছে চাইলেও টাকা দিবে। মোট কথা টাকা আমি যার কাছে চাইবো তার কাছেই পাবো। টাকার সমস্যা ছিলোনা, কিন্তু সমস্যা ছিলো আমার নিজের। আমি মনে মনে ঠিক করে নিয়েছি আমার নিজের টাকায় আমি কিছু করবো। তাই হোমমেইড খাবার নিয়ে কাজ করা শুরু করি। প্রথম তো শূন্য মূলধন নিয়ে নেমেছি। কিছুদিন কাজ করার পর হাতে ১০ হাজার টাকা হলো। আমার অনেক আনন্দ হলো। মাস শেষ হলেই সংসার খরচের সমস্ত টাকা আমার হাতে চলে আসে। অথচ এই ১০ হাজার টাকা পেয়ে আমি এতো আনন্দিত কেনো হয়েছিলাম জানেন? কারণ এই টাকা আমার নিজের রোজকার করা টাকা ছিলো। আমার উপার্জিত এই ১০ হাজার টাকা দিয়েই আমি শুরু করি। একজন উদ্যোক্তা হতে হলে সর্বপ্রথম দরকার সাহস এবং আত্মবিশ্বাস। বর্তমানে আমি একাই সব কাজ করি। যখন দরকার হবে তখন অবশ্যই কর্মী নিবো ইনশাআল্লাহ। সত্যি বলতে আমার বিয়ে হয় যখন, আমি তখন এসএসসি দেই এবং আমার স্বামী অনার্স ফাইনাল পরীক্ষার্থী ছিলো। বর্তমানে আমার স্বামী একজন বিসিএস অফিসার। তার বউকে চাকরি করতে হবে এমন মনোভাব তার কখনোই ছিলো না। তাই হয়তো চাকরির কথা মাথায়ই আসেনি। কিন্তু বিয়ের ১৯ বছর পর আমার মনে হলো আমার নিজের কোনো পরিচয় নাই। সবাই আমাকে অমুকের মিসেস, অমুকের মা, অমুকের মেয়ে, অমুক বাড়ির বউ ইত্যাদি পরিচয়ে আমি পরিচিত। আমার নিজের যে একটা নাম আছে তাও যেনো হারিয়ে যাচ্ছে। চাকরি করতে বয়স লাগে, কিন্তু উদ্যোক্তা হতো তো আর বয়স লাগে না। তাই নিজের পরিচয়ে সমাজে পরিচিত হতে আমি ভিন্ন হয়েছি। কাজের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তো অনেক আছে। আমি প্রথম যে প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়েছি তা হলো, অমুকের বউ হয়ে তুমি শাড়ি বিক্রি করবে? তুমি কি অভাবী? মানুষ কি বলবে? সবার এক কথা আমি কেনো এই কাজ করবো? এখনো এই কথার উত্তর আমাকে দিতে হচ্ছে। আল্লাহর রহমতে আলহামদুলিল্লাহ সেল ভালোই হচ্ছে। আর আমার সেবায় কাস্টমার খুশি বলেই আমি সামনের দিকে এগোতে পারছি। সরকারি বা বেসরকারি কোনো সহযোগিতা এখনো পাইনি। আমার “তিন কন্যা” কে আমি একটি ব্র্যান্ড করে তুলতে চাচ্ছি। আমি স্বপ্ন দেখি আমার “তিন কন্যা” দেশ ছাড়িয়ে বিদেশও তার নাম ছড়িয়ে পড়বে। আগামী ৫ বছরের মধ্যে আমার “তিন কন্যা” কে একটা স্বনামধন্য ব্র্যান্ডে পরিনত করতে চাচ্ছি। বাকিটা আল্লাহর ইচ্ছা।
বাংলাদেশ ফেডারেশন অব উইমেন অন্ট্রাপ্রেনার্স এর বার্ষিক সাধারণ সভা এবং নির্বাচন অনুষ্ঠিত September 7, 20241
ই-ক্যাব ইয়ুথ ফোরামের হাত ধরে শান্ত মারিয়াম ইউনিভার্সিটিতে যাত্রা শুরু হতে যাচ্ছে ই-কমার্স ক্লাবের February 8, 20231642 views